সিলেটটুডে ডেস্ক

১৫ মে, ২০১৮ ১৬:৫৭

নানা অভিযোগ সত্ত্বেও শান্তিপূর্ণ ভোট, ফলাফলের অপেক্ষা

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন

দুটি কেন্দ্রে ভোট বাতিলের মধ্য দিয়ে ও কয়েকটিতে জালভোট দেওয়ার অভিযোগ ছাড়া মোটামুটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) নির্বাচন।

মঙ্গলবার (১৫ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নগর পিতা নির্বাচনের লক্ষ্যে এক নাগাড়ে ভোট গ্রহণ শেষে এখন শুরু হয়েছে ভোট গণনার কাজ।

খুলনা নগরীর ২৮৯টি কেন্দ্রে এ ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট গণনা শেষে যত দ্রুত সম্ভব ফলাফল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাচনী কর্মকর্তা।

প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। খুলনার নগর পিতা হওয়ার দৌড়ে অংশ নিচ্ছেন ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বী।

প্রার্থীরা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত তালুকদার আব্দুল খালেক (নৌকা), বিএনপি মনোনীত নজরুল ইসলাম মঞ্জু (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত শফিকুর রহমান মুশফিক (লাঙল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক (হাত পাখা) ও সিপিবি মনোনীত মো. মিজানুর রহমান বাবু (কাস্তে)।

সকালে নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক ও বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু।

এদিকে মোট ১৯টি ওয়ার্ডের ৪০টি কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকায় জালভোট দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিএনপি।

রিজভী বলেন, বিএনপি মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু জানিয়েছেন সকাল সাড়ে ৮টার মধ্যে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পুলিশের সহায়তায় ৪০টি ভোটকেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। সকাল ৮টায় ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের পাঁচটি ভোটকেন্দ্রসহ নুরানিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রের এজেন্টদের তালিকা নিয়ে যাওয়ার সময় মনির নামে এক বিএনপিকর্মীকে মারধর করে সন্ত্রাসীরা। নজরুল নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বিএনপি এজেন্টদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সরকারি দল আওয়ামী লগের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে খুলনা সিটির নির্বাচন।

অন্যদিকে, বিএনপির কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগগুলো সুনির্দিষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার (অব.)শাহাদাত হোসেন চৌধুরী।

এছাড়া, ভোট চলাকালীন সময়ে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে সিল মারার ঘটনায় খুলনা মহানগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের ২০২ নম্বর ভোটকেন্দ্র ইকবালনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং ৩১ নং ওয়ার্ডের ২৭৮ নম্বর কেন্দ্রের (ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়) ভোট বাতিল করা হয়।

অপরদিকে, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের ভোট বাতিলের লিখিত আবেদন করেছেন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো. মাহবুব কায়সার। কয়েকটি কেন্দ্রের বাইরে বিএনপি’র ক্যাম্প ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।  

এদিকে, ঢাকায় বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ১৯টি ওয়ার্ডের ৪০টি কেন্দ্র থেকে তাদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা ব্যালট পেপারে সিল মেরেছে।

ইকবাল নগর স্কুল কেন্দ্রের সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার নুরুল ইসলাম জানান, এই কেন্দ্রে সাতটি বুথ ছিল। বেলা ১১টার দিকে স্কুলের একাডেমিক ভবন-২ সাত নম্বর বুথে ১৫-২০ জনের একটি দল দোতলায় উঠে আসে। তার কাছ থেকে ব্যালটের বই ছিনিয়ে নিয়ে সিল মেরে বাক্সে ঢুকিয়ে দেয়। এরপর তিনি বিষয়টি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারকে বিষয়টি জানান। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর তাৎক্ষণিকভাবে কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বাতিল করে দেন।  

প্রসঙ্গত, খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৪৮ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন নারী কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ ও নারী ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন। ভোট কক্ষ ১ হাজার ১৭৮টি। ভোট কেন্দ্র ও ভোট কক্ষে দায়িত্ব পালন করবেন ৪ হাজার ৯৭২ জন কর্মকর্তা। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

এর মধ্যে প্রিসাইডিং অফিসার রয়েছেন ২৮৯ জন, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ১ হাজার ৫৬১ জন এবং পোলিং এজেন্ট রয়েছেন ৩ হাজার ১২২ জন।

এ নির্বাচনে ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে স্থায়ী ভোট কক্ষ রয়েছে ১ হাজার ৫৬১টি। আর অস্থায়ী ভোট কক্ষ রয়েছে ৫৫টি। খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) তথ্যমতে, ২৮৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ২৩৪টি কেন্দ্র গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁকিপূর্ণ)।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত