সিলেটটুডে ডেস্ক

২৪ নভেম্বর, ২০২০ ২৩:৪৯

দেশের হিন্দু পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলার পরিকল্পনায় ছিলেন ফয়সাল

২০১৭ সালে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন আহমেদ ফয়সাল (২৬) নামের এক যুবক। সেখানে যাওয়ার পর অনলাইন আইএসসহ জঙ্গিবাদী বিভিন্ন সংগঠনের প্রচারণায় প্ররোচিত হয়ে পরের বছরই চরমপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়েন তিনি। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের প্রাথমিক তদন্তে আহমেদ ফয়সালের চরমপন্থার নানা প্রমাণ পাওয়ায় এ মাসের শুরুর দিকে তাকে গ্রেপ্তার করে সিঙ্গাপুর পুলিশ।

মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম স্ট্রেইট টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আহমেদ ফয়সাল (২৬) নামের এক যুবককে গত ২ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয়। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, তিনি ধর্মীয় চরমপন্থায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সহিংস কর্মকাণ্ড ঘটাতে চেয়েছিলেন।

ইউরোপে সাম্প্রতিক সহিংসতা ঘটনাগুলোর প্রেক্ষাপটে সিঙ্গাপুরে সন্দেহভাজন ৩৭ জনের ওপর তদন্ত চালায় সিঙ্গাপুর। এতে দেখা যায়, আহমেদ ফয়সাল বাংলাদেশে হিন্দু পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা এবং কাশ্মিরে গিয়ে লড়াই করার পরিকল্পনা করেছিলেন। ওই যুবক ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া নামে একাধিক অ্যাকাউন্ট খুলে উসকানিমূলক বিষয় শেয়ার করতে থাকেন। হামলার জন্যে জন্য ভাঁজ করে রাখা যায় এমন সব ছোরাও সংগ্রহ করেন তিনি। সিঙ্গাপুরের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে দেশে ফিরে এসব ছোরা দিয়ে সহিংস হামলার পরিকল্পনার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।

বাংলাদেশে ফিরে হিন্দুদের ওপর হামলা ও কাশ্মিরে গিয়ে লড়াই করার এই পরিকল্পনার বাইরে অবশ্য সিঙ্গাপুরে সহিংস কর্মকাণ্ড চালানোর পরিকল্পনার প্রমাণ না পাওয়ার ইঙ্গিত মেলার কথা জানিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এদিকে, মঙ্গলবার এক অনুষ্ঠানে সিঙ্গাপুরের স্বরাষ্ট্র ও আইনমন্ত্রী কে শানমুগাম বলেছেন, ফয়সাল এসব ছোরা বাংলাদেশে নিয়ে হিন্দু পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা করতে চেয়েছিলেন।

মন্ত্রণালয় বলেছে, ফয়সাল সিরিয়ায় আইএসের খিলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং সেদেশে গিয়ে এই জঙ্গি গোষ্ঠীর হয়ে সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, যুদ্ধ করতে গিয়ে মারা গেলে ‘শহীদ’ হয়ে যাবেন।

স্ট্রেইট টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, আহমেদ ফয়সাল গত বছরের মাঝামাঝিতে সিরিয়ায় খিলাফত প্রতিষ্ঠায় লড়াইরত আরেকটি জঙ্গি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) প্রতি অনুগত হন। এবং সিরিয়ায় এইচটিএসের কাজে লাগবে চিন্তা করে তিনি সিরিয়াভিত্তিক একটি সংস্থায় অনুদানও পাঠান।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আল-কায়েদা এবং সোমালিয়াভিত্তিক আল-শাবাবসহ অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন ফয়সাল। তিনি মনে করতেন, বিভিন্ন জায়গায় নিপীড়নের শিকার স্বধর্মের লোকদের জন্য মুসলমানদের সশস্ত্র জিহাদে অংশ নেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত