সিলেটটুডে ডেস্ক

১৩ নভেম্বর, ২০১৯ ০৯:৫৫

নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কসে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে শোভাযাত্রা

নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কসে প্রথমবারের মত ব্যাপক আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। এ উপলক্ষে গত ১০ নভেম্বর রোববার ব্রঙ্কস ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটির আয়োজনে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

এদিন বিকেল ৪টায় বাংলাবাজার জামে মসজিদের সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে স্টার্লিং-বাংলাবাজার এভিনিউ, ক্যাসেল হিল এবং ইউনিয়ন পোর্ট রোড প্রদক্ষিণ শেষে পিএস ১০৬ মিলনায়তনে এসে শেষ হয়।

উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব হাফিজ মাওলানা ওয়াহি আহমেদ চৌধুরীর পরিচালনায় শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাবাজার জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ ইয়াহইয়া। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফেজ জুবায়ের আহমদ রাজু।

শোভাযাত্রা শেষে বিশেষ দোয়া মুনাজাত পরিচালনা করেন ফ্লোরিডা থেকে আগত আল্লামা আব্দুল হাকিম আজাদী।

শোভাযাত্রায় অন্যদের মধ্যে বাংলাবাজার জামে মসজিদের সভাপতি আলহাজ্ব গিয়াস উদ্দীন, পার্কচেস্টার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মইনুল ইসলাম, সহ সভাপতি আবদুস শহীদ, সাবেক ট্রাস্টি মোহাম্মদ এন মজুমদার, সাবেক সভাপতি সৈয়দ আল ওয়াহিদ নাজিম, মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল চৌধুরী, উদযাপন কমিটির কোষাধ্যক্ষ এ ইসলাম মামুন, সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন, আলা উদ্দিন, মঞ্জুর চৌধুরী জগলুল ও নাসির উদ্দিন সহ কমিউনিটির বিপুল সংখ্যক মুসল্লি অংশ নেন।

পরে স্থানীয় পিএস ১০৬ মিলনায়তনে উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ ইয়াহইয়ার সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব হাফিজ মাওলানা ওয়াহি আহমেদ চৌধুরীর পরিচালনায় মাহফিলে তাৎপর্যপূর্ণ ওয়াজ পেশ করেন ইসলামিক স্কলার শাইখ ইমাম আহমেদ ইউসুফ, আল্লামা আব্দুল হাকিম আজাদী, সায়্যেদ মাওলানা সাজিদুল হক, ইমাম প্রফেসার গুলাম রাসুল, ড. মুফতি সৈয়দ আনসারুল করিম আল আজহারী, মুফতি মাওলানা মইনুল ইসলাম প্রমুখ।

বিপুল সংখ্যক মুসল্লির উপস্থিতিতে বক্তারা বলেন, মহান আল্লাহ বিশ্বজগতের শান্তির দূত হিসেবে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে এ জগতে প্রেরণ করেন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) পৃথিবীতে এসেছিলেন তৌহিদের মহান বাণী নিয়ে। প্রচার করেন শান্তির ধর্ম ইসলাম। বিশ্ববাসীকে মুক্তি ও শান্তির পথে আহ্বান জানান। সব ধরনের কুসংস্কার, গোঁড়ামি, অন্যায়, অবিচার ও দাসত্বের শৃঙ্খল ভেঙে মানবসত্তার চিরমুক্তির বার্তা বহন করে এনেছিলেন মহানবী। প্রতিষ্ঠা করেন মানুষের মর্যাদা ও অধিকার। রাসুলুল্লাহ (সা.)-ই সর্বপ্রথম ঘোষণা করেন মানুষের মুক্তি-বাণী।

বক্তারা বলেন, ইসলামেই রয়েছে মানবাধিকারের সর্ব উৎকৃষ্ট প্রমাণ। সাদা-কালো, ধনী-দরিদ্র সকলই যে আল্লাহর সৃষ্ট মানুষ, সব মানুষই যে পরস্পর ভাই ভাই, ধর্মীয়-কর্মীয় অধিকার যে সবার সমান- সব মানুষই যে আল্লাহর দৃষ্টিতে সমান -এ কথা বলিষ্ঠ কণ্ঠে ঘোষণা ও নিজ জীবনে বাস্তবায়ন করেন হজরত মুহাম্মদ (সা:)। ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা:) স্বীয় কর্মে ও আচরণে তা প্রমাণ করেন।

তারা মহানবী (সা.)-এর জীবনাদর্শ অনুসরণ করে ভ্রাতৃত্ববোধ ও মানব কল্যাণে ব্রতী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরেই মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনে আদর্শ অনুস্মরণের মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব।

অনুষ্ঠানে দারুল হাদিস লতিফিয়া মাদ্রাসা ইউএসএ’র পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত, নাতে রাসুল ও সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশ করেন।

মাহফিলে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন। মুসলিম উম্মা ও বিশ্ব মানবতার শান্তি কামনা করে মাহফিলে বিশেষ দোয়া-মুনাজাত করা হয়।

উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ ইয়াহইয়া এবং সদস্য সচিব হাফিজ মাওলানা ওয়াহি আহমেদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার জন্য সকলকে বিশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত