অরণ্য রণি

২৬ ফেব্রুয়ারি , ২০১৭ ১৫:৩৫

তিন দেশের কবিদের কবিতাপাঠে ঋদ্ধ সংস্কৃতি উৎসবের ৫ম দিন

বেঙ্গল সংস্কৃতি উৎসবের ৫ম দিনে রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সৈয়দ মুজতবা আলী মঞ্চে দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হয় কবিতাপাঠের দ্বিতীয় অধিবেশন। এতে অংশগ্রহণ করেন নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের কবিরা।

এ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন কবি রুবী রহমান। এ পর্বে ১১ জন কবি কবিতা আবৃত্তি করেন।

অধিবেশনের শুরুতেই কবিতা পাঠ করেন কবি আসাদ চৌধুরী। এরপর কবিতা পাঠ করেন পশ্চিমবঙ্গের কবি আশীষ সান্যাল। 'রক্তঝড়া', 'কে কে সুখী' ও 'সময়' নামের তিনটি কবিতা পাঠ করেন তিনি। কবিতাপাঠ করেন কথাসাহিত্যিক ও কবি আনিসুল হক। তিনি প্রথমে একটি ছড়া পাঠ করেন। তারপর 'যদি কোনদিন বৃষ্টি হয়' এবং '৩২ নম্বর মেঘের ওপারে' কবিতা দু'টি আবৃত্তি করেন।

কবি আবুল মোমেন পাঠ করেন 'অভিসারের জয়' সহ তিনটি কবিতা। পশ্চিমবঙ্গের আরেক কবি শতরুপা সান্যাল আবৃত্তি করেন 'দু:খ শাখা', 'হে বন্ধু হে প্রিয়' ও 'আমি হবো একতারা' কবিতা।

নেপাল থেকে আগত কবি কৃষ্ণ প্রাসাই নেপালি ভাষার কয়েকটি কবিতা আবৃত্তি করেন। আর তাঁর ৩টি কবিতার বাংলা অনুবাদ করে পাঠ করেন কবি আসাদ চৌধুরী। কবিতা পাঠের পর কবি কৃষ্ণ প্রাসাই কবি আসাদে চৌধুরীকে নেপাল থেকে আনা কিছু সামগ্রী উপহার দেন। তাঁর মধ্যে পোস্টার, ঢাকা (নেপালি ভাষা) ও টুপি ছিল উল্লেখযোগ্য।

কবি হেনরী স্বপন 'অসুখের শব্দ' ও 'সনেট' সহ ৪টি কবিতা আবৃত্তি করেন। এরপর মারুফুল ইসলাম ২টি কবিতা পড়ে শোনান।

এরপর সিলেটের কবি মোস্তাক আহমদ দীন ও জফির সেতুর কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে কবিতাপাঠ শেষ হয়। কবি মোস্তাক আহমদ দীন 'গোধুলীতে পোড়াগন্ধ' ও 'তরী' সহ ৪টি কবিতা পাঠ করে। আর জফির সেতু 'জেরুজালেম' ও 'চন্দ্রাবতী' সহ চারটি কবিতা পাঠ করেন।

সবশেষে বক্তব্য নিয়ে আসেন অধিবেশনের সভাপতি কবি রুবী রহমান। তিনি বলেন, আমরা আবহমান কবিতার ঢেউকে সৈয়দ মুজতবা আলী মঞ্চে আছড়ে পড়ার শব্দ শুনতে পেলাম। কবিতা একটি প্রবাহমান আবহ। ৪৭ এর দেশ বিভাজনের পর যে ভূখন্ড হয়, সে সময় স্বতন্ত্র সাহিত্য গড়ে উঠে। সে সময় যারা সাহিত্য গড়ে তুলতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন, তারা বাংলাদেশের ভিত্তিভূমি তৈরি করেছেন। যে আকাংখা দিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের সূচনা তা সাহিতিকদের হাতেই।

তিনি আরো বলেন, ৪৭ এর শিল্প-সংস্কৃতির মানুষের কারণে বাংলাদেশের আদর্শ, রুচি, অভিপ্রায় নিয়ে তৈরি। এদের অনেকেই আজ আমাদের মাঝে নেই। আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি কবি শামসুর রাহমান, শহীদ কাদরী, সৈয়দ শামসুল হক, কবি দিলওয়ারকে। দেশ ভাগের পর সাহিত্যে কবিতার রুচি তারা তৈরি করে গেছেন। এদের হাত ধরেই ৬০ এর দশকের কবিরা এসেছেন। সাহিত্য ও কবিতার নিজস্বতা তৈরি করেছেন তাঁরা। সত্তর, আশি, নব্বই এর দশক থেকে আজ পর্যন্ত নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে সাহিত্য আজ প্রবাহমান। আমরা পূর্ণতার দিকে এগিয়ে চলছি। আজকে যারা কবিতা পড়লেন তাদের সকলেরই অবদান রয়েছে।

রাজধানী ঢাকার বাইরে সিলেটে সাহিত্যের নানা শাখাকে নিয়ে অনুষ্ঠান করার জন্য বেঙ্গল ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানান রুবী রহমান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত