সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ মে, ২০২৩ ২৩:১৯

আন্দোলনের মুখে রুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) অতিরিক্ত দায়িত্বের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে রোববার রাত পৌনে ৯টার দিকে তিনি রুয়েট রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।

অতিরিক্ত দায়িত্বের উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী প্রকৌশলী মো. মাহবুব সালাম সেতু পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রুয়েটের অর্ধশতাধিক শিক্ষক নিজেদের পদোন্নতির দাবিতে রোববার বেলা ১১টা থেকে অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। রাত পৌনে ৯টা পর্যন্ত তিনি সেখানেই অবরুদ্ধ অবস্থায় ছিলেন। চাপের মুখে রাত সোয়া ৯টার দিকে তিনি পদত্যাগ করেন।

রুয়েট ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩০ জুলাই রুয়েট উপাচার্যের পদটি শূন্য হয়। এরপর থেকে গত ১০ মাস রুটিন দায়িত্বের অতিরিক্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছিলেন অ্যাপ্লায়েড সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেন।

আন্দোলনরত শিক্ষকদের অভিযোগ ছিল, ১১ মাস ধরে ক্যাম্পাসে উপাচার্য নেই। অভিভাবক না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে চরম স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ ছাড়া সব শর্ত পূরণ করেও গত ১৫ মাসে অন্তত ৮০ জন শিক্ষক তাদের ন্যায্য পদোন্নতি ও আপগ্রেডেশন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এসব অভিযোগ তুলে শিক্ষকদের পদোন্নতির দাবিতে রোববার বেলা ১১টার দিকে রুয়েট শিক্ষক সমিতির কয়েকজন নেতার সঙ্গে শিক্ষকরা উপাচার্যের দপ্তরে প্রবেশ করেন। এ সময় রুটিন দায়িত্বের উপাচার্যকে পদোন্নতির বিষয়টি বললে তার হাতে কোনো ক্ষমতা নেই বলে জানান। এরপর থেকেই শিক্ষকরা ড. সাজ্জাদের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে থাকেন। তাকে দপ্তর থেকে বেরও হতে দেননি তারা।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত উপাচার্য না থাকায় গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শেষ বিজ্ঞপ্তির পর আর কোনো নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়নি। এ ছাড়া উত্তরাঞ্চলের একমাত্র এই প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়টির নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড থমকে আছে। এভাবে চলতে থাকলে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হবে রুয়েট। এ জন্য তারা দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য নিয়োগ দাবিতে আন্দোলন করছিলেন।

রুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রবিউল আউয়াল বলেন, ‘সাজ্জাদ হোসেনের নিয়োগে রুয়েটের নিয়ম লঙ্ঘন করা হয়। নিয়মে উল্লেখ আছে, প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষক ছাড়া অন্য কেউ উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না। কিন্তু তারপরও তাকে দিয়েই দীর্ঘ ১০ মাস থেকে ক্যাম্পাস পরিচালনা করা হচ্ছিল। অথচ তার কারণেই ক্যাম্পাসের ছাত্র-শিক্ষকরা নানা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। তার পদত্যাগের মধ্য দিয়ে হয়তো বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠবে।’

পদত্যাগের বিষয়ে জানতে অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ হোসেনের মোবাইল নম্বরে দফায় দফায় কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। জানতে চাইলে রুয়েট রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেন বলেন, ‘পদত্যাগপত্র পেয়েছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব বরাবর পদত্যাগ করেছেন তিনি। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত