নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৯:৫৪

শাবিতে র‌্যাগের ঘটনা ‘ভিত্তিহীন’, ‘মিডিয়ার অপপ্রচার’

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে র‌্যাগিংয়ের নামে যৌন হয়রানির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একে মিডিয়ার অপপ্রচার বলেও দাবি করে তাঁরা।

রোববার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করে এমনটি দাবি করে শিক্ষার্থীরা।

যদিও রোববারই র‌্যাগিংয়ের নামে এক যৌন হয়রানির প্রমাণ পাওয়ায় ৫ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনা অধিকতর তদন্তের জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়।

প্রশাসনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের পর গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর সামনে মানববন্ধন করে ৫ জন ছাত্রকে সাময়িক বহিষ্কারের নিন্দা জানান। গণিত বিভাগের ২৪ ও ২৫ বিভাগের ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়।

এতে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, গণিত বিভাগকে কলঙ্কিত করার জন্য সেদিনের ঘটনাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। যেসব মিডিয়া এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদেরকে এ ঘটনা প্রমাণ করতে হবে।

মিডিয়া ঘটনা ভালভাবে না জেনে অপপ্রচার চালাচ্ছে অভিযোগ করে মানববন্ধনকারীরা মিডিয়ার শাস্তি দাবি করেন।

সেদিনের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করে সারওয়ার রাফি নামের এক শিক্ষার্থী মানববন্ধনে জানান, সিনিয়ররা তাদের সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য তাদেরকে ক্যাফেটেরিয়ার ছাদে নিয়ে যান। পরিচিতি পর্ব তাকে দিয়ে শুরু হয়। তারপর তার পাশের মেয়েকে নাম পরিচয় জিজ্ঞাস করা হলে সে কিছু বলার আগেই মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তখন তারা সবাই মেয়েটিকে ধরতে এগিয়ে আসে। এরপর মেয়েটি বেশ কয়েকবার অজ্ঞান হয়। তারপর তারা সিনিয়রদের সহযোগিতায় তাকে নিয়ে মেডিকেল সেন্টারে যান। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন, মেয়েটির এ সমস্যাটি বহুদিনের; সে স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে ভুগছে।

র‌্যাগ দেওয়ার মতো কোন ঘটনা সেখানে ঘটেনি বলে দাবি করেন রাফি।

মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেয় গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী নুরুন নাহার এ্যানি, মানস বর্মন, ফারজানা আক্তার সুচি প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের এক ছাত্রীকে ক্যাফেটেরিয়ার ছাদে ডেকে নিয়ে ওই বিভাগেরই কিছু সিনিয়র ছাত্র যৌন হয়রানি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। একপর্যায়ে ওই অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

এ অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় ৫ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন মো. মোশাররফ হোসেন, নজরুল ইসলাম, মোশারফ হোসেন, মাহমুদুল হাসান ও অসীম বিশ্বাস। র‍্যাগিং করার অভিযোগের প্রাথমিক তদন্তে এই পাঁচজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে জানান শাবি প্রক্টর কামরুজ্জামান।

এছাড়া আরও তদন্তের জন্য পুর ও পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক জহির বিন আলমকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে। এই কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আমিনা পারভীন ও অর্থনীতি বিভাগের প্রভাষক মুন্সি নাসের ইবনে আফজাল।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত