রাবি প্রতিনিধি

০১ অক্টোবর, ২০১৬ ২৩:২২

স্ত্রীসহ রাবির সেই শিক্ষককে পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি

পরীক্ষার নম্বরপত্রে জালিয়াতি ও গোপনীয়তা ভঙ্গের দায়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদসহ দুই শিক্ষককে পাঁচ বছরের জন্য পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে আয়োজিত একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান নিশ্চিত করেছেন।

অব্যাহতি প্রাপ্ত দুই শিক্ষক হলেন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদ এবং তার স্ত্রী ওই বিভাগের প্রভাষক সোমা দেব।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের তৃতীয় বর্ষের ৩০৫ নং কোর্সের শিক্ষক ছিলেন তানভীর আহমেদ এবং সোমা দেব। কোর্সটির দুটি ইনকোর্সের মধ্যে প্রথম ইনকোর্সের দায়িত্বে ছিলেন তানভীর আহমেদ। সেটির নম্বর তানভীর আহমেদের দেবার কথা থাকলেও নম্বরপত্রে উল্লেখ আছে সোমা দেবের হাতে লেখা নম্বর। সেখানে কয়েকটি নম্বরে পরিবর্তন হওয়ায় কাটাকাটি করেন সোমা দেব। কাটাকাটির জায়গাগুলোতে স্বাক্ষরও করেন সোমা দেব। তবে মূল পরীক্ষকের স্বাক্ষর হিসেবে উল্লেখ আছে তানভীর আহমেদের স্বাক্ষর।

নম্বরপত্রে এমন অনিয়মের ফলে ওই বর্ষের আট শিক্ষার্থী প্রথম ইনকোর্স দিয়েও কোন নম্বর পায়নি। বিষয়টি নিয়ে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, ‘পরীক্ষার নম্বরপত্রে জালিয়াতি ও গোপনীয়তা ভঙ্গের কারণে বিভাগে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেটি তদন্ত করে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের দুজনকে পরীক্ষা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম থেকে পাঁচ বছরের জন্য অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’

এর আগে তানভীর আহমদের সাবেক স্ত্রী ও একই বিভাগের শিক্ষক সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহানের ‘আত্মহত্যায়’ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে ‘নির্যাতন’-এর অভিযোগ থাকায় গত ২২ সেপ্টেম্বর বিভাগের অ্যাকাডেমিক সভায় সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদকে বিভাগের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক প্রত্যাহার করা হয়।

বিভাগের ২১ জন শিক্ষকের মধ্যে ১৬ জন শিক্ষকের স্বাক্ষর সম্বলিত অনাস্থার পরিপ্র্রেক্ষিতে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে বলেন, ‘আমি বিষয়টি মৌখিকভাবে শুনেছি, তবে এখনও লিখিতভাবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি।’

এ বিষয়ে সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত