শাবি প্রতিনিধি

২৭ নভেম্বর, ২০১৬ ১৭:৫৭

শাবিতে প্রশ্ন জালিয়াতি: দুজনের রিমান্ড আবেদন, ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনায় আটক ৮ জনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে জালালাবাদ থানা পুলিশ।

শনিবার রাতে মামলা দায়েরের পর রোববার গ্রেপ্তার ৮ জনকে আদালতে হাজির করে দুইজনের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। এদিকে, এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন জানান, পুলিশ পরিদর্শক দেবাংশু পাল বাদী হয়ে ১০ জনের বিরুদ্ধে পাবলিক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা নং (১৫/২৬-১১-১৬ ইং) দায়ের করেছেন।

মামলার আসামীরা হলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী ইশান ইমতিয়াজ হৃদয়, শাবিপ্রবির ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টি টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী আল আমীন, ভর্তি পরীক্ষার্থী নাজিম আহমদ দিপু, মাহির আসেফ, মাসরুর হোসেন বাপী, মোস্তফা গালিব আল ফয়সাল, মো. সেলিম রেজা, জালিয়াত চক্রের সদস্য জিয়াউর রহমান, আবীর চৌধুরী ওরফে জিসান ওরফে তুহীন এবং সৈকত হাসান।

ওসি আক্তার হোসেন আরো জানান, এর মধ্যে আবীর চৌধুরী এবং সৈকত হাসান পলাতক রয়েছেন। আটক ৮জনকে রোববার দুপুরে সিলেট মহানগর হাকিম আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হৃদয় এবং আল আমীনের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। সোমবার রিমান্ডের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

আল আমীন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলের ২১০ নম্বর রুমের বাসিন্দা। ওই কক্ষটি ছাত্রলীগ সহসভাপতি অঞ্জন রায় সমর্থিত সাংগাঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম নিয়ন্ত্রণ করেন। এমনকি আল আমিনকে গ্রেফতারের পর নজরুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের লোকদের সাথে জালালাবাদ থানায় দেখা গেছে। তাছাড়া আল আমীনকে ছাত্রলীগের মিছিলে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতেও দেখা গেছে।

এদিকে, ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে জালিয়াতির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অধ্যাপক আখতারুল ইসলামকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদার। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, অধ্যাপক কবির হোসেন, ড. রাশেদ তালুকদার, ড. বেলায়েত হোসেন, শাহপরান হল প্রভোস্ট শাহেদুল হোসেন।

পুলিশ জানিয়েছে, এ জালিয়াত চক্রের মূল হোতা বগুড়ার ‘গুগল’ কোচিং সেন্টারের সহকারি পরিচালক আবির ওরফে তুহিন ওরফে জিহান।

সে এই চক্রটিকে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের প্রায়সব বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার নাম করে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করে। তারা ফরম পূরণ করে দেয়ার নামে মোটা অংকের টাকা যেমন হাতিয়ে নেয়, তেমনি আরও নানান অপকর্ম-জালিয়াতি করে বলে পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

উল্লেখ্য, শনিবার (২৬ নভেম্বর) শাবিপ্রবির ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির চক্রান্তের অভিযোগে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি ১৬টি ডিজিটাল ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস স্থাপন করা ক্যালকুলেটরসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত