শাবি সংবাদদাতা

১৭ মে, ২০১৫ ১৭:২৪

যৌন নিপিড়কদের শাস্তির দাবিতে শাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সধারণ ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ সম্প্রতি যৌন হয়রানীর ঘটনার প্রতিবাদে  রবিবার দুপুর বারোটায়  মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করে। ক্যাম্পাসের  কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন ও মুক্ত মঞ্চে মনববন্ধন পরবর্তী সমাবেশ করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন কারিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন লিখিত ব্যানারে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি হরহামেশাই ঘটছে। গত ৫ই মে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরী স্কুলে ঘটে গেল ভয়ঙ্করতম যৌন নির্যাতনের ঘটনা। পঞ্চম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে পাশের একটি নবনির্মিত ভবনে নিয়ে ভয় দেখিয়ে যৌন হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থীর মা। এর আগে গত ৪ মে স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর এক ছাত্রীও প্রতিষ্ঠানটির এক ক্যান্টিন বয়ের যৌন হয়রানির শিকার হন বলে অভিভাবকদের অভিযোগ।

গত ১২ই মে তে করিমগঞ্জে মাকে হাসপাতাল থেকে দেখে আসার পথে ৭ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। বাসে ধর্ষণের দুটি ঘটনা ঘটে। ১০ এপ্রিল ভারতে মায়ের চিকিৎসা করতে গিয়ে নার্গিস নামের তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়।

পয়লা বৈশাখের কয়েকদিন পর গাজীপুরে বাড়িতে ঢুকে মেয়েকে রেপ ও মাকে সহ কুপিয়ে হত্যা করা হয়।সম্প্রতি রংপুরের গঙ্গাছড়ায় তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী রেপড হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

একের পর এক এইসব ঘটনার প্রতিবাদে ‘প্রশাসন বিচার কর নইলে তোমার গদি ছাড়’; ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার চোখে জল এসেছে কি? আমরা ক্রন্দনরত’; ‘কত নারী শিশু নির্যাতিত হলে আপনার চোখ খুলবে? আর কত উদাহারন লাগবে?’; ‘জনাব আই.জি.পি আপনার মেয়ে হলে কি বলতেন দুষ্টামি?’; ‘ফাঁসি ফাঁসি চাই ধর্ষকদের ফাঁসি চাই’ ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এই মানববন্ধন করেন।

মানববন্ধন পরবর্তী সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রুখসানা  খানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন প্রথম ছাত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মাহবুবা শারমিন চৌধুরী, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরী ও গণিত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জান্নাতুল আফরোজ হিজেন।

অধ্যাপক নাজিয়া চৌধুরী বলেন সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে দেশের প্রতিটি সেক্টরেই একই সমস্যা। দেশের নৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয় দেখে আমি হতাশাগ্রস্ত। আজকের এই আয়োজন আমাদের হতাশা ও ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। আমি মনে করে প্রতিটি সেক্টরেই জবাদিহীতার জন্য যৌন নিপীড়ন সেল দরকার ও দোষীদের দৃস্টান্তমুলক শাস্তি দেওয়া দরকার।

অধ্যাপক মাহবুবা শারমিন চৌধুরী বলেন এইসব ঘটনায় প্রশাসন কেন নিরব? ১লা বৈশাখের ঘটনার দোষীদের কেন এখন আইনের আওতায় আনা হয়নি? কেনইবা যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের হাতে নির্যাতিত হতে হবে? এইসব ঘটনার সুরাহা না হলে এই ধরনের পুনরাবৃত্তি চলতেই থাকবে।

জান্নাতুল আফরোজ হিজেন বলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী একজন নারী হওয়া সত্যেও কেন আমরা এভাবেই অসহায়ত্ব বরন করে নেবো? আপনার কাছে আমরা এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স আশা করি কিন্তু তাদের প্রতি আপনি এত দরদি কেন? এইসব নর পিচাশদের জনসম্মুখে এনে শাস্তি দেন না হলে মেয়েদেরকে এক সাথে শুট করে মেরে আপনি একাই বেঁচে থাকেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত