সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ মার্চ, ২০১৮ ২২:৫১

শাবির র‌্যাগিংকারীদের পুলিশে দেওয়া উচিত, মন্তব্য জাফর ইকবালের

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে র‌্যাগিংয়ের দায়ে বহিষ্কৃত পাঁচ শিক্ষার্থীদের পুলিশে দেওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।

শুক্রবার (২ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. এমএ ওয়াজেদ মিয়া আইআইসিটি ভবনে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুইদিনব্যাপী ‘ইইই-ফেস্টিভ্যালে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

জাফর ইকবাল বলেন, “তাদের যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে তা আসলে খুবই কম। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তাদেরকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া দরকার ছিল এবং রাষ্ট্রীয় আইনে তাদের বিচার করার দরকার ছিল।”

তিনি বলেন, “আমি যে বিশ্ববিদ্যালযে শিক্ষক হিসেবে পড়াই; সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এই কাজ করেছে। আমি খুবই লজ্জিত। আমি জাতির কাছে ক্ষমা চাইছি; কারণ আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা এই কাজ করেছে।”

এদিকে শাস্তি ‘বেশি হয়ে গেছে’ দাবি করে বহিষ্কৃতদের রক্ষায় তাদের বন্ধুদের আন্দোলনে নেমেছে। বহিস্কৃতদের পক্ষে আন্দোলনের একদিন পর এমন মন্তব্য করলেন জাফর ইকবাল।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের তপোবন আবাসিক এলাকার ‘তাফাদার ভিলায়’ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের ছয় নবীন শিক্ষার্থীকে রাত ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত আটকে রেখে অর্ধনগ্ন করে র‌্যাগ দেয় একই বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের ২০ শিক্ষার্থী এবং পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের ১ শিক্ষার্থী। পরিচয় দেওয়ার নামে তাদেরকে অর্ধনগ্ন করে র‌্যাগ দেয়াসহ অর্ধনগ্ন না হতে চাইলে একপর্যায়ে মারধরও করা হয়। পরবর্তীতে তাদেরকে জোর করে অর্ধনগ্ন ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অশ্লীল ক্যাপশন দিয়ে একটি গ্রুপে পোস্ট করা হয় এবং বেশ কিছু সময় পরে ডিলিট করা হয়। বিষয়গুলো কাউকে বললে তাদের শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হবে বলেও হুমকি দেন সিনিয়ররা।

নবাগত ছয় শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিং ও মারধরের পর নগ্ন ছবি তুলে তা তাদেরকে দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করার অপরাধে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দুই ছাত্রকে আজীবন বহিষ্কারসহ পাঁচ ছাত্রকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া আরও ১৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে জরিমানা ও সতর্ক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জাফর ইকবাল বলেন, তাদের অপরাধ প্রমাণ হওয়ায় শাস্তি দেওয়া হয়েছে। শাস্তি গ্রহণ করে ওদের ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু সেটা না করে তারা আন্দোলন করা শুরু করেছে। বিশ্বদ্যিালয়ের বাকি ছাত্রদের কষ্ট দিচ্ছে। শুধু তাই নয়; তারা শিক্ষকদের সাথে বেয়াদবিও করেছে। এটা খুবই লজ্জার।

“বিশ্বদ্যিালয় কর্তৃপক্ষ যেন এই ধরনের কুৎসিত আন্দোলনে মাথা না নোয়ায় এবং শাস্তি বহাল রাখে। তাতেই এ ধরনের অপরাধ কমবে।”

আপনার মন্তব্য

আলোচিত