
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ ২৩:১৭
Disbelief এবং Distrust থেকে বের হওয়া জরুরি, ৫ আগস্ট বাস্তবে ঘটে গেছে, সকল রাজনৈতিক দলেরই প্লান B, C এমনকি D-ও থাকে! কিন্তু আওয়ামী লীগের এমন কিছুই ছিল না, ফলত সবকিছুই ভেঙে পড়েছে, অনেকটা ৭৫-এর মতোই! এখন নতুন করে প্লান করা জরুরি। এই প্লানের শুরুতেই রিকন্সিলিয়েশন আবশ্যক! যেখানে ভুল, সত্য স্বীকার করে নতুন করে সংশোধিত হয়ে সামনের জন্য অঙ্গিকার করা।
এই রিকন্সিলিয়েশন বিএনপি/জামায়াত করতে পারেনি বলেই গত ১৫ বছরেও তারা সরকার হটাতে পারেনি। এবার কোটা সংস্কারের বিষয়টি ভালোভাবে সামাল দিতে পারলে আজকের পরিস্থিতি ভিন্ন হতো! তবে, বাস্তবতা হচ্ছে জনগণ যখন আসল ঘটনা বুঝে যাচ্ছে তখনই কিন্তু বিএনপি/জামায়াতের নামে অভিসম্পাত করছে! অবশ্য বিএনপি/জামায়াত রিকন্সিলিয়েশন করলে তাদের আর রাজনীতি করার সুযোগ থাকে না!
আওয়ামী লীগকে বিএনপি/জামায়াতের সাথে রিকন্সিলিয়েশন করার দরকার নেই। এই রিকন্সিলিয়েশন হবে জনগণের সাথে, নিজ দলের নেতা কর্মীদের সাথে, জোট শরিকদের সাথে, পেশাজীবী, সাংবাদিক, প্রবাসী, সিভিল সোসাইটির সাথে!
গত ১৫ বছরে জনগণের সাথে আওয়ামী লীগ/সরকার যে সকল অন্যায় করেছে সেগুলোর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা, সরকার পরিচালনা করতে যেয়ে যেসকল দুর্নীতি/অনিয়ম হয়েছে সেগুলোর জন্য দুঃখ প্রকাশ করা, বাংলাদেশ থেকে যত অর্থ পাচার হয়ে গেছে সেগুলোর জন্য আইনি প্রক্রিয়াতে দল থেকে সহায়তা করা, মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা, বঙ্গবন্ধুর বিষয়ে দলের ভুল নীতির, অতিরঞ্জিত করার ফলে ফলে জনমনে যে ক্ষোভ হয়েছে সেখান থেকে বেরিয়ে আসার অঙ্গিকার করা।
বারংবার শেখ হাসিনা নিজের পরিবার বলতে ৪/৫ জনের কথা বললেও শেখ পরিবারের নাম ভাঙিয়ে ব্যারিস্টার তাপসসহ যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে সেখান থেকে ভবিষ্যতে দলকে মুক্ত রাখার অঙ্গিকার করা!
আওয়ামী লীগকে রিকন্সিলিয়েশন করতে হবে দেশের সুশীল সমাজের কাছে! বিশেষ করে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস যেভাবে সুলতানা কামাল, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পরিবেশবিদ, বিচারপতিদের অপমান অপদস্থ করেছে তার জন্য, এখানেও রিকন্সিলিয়েশন করতে হবে!
আওয়ামী লীগকে, স্বয়ং শেখ হাসিনাকে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে নিজ দলের নিবেদিত নেতা কর্মীদের কাছে, সমর্থকদের কাছে! যারা গত ১৫ বছরে নির্যাতিত হয়েছে, অবহেলিত হয়েছে, যাদের মূল্যায়ন করা হয়নি!
শেখ হাসিনা ভুল করে না, ভুল করেনি সেখান থেকেও বের হওয়া জরুরি। কোথায় কী কী ভুল হয়েছে সেগুলো নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিশ্লেষণ জরুরি। মানুষ অনেক কিছুই পছন্দ করে না, অহেতুক কথা বলা, যাকে যাকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা, আক্রমণাত্মক হওয়া, বঙ্গবন্ধুকে তুলে ধরতে যেয়ে অন্য সকল জাতীয় নেতাদের অবমূল্যায়ন করা, এগুলো দলের বাহিরের সাধারণ মানুষের পছন্দ না সেটি উপলব্ধি করা জরুরি।
শান্তি চুক্তি, কৃষি, বিদ্যুৎ, শিল্প, প্রযুক্তি, যোগাযোগ, যুদ্ধাপরাধের বিচার, জঙ্গি দমন, পররাষ্ট্র, এসব খাতে শেখ হাসিনার অর্জনগুলো কী কী সেগুলো সঠিক ভাবে চর্চা করলে শেখ হাসিনার লিগ্যাসি থাকবে বঙ্গবন্ধুর পরপরই। কেন শেখ হাসিনা মালয়েশিয়ার মাহাথির, সিংগাপুরের লি ক্যুয়ান হতে পারলেন না, সেটি নিয়ে হয়ত আলোচনা হবে, আফসোস থাকবে।
আপনার মন্তব্য