সাব্বির খান

১৪ জানুয়ারি, ২০১৫ ০২:৪০

নিউইয়র্ক টাইমসের সীমাহীন অজ্ঞতা

তথ্য-সূত্র : দ্যা নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়- Muzzling Speech in Bangladesh

২৩ ডিসেম্বর, ২০১৪ তারিখের নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয়তে বাক-স্বাধীনতা রক্ষার নামে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ বিচারের বিশেষ আদালতকে রীতিমতো একহাত নেয়া হয়েছে। আদালত সম্প্রতি মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তিমূলক প্রশ্ন তোলায় ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানকে কার্যত সিম্বলিক শাস্তি দিয়েছে। তাকে ৫০০০ টাকা জরিমানা করা ছাড়াও রায় ঘোষণার দিন আদালতে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত ৩০ লাখ শহীদের স্মৃতি-সুরক্ষার মতো স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে সম্পূর্ণ অবজ্ঞা করে, বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশে বসবাসকারী এই ব্রিটিশ সাংবাদিকের পক্ষে তথাকথিত বাক-স্বাধীনতা সমর্থনের নামে বিদেশী কিছু মিডিয়ার পরিকল্পিত অপপ্রচার আমাদের স্তম্ভিত করেছে। (সম্পাদকীয়র লিঙ্কটি লেখার উপরে দেয়া হলো)
ডেভিড বার্গম্যান ‘বাংলাদেশ ওয়ারক্রাইমস ডট ব্লগস্পট ডটকম’ নামে তাঁর একটি ব্যক্তিগত ব্লগে লিখেছিলেন যে, ‘ট্রাইব্যুনালের রায়ে দেয়া এসব তথ্যের কোন ভিত্তি নেই। ১৯৭১ সালের ২৩ ডিসেম্বর দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকার একটি সম্পাদকীয় থেকে এ সংখ্যাটির উৎপত্তি। রাষ্ট্রপক্ষ এ সব তথ্য-প্রমাণ করেনি, কিন্তু ট্রাইব্যুনাল সেগুলো সাধারণ জ্ঞান (কমন নলেজ) হিসেবে আমলে নিয়েছেন।’
এখানে উল্লেখ্য, এর আগেও নিউইয়র্ক টাইমস বার্গম্যানকে নিয়ে একটি সম্পাদকীয় লিখেছিল। ফ্রিডম হাউসের বিচারে বাংলাদেশ একটি ‘আংশিক মুক্ত অধিকার’র দেশ। এ দেশে সব সরকারের আমলেই নানাভাবে মানুষের বাক-স্বাধীনতা খর্ব হয়েছে। বিএনপি আমলে ইটিভি বন্ধ হলে, ১/১১-এর সময় সিএসবি নিউজ কিংবা বর্তমান সরকারের আমলে দিগন্ত টিভি এবং আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ হলেও নিউইয়র্ক টাইমস এসব বিষয় নিয়ে সম্পাদকীয় লিখেছিল বলে আমার জানা নেই। অথচ একজন বার্গম্যানের মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা বিষয়ে নখরা করার অধিকার নিয়ে বিশ্বের এক নম্বর পত্রিকাটি কেন দু-দু’বার সম্পাদকীয় লেখার তাগিদ বোধ করল, তা এক রহস্যময় ব্যাপার বৈকি! সে ব্যাপারে পরে আসছি। তারা যা বলেছে সেটাই যে কতটা একপেশে, তা আগে একটু খতিয়ে দেখা যাক।
বার্গম্যান তাঁর ব্লগে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নিহতের ভুল সংখ্যা প্রচার করে সব শহীদ পরিবারসহ কোটি কোটি বাঙালীর অনুভূতিতে আঘাত করে অন্যায় করেছেন এবং আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রমকেও বাধাগ্রস্ত করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেয়া আদালতের রায়ের গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্ন তুলে নিউইউর্ক টাইমস একটি দেশের আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে। ‘বার্গম্যান ত্রিশ লাখ নিহতের সংখ্যাটি নিয়ে সংশয় প্রকাশ করলেও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার তো চেয়েছেন। তারপরও আদালত তাঁর বিরুদ্ধে সুবিচার করেনি’ উল্লেখ করে নিউইয়র্ক টাইমস নসিহতের সুরে বলার চেষ্টা করেছে যে, আদালতে আইন নয়, বরং সহানুভূতির দৃষ্টিতে বিষয়টি দেখা উচিত ছিল। অথচ নিউইয়র্ক টাইমস বেশ ভালই জানে যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির নাৎসি বাহিনী কর্তৃক গণহত্যাকে (হলোকাস্ট) ঠিক ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করতে চাননি বলে ডেভিড আর্ভিং নামের পশ্চিমের একজন খ্যাতিমান ইতিহাসবিদ ১৩ মাস জেল খেটেছিলেন। অন্য এক ঘটনায় প্রফেসর বার্নার্ড লুইস একজন বিখ্যাত ইতিহাসবিদ, যিনি যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যার মতো স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে প্রচুর লেখালেখি করেছেন। তিনি ফরাসী পত্রিকা La Monde-তে দেয়া সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, ‘গণহত্যার সংজ্ঞায় পড়ে না বলে আর্মেনিয়ায় গণহত্যা হয়েছে বলা যাবে না।’ তাঁর এ মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আর্মেনিয়ানরা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয় এবং এর সূত্র ধরে ফরাসী এক আদালত তাঁকে এক ফ্রাঙ্ক জরিমানা করেছিল। নিউইয়র্ক টাইমসের এও অজানা নয় যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির নাজি বাহিনী কর্তৃক গণহত্যাকে (হলোকাস্ট) ঠিক ‘গণহত্যা’ হিসেবে অভিহিত করতে চাননি বলে ডেভিড আর্ভিং নামের পশ্চিমের একজন খ্যাতিমান ইতিহাসবিদকে ১৩ মাস জেল খাটতে হয়েছিল।
আরেক ঘটনায় মার্কিন অধ্যাপক ও আইনজীবী পিটার আর্লিন্ডার রুয়ান্ডার গণহত্যাকে অস্বীকার করে এটাকে যুদ্ধের একটি বাই প্রোডাক্ট বলে অভিহিত করেছিলেন। এ কারণে গণহত্যা বিষয়ক মামলায় একটি পক্ষের আইনী পরামর্শক হওয়া সত্ত্বেও রুয়ান্ডার আদালত তাঁকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। এই তিনজনের কারও বেলায়ই নিউইয়র্ক টাইমস কোন আপত্তি করেনি বা সম্পাদকীয় লেখেনি। অথচ একই ধরনের ঘটনা হওয়া সত্ত্বেও বার্গম্যানের বেলায় তারা সম্পাদকীয় লিখতে এত আগ্রহী হলো কেন?
বার্গম্যানের রায়ের ব্যাপারে মন্তব্য করতে গিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস আরও লিখেছে, 'The court is wrong'। এ কথায় বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি মার্কিনী এ পত্রিকার যে তুচ্ছতাচ্ছিল্য মনোভাব দেখা গেছে, সেটা তাদের সম্পাদকীয় ‘এটিকেট’ অনুযায়ীও অনভিপ্রেত। নিহতের সংখ্যাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বার্গম্যান শহীদ পরিবারগুলোর অনুভূতিতে যেভাবে আঘাত করেছেন, ঠিক একইভাবে নিউইয়র্ক টাইমস একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংবিধানের প্রধান স্তম্ভ ‘আদালত’কে ‘ভুল’ বলে আখ্যায়িত করে দেশটির সার্বভৌমত্বের প্রতি শুধু অবজ্ঞাই প্রদর্শন করেনি, একই সঙ্গে অমার্জনীয় অপরাধও করেছে।
Journalism is a dangerous profession in Bangladesh. Local journalists have been physically attacked, and even killed, for reports that the government or Islamist extremists found offensive. Human Rights Watch and reporters for The Economist magazine have also been tried for contempt by the tribunal- বলে সম্পাদকীয়তে উল্লেখ করা হয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বের সাংবাদিকরাই পেশাগত দায়িত্ব পালনে যে প্রতিকূলতা ভোগ করে থাকেন তা সর্বজনবিদিত। কিন্তু সাংবাদিক বার্গম্যানের লেখা কি কোন পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছিল? তিনি যে ‘নিউ এজ’ পত্রিকায় চাকরি করেন সেখানেও কি ছাপা হয়েছিল? বার্গম্যান তাঁর কথাগুলো ‘নিউ এজ’-এ ছাপাতে পারেননি বলেই তাঁর নিজের অনলাইন ব্লগে প্রকাশ করেছিলেন। অর্থাৎ তিনি একজন ব্লগার হিসেবে এ কথা লিখেছিলেন। সুতরাং নিউইয়র্ক টাইমসের দাবি অনুযায়ী মোটা দাগে সাংবাদিকদের অধিকার খর্বের বিষয়টি সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক এবং বানোয়াট। এছাড়াও নিউইয়র্ক টাইমস রেফারেন্স হিসেবে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও ইকোনমিস্টের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার প্রসঙ্গও টেনে এনেছে। এক্ষেত্রে তাও সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক এবং অজ্ঞতাপ্রসূত।
বার্গম্যানের স্ত্রী ব্যারিস্টার সারা হোসেন একজন স্বনামধন্য মানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী। নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত বার্গম্যান সম্পর্কিত প্রথম সম্পাদকীয়তে সাক্ষীসুলভ কথাগুলো তাঁরা নিজেরাই বলেছিলেন। মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সঙ্গে ব্যারিস্টার সারা হোসেনের পেশাগত নিবিড় সম্পর্ক থাকাটা খুবই স্বাভাবিক। একজন ব্রিটিশ সাংবাদিক হিসেবে বার্গম্যানের সঙ্গে ব্রিটিশ পত্রিকা ইকোনমিস্টের ঘনিষ্ঠতা থাকাটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সুতরাং এসব যোগসূত্রতার কারণে দাবি করা যেতেই পারে যে, বিদেশী ওই সংবাদমাধ্যমগুলো যা বলেছে তা মূলত বার্গম্যানের ধ্বনিরই প্রতিধ্বনি মাত্র, যা অবশ্যই আদালত অবমাননার শামিল। প্ররোচিত হয়ে নিউইয়র্ক টাইমস কোন ফাঁদে পা দিচ্ছিল কিনা, এত রূঢ় ভাষায় এবং ভুলেভালে ভরা সম্পাদকীয় লেখার আগে তাদের অন্তত কিছুটা ‘অনিসন্ধিৎসু সাংবাদিকতা’র আশ্রয় নেয়া উচিত ছিল। বার্গম্যান ও সারা হোসেন তাঁদের সুসম্পর্কের কারণেই হোক বা ব্যক্তিগত ইমেজের কারণেই হোক শক্তিধর আন্তর্জাতিক মিডিয়া বা সংস্থারগুলোর সহযোগিতা তাঁরা চাইতেই পারেন। কিন্তু তাই বলে স্বনামধন্য এ গণমাধ্যমগুলো একেবারে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেবে, যা দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন! এটা ঠিক যে, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর বাক-স্বাধীনতা খর্ব বিষয়ক খবরগুলো উন্নত বিশ্বের মিডিয়াগুলোতে বেশ পাঠকসমৃদ্ধ হয়। কিন্তু ন্যক্কারজনক পক্ষপাতিত্বের লজ্জা কোন একদিন হয়ত বুমেরাং হয়ে তাঁদের পিছুই ধাওয়া করতে পারে, তা তাঁরা বেমালুম ভুলে যান।
নিউইয়র্ক টাইমস আরও লিখেছে- In fact, the tribunal has set the bar for journalistic inquiry so low, and defined its terms so vaguely, that anyone who says or writes anything deemed to be offensive by the court’s arcane and arbitrary criteria is at risk of criminal charges. ’ সম্পাদকীয়তে এই অংশটুকু সবচেয়ে ভয়ঙ্কর এবং যে কাউকে আইনের প্রতি অশ্রদ্ধাশীল করতে অবশ্যই উদ্বুদ্ধ করবে। একটি মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপীলের জন্য উপর্যুপরি সাক্ষী-প্রমাণ বা নথির খোঁজে তদন্তমূলক সাংবাদিকতার সহযোগিতা যে কেউ নিতে পারেন। কিন্তু অনলাইন বা ব্লগে একটি রায়ের বিরুদ্ধে দু’কলম লিখে সেই রায়কে বিতর্কিত করার চেষ্টা কি কোন দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার এ্যাথিকসের মধ্যে পড়ে? কোন সাংবাদিক যদি মনে করেন যে, আদালতের দেয়া রায়ে কোন ভুল আছে, তাহলে সাজাপ্রাপ্ত আসামির আইনজীবীর মাধ্যমে তা আদালতের নজরে আনতে হবে, গ্রহণযোগ্য প্রমাণসাপেক্ষে উচ্চ আদালতে রিভিউ আবেদন অথবা আপীল করতে হবে। এটাই আদালতের স্বীকৃত নিয়ম। ডেভিড বার্গম্যান সে নিয়ম মানেননি।
নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে- ‘Journalists and scholars must be able to engage in legitimate inquiry into Bangladesh’s historical record without fear of punishment.’ এ ব্যাপারে আমি একমত। তবে আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, কোন মীমাংসিত বিষয়ে এবং পাবলিক সেন্টিমেন্টের বিষয়ে গবেষণা করতে হলে অবশ্যই সর্বস্বীকৃত মীমাংসিত অবস্থান থেকেই তা শুরু করতে হবে। এক্ষেত্রে ডেভিড বার্গম্যান একটা মীমাংসিত বিষয়কে চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং নিউইয়র্ক টাইমস তা সমর্থন করছে। একাত্তরে বাংলাদেশে যে গণহত্যা হয়েছিল এবং তিন মিলিয়ন বাঙালী নিহত হয়েছিলেন এটা একটা সর্বস্বীকৃত মীমাংসিত বিষয়। এ বিষয়ের ওপর আরও অধিকতর গবেষণা এবং অধ্যয়ন হতেই পারে। কিন্তু তা হতে হবে মীমাংসিত অবস্থান থেকে, কোন মনগড়া অবস্থান থেকে নয়। নিউইয়র্ক টাইমস নিশ্চয়ই অবগত আছে যে, ইউরোপিয়ান দেশগুলোর সংসদে পাস করা ‘ল এগেইনস্ট ডিনায়াল অব হলোকাস্ট’ বলে একটা আইন আছে। জার্মানির নাৎসি বাহিনী ইউরোপে যে গণহত্যা চালিয়েছিল তাকে অস্বীকার বা এর তীব্রতাকে লঘু করার হীন প্রচেষ্টাকেও আইনগতভাবে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে সে আইনে। সেইসঙ্গে মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা বা প্রশ্ন তোলাকে ক্রিমিনাল অফেন্স হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। ‘রিভিশনইজম’র দোহাই দিয়ে যাঁরা হলোকাস্ট বিষয়ে ভিন্নমত পোষণের চেষ্টা করেন, তাঁদেরও ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মোদ্দাকথা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি বাহিনী দ্বারা গণহত্যা হয়েছে, এটার অন্য কোন ধরনের পাণ্ডিত্যমূলক অপব্যাখ্যা দেয়া চলবে না।
১৯৯২ সালে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যখন গণআদালত গঠন করা হয়েছিল নিউইয়র্ক টাইমস তখন তাদের মূল্যবান কাগজে একটি শব্দও অপচয় করেনি, অথচ এখন করছে। একাত্তরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে যে ভূমিকা নিয়েছিল স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরে এসে সেই একই ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে নিউইয়র্ক টাইমসের মতো একটি বিশ্বখ্যাত পত্রিকা। অথচ একাত্তরে যখন মার্কিন সরকার ছিল আমাদের বিপক্ষে, তখন নিউইয়র্ক টাইমস আমাদের পক্ষই নিয়েছিল। আজ নিউইয়র্ক টাইমসের অবস্থান দেখে দৃঢ় বিশ্বাস জন্মে যে, প্ররোচিত হয়ে অথবা ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এই সম্পাদকীয়টি তাঁরা প্রকাশ করেছেন, যা একাধারে স্ববিরোধী এবং হঠকারী।
নিউইয়র্ক টাইমসের কাছে বাংলাদেশ অবশ্যই আশা করবে, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার প্রশ্নে তাদের মানবিক অবস্থান পুনর্বহাল রাখুক এবং একই সঙ্গে আদালত ও বিচারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনপূর্বক সমর্থন দান করুক। গণতন্ত্র ও মানবসভ্যতাকে আরও বিকশিত ও গতিশীল করতে বাংলাদেশের জনগণ নিউইয়র্ক টাইমসের বিরোধিতা নয়; বরং সহযোগিতা কামনা করে।
লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাংবাদিক
[email protected]

আপনার মন্তব্য

আলোচিত