নিউজ ডেস্ক

২৫ জানুয়ারি, ২০১৫ ০৭:১৫

প্রধানমন্ত্রীকে সাক্ষাৎ দিলেন না খালেদা: ফেসবুক প্রতিক্রিয়া

খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন প্রধানমন্ত্রী

শোক জানাতে গিয়ে বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়ার পরেও গেট খুলল না, ভেতর থেকে তালাবদ্ধ গেট- এগিয়ে এলো না কেউ, খানিক সৌজন্যতাও দেখানো হলো না বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল সমবেদনা জানাতে খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী যখন গুলশান পৌঁছালেন তার মিনিট চারেক আগে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত সহকারি শিমুল বিশ্বাস জানালেন ম্যাডাম অসুস্থ, তাঁকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। গেটের সামনে আট মিনিট দাঁড়িয়ে থাকলেন প্রধানমন্ত্রী কিন্তু ভেতর থেকে কেউ এগিয়ে না আসায় ফেরত যেতে হলো তাঁকে! 
 
সমবেদনা জানাতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এমন ব্যবহার পাওয়ার পর ফেসবুকে বিভিন্ন রকমের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। তার কিছু নমুনা প্রদত্ত হলো:
 
সাংবাদিক গোলাম মোর্তুজা লিখেছেন- কোকো'র মৃত্যুতে খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আজ বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার দেখা হচ্ছে না। সরাসরি দেখা না হলেও এটা ভালো সংবাদ যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার কার্যালয়ে গেলেন। কিন্তু বিএনপি নেতৃবৃন্দ কার্যালয়ের গেট খুললেন না! প্রধানমন্ত্রীকে ফিরে যেতে হলো গেটের বাইরে থেকে!! এটা কোন সংস্কৃতি?
বিএনপির কোনো নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কার্যালয়ের ভেতরে নিয়ে যেতে পারলেন না?
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা না হোক, কার্যালয়ের ভেতরে কি প্রধানমন্ত্রীকে দুই মিনিট বসানো যেত না?
বিএনপির এই রাজনীতি সম্পূর্ণ শিষ্টাচার বহির্ভূত।
 
সাংবাদিক সাহেদ আলম লিখেছেন- বেগম জিয়াকে কে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছন? কেন রেখেছেন? এভাবে দেশের ভবিষ্যতকে বে বা কাহারা ঘুম পড়িয়ে দিচ্ছেন প্রতিনিয়ত!!!
 
সাংবাদিক জ.ই.মামুন লিখেছেন- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেননি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাঁকে নাকি ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে! প্রধানমন্ত্রী ফিরে গেলেন বিএনপির গুলশান অফিস থেকে।
 
সৌমিত জয়দ্বীপ লিখেছেন- একটা গেট ইতিহাস হয়ে গেল -- ওই বন্ধ গেট দিয়ে খালেদা জিয়া বেরুতে পারেননি, শেখ হাসিনা ঢুকতে পারলেন না! এদেশে, রাজনীতির মধ্যে পলিটিক্স, তাই মৃত্যুতেও 'পলিটিক্স'!
 
সন্যাসী রতন লিখেছেন- প্রধানমন্ত্রী রওনা দেওয়ার পর খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, খালেদা জিয়াকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে। ওই ঘোষণা শুনে খালেদা জিয়ার কার্যালয়ের ভেতরে থাকা দলীয় নেতাকর্মীদের করতালি দিয়ে স্বাগত জানাতে দেখা যায়।
তার মানে খালেদা জিয়া ঘুমালে বিম্পি নেতারা খুশি হয়!
 
অপ্রস্তুত লেনিন তার টাইমলাইনে লিখেছেন- সন্তান মারা গেলে মা দিশেহারা হয়, জ্ঞান হারায়, ক্ষেত্রে বিশেষে ইনজেকশান ও দিতে হয়! খুবই লজিকাল ... সে সন্তান পেট্রোল বোমায় মারা গেল, না স্বাভাবিক ভাবে মারা গেল সেটা কোন মায়ের কাছেই মুখ্য না ... এইটা নিয়া ত্যানা প্যাঁচানোর কিছু নাই ...
প্রধানমন্ত্রী গুলশান অফিসে খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করতে যাবেন, পুরা বাংলাদেশের মিডিয়ায় দেখানো হচ্ছে ... উনাদের মধ্যে কি এমন একজনও ছিল না যারা শেখ হাসিনাকে রিসিভ করতে পারতো ... অন্তত ড্রয়িং রুমে নিয়ে বসাতে পারত, অথবা ঘুমন্ত খালেদা জিয়াকে দেখে আসতে পারত ...
শেখ হাসিনা গুলশান যাওয়ার আগ থেকেই সারাদিন বহু নেতা খালেদা জিয়াকে দেখতে যায়। কোকোর মৃত্যু সংবাদের পর খালেদা জিয়াকে দেখে বের হওয়ার সময় বিএনপি নেতারা সাংবাদিকদের বলেন, "এই মুহূর্তে তিনি (খালেদা জিয়া) কেবল ‘মা’ নন, ‘দেশনেত্রী’ও বটে। তাই ব্যক্তিগত শোকের চেয়ে, দেশের স্বার্থটাকেই বড় করে দেখছেন তিনি। হরতাল ও চলবে, অবরোধ ও চলবে ... উনারা অবশ্য বলেন নি মানুষ পুড়ানোর কি হবে !!
সারাদিন সবাই গেট দিয়ে ঢুকতে পারল, শুধু মাত্র শেখ হাসিনার বেলায় উনারা সবাই ইনজেকশন দিয়ে ঘুমিয়ে গেলেন ... ঘুম পাড়ানোর জন্য ইনজেকশন দেওয়া খুবই লজিকাল। তার মানে এই না গুলশান অফিসের সবাইকে ইনজেকশান দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া হইছে। বিন্দুমাত্র কার্টেসিও উনারা দেখাবেন না ...
প্রধানমন্ত্রী চাইলে একটা শোক বার্তা দিয়ে উনার দায়িত্ব শেষ করে দিতে পারতেন ... কিন্তু ১২ টা গ্রেনেড খাওয়ার পরেও, ১৫ ই অগাস্ট ভুয়া জন্মদিনের কেক কাটার পরেও, উনি শুধু শোক বার্তা দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন নি, একজন মায়ের মমতা নিয়েই আরেকজন মা কে সান্ত্বনা দিতে যান ... অথচ সারা দেশের উৎসুক জনতাকে গেট থেকে ফেরত আসতে হল ...
মনে রাখবেন "কার্টেসি কস্টস নাথিং, বাট পেইস হিউজ ডিভিড্যান্ডস ! এ ম্যান উইথ আউট সেন্স অফ কার্টেসি ইজ এন এনিম্যাল " ... জ্ঞানীরা বলে "কার্টেসি বিগেটস কার্টেসি "...
অল্প সময়ের জন্য হলেও রাজনীতিবিদ না হয়ে একজন মা হওয়ার সুযোগ মিস করলেন বেগম জিয়া। আপনার চেয়ে বার্ন ইউনিটের একজন মায়ের বেদনা কোন অংশে কম না।
আপনারা রাজনীতি করেন কেউ বাধা দিবে না, শুধু একটা অনুরোধ থাকবে কোন মা কে যেন পেট্রোল বোমায় দগ্ধ ছেলে মেয়ের লাশ দেখে ইনজেকশন না দিতে হয় ...
অ্যান্ড সো অন - আজ ২৪ ই জানুয়ারি ঐতিহাসিক গন অভ্যুত্থান দিবস। এই দিনে শেখ মুজিবের নেত্রীত্রে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিকামী জনতা ... আল্লাহ না করুক আগামী বছর থেকে আওয়ামী লীগ যদি এই দিনে ৭০ পাউন্ডের কেক কেটে গন অভ্যুত্থান দিবস পালন করা শুরু করে, তাহলে যারা ১৫ ই অগাস্ট ভুয়া জন্মদিনের কেক কাটে তাদের কেমন লাগবে ?? তবে নিশ্চয়তা দিতে পারি সে কাজটা তারা করবে না ...
‪#‎জগতের‬ সকল প্রাণী সুখী হোক ...
 
সবাক পাখি লিখেছেন- এটাই খালেদার সর্বশেষ রাজনৈতিক ঘুম। শেখ হাসিনা আর কখনো খালেদাকে এমন একটি ঘুম দেয়ার সুযোগ দিবে না।
 
মাহমুদুল হক মুন্সী লিখেছেন- একটি দেশের প্রধানমন্ত্রী দাঁড়িয়ে ছিলেন একটি বন্ধ দরজার সামনে। দরজার ওপাশে তখন বিবেক আর ভদ্রতাকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে।
 
 
 
 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত