বিনোদন ডেস্ক

১৫ নভেম্বর, ২০১৫ ১৯:০৬

যাত্রার মঞ্চে হঠাৎ পরীমনি!

মলুয়া-মহুয়ার অঞ্চল ময়মনসিংহ। শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির ঘোরেই কাটে এই অঞ্চলের মানুষের দিনরাত। সম্প্রতি ময়মনসিংহ শহরের সার্কিট হাউজের জিমনেশিয়ামে বসেছে ১০ দিনব্যাপী নির্মল যাত্রা উৎসব। উৎসবের নবম দিন সন্ধ্যায়ও যাত্রা দেখতে সার্কিট হাউজের ময়দানে হাজির হয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। যাত্রারম্ভের একটু আগে হঠাৎ উৎসব উদযাপন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও কবি ফরিদ আহমদ দুলালের ফোনে বেজে উঠলো ‘মহুয়া সুন্দরী’র ফোন! মহুয়া সুন্দরী? বিষয়টি খোলাসা করলেন ওই প্রান্তে থাকা নিজেকে মহুয়া সুন্দরী পরিচয় দেয়া এই সময়ের শীর্ষস্থানীয় নায়িকা পরীমনি।

বাংলাদেশ যাত্রাশিল্পী উন্নয়ন পরিষদের আয়োজনে ময়মনসিংহে শুরু হয়েছে দশ দিনব্যাপী যাত্রাপালা। যা শেষ হচ্ছে আজ। দশ দিন ব্যাপী যাত্রা উৎসবের নবম দিনের যাত্রারাম্ভ পূর্ব আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আমির আহম্মেদ চৌধুরী রতন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন যাত্রা উৎসব উৎযাপন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কবি নাট্যকার ফরিদ আহমদ দুলাল, যাত্রা শিল্পী উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গাজী বেলায়েত, মমতাজ উদ্দিন, এবং তরুণ কবি হাসান জামিল প্রমুখ।

আর আলোচনা অনুষ্ঠানের এক ফাঁকেই নিজের আসন্ন মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‌‘মহুয়া সুন্দরী’ নিয়ে কথা বলেন এই সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনি।

ফোনে ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিত উপস্থিত দর্শকদের উদ্দেশে পরীমনি প্রথমেই শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘যারা ময়মনসিংহে দশদিন ব্যাপী যাত্রা উৎসবের মত অসাধারণ একটি আয়োজন করছেন এবং যারা আমাদের হারিয়ে যাওয়া যাত্রা দেখতে এই অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছেন সকলকে আমার এবং ‌মহুয়া সুন্দরীর পক্ষ থেকে অকৃত্রিম শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই মুহূর্তেও আমি শ্যুটিংয়ে আছি, কিন্তু যখন শুনলাম ময়মনসিংহে এমন অসম্ভব সুন্দর একটি যাত্রাপালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে তখন সবার সাথে কথা বলার লোভ সামলাতে পারলাম না। আমার যদি সুযোগ হত তাহলে সবার সাথে এসে এই অনুষ্ঠানে বসে আমিও যাত্রা দেখতাম। কারণ আমি যাত্রাশিল্পকে আন্তরিকভাবেই শ্রদ্ধা করি। তাছাড়া আমি নিজেও ময়মনসিংহ অঞ্চলের বিখ্যাত পালা মহুয়া সুন্দরীতে অভিনয় করেছি। যে ছবিটি মুক্তির প্রতীক্ষায় আছে। নভেম্বরের ২০ তারিখে সাড়া বাংলাদেশে ছবিটি মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আশা করি যারা যাত্রাশিল্পকে মন থেকে ভালোবাসেন তারা ছবিটি সিনেমা হলে গিয়ে দেখবেন। আর ছবি চলাকালীন সময়ে আমি একবার হলেও ময়মনসিংহে আপনাদের সাথে দেখা করে যাবো।’

মহুয়া সুন্দরী যে সত্যিই গতানুগতিক বাংলা চলচ্চিত্র থেকে পুরো ভিন্ন ঘরানার একটি ছবি সে কথাও মুঠোফোনে ময়মনসিংহে যাত্রাপালা দেখতে আসা উপস্থিত দর্শকদের জানান। চলচ্চিত্র ‘মহুয়া সুন্দরী’ সম্পর্কে বলতে গিয়ে পরীমনি আরো বলেন, ‘মহুয়া সুন্দরী’ অন্যান্য গৎবাঁধা ছবির মত নয়। এই ছবিটির প্রধান বিশেষত্ব ছবিটি আমাদের প্রাণের লোকগাথা খুবই জনপ্রিয় ‘মহুয়া সুন্দরী’ পালা থেকে নেয়া। তবে ছবিটি আধুনিক সময়ের সাথেই সংমিশ্রণ করে নির্মাণ করেছেন পরিচালক রওশন আরা নীপা। ছবিটির সবগুলো গানও সবার পছন্দ হবে। এমনকি বাংলা সিনেমায় এমন চমৎকার গান সচরাচর দেখা যায় না বলেও জানান নায়িকা পরীমনি।

দর্শকদের সাথে পরীমনির কথা বলার পর যাত্রা উৎসব উদযাপন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক কবি, নাট্যকার ফরিদ আহমদ দুলাল সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ময়মনসিংহে দশদিন ব্যাপী আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি যে সত্যিই পুরো বাংলাদেশে সমাদৃত হয়েছে, সাড়া পড়েছে তার প্রমাণ বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রীর ফোন। এই যাত্রাপালাটি আয়োজনে হয়তো আমাদের অনেকেই খোজ খবর নেননি, কিন্তু এমন একজন আমাদের অনুপ্রাণিত করলেন যাকে পুরো বাংলাদেশ চিনেন, জানেন। এটাই আমাদের যাত্রা উৱসবের স্বার্থকতা।

অনুষ্ঠানে এই সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রীর করা মহুয়া সুন্দরী ছবিটি ময়মনসিংহ অঞ্চলের সবাইকে দেখারও আমন্ত্রণ জানান তিনি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত