বিনোদন ডেস্ক

২৭ জুলাই, ২০১৫ ০২:০২

প্রশংসিত সুজয় ঘোষের অহল্যা

সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে কাহানি-খ্যাত পরিচালক সুজয় ঘোষের শর্ট ফিল্ম 'অহল্যা'। রামায়ণের ঐতিহাসিক অহল্যা চরিত্রেরই নতুন ও আধুনিক ভঙ্গিমা তুলে ধরেছেন সুজয় ঘোষ। স্যোসাল মিডিয়া থেকে শুরু করে টলিউড, বলিউড সর্বস্তরে প্রশংসা কুড়িয়েছে এই ছবি। কিন্তু কেন ? শর্ট ফিল্ম তো ভুরি ভুরি তৈরি হয়, তবে এই ছবিটি নিয়ে এত মাতামাতি কিসের? কেনই বা প্রশংসা কোড়াচ্ছে এই ছবি? অহল্যার এই আধুনিক পুনর্নির্মান তো অবশ্যই একটা কারণ বটে। তবে এর বাইরেও তার কিছু ব্যাখ্যা রয়েছে আমাদের কাছে। কী সেই কারণগুলি আসুন দেখে নেওয়া যাক।

ছবির দৈর্ঘ্য
বলিউড-টলিউডের আড়াই তিন ঘন্টার বইয়ের ভিড়ে মাত্র ১৪ মিনিটের এই ছবি একেবারে সতেজ হাওয়া। খেতে খেতে, অফিসে কাজের ফাঁকে, কলেজে দুটো ক্লাসের ইন্টারভেলে যখন তখন দেখে নিতে পারবেন এই ছবিটি। কারণ সময় লাগবে মাত্র ১৪ মিনিট ১০ সেকেন্ড।

স্টার কাস্টে প্রাধান্য নয়
সুজয় ঘোষ এছবিতে সেভাবে স্টারকাস্টে প্রাধান্য দেননি। এই ছবিতে মুখ্য চরিত্রে নেওয়া হয়েছে রাধিকা আপটে ও টোটা রায় চৌধুরিকে। টৌটা এখন অভিনয় কম করেন, কিন্তু এই ছবিতে তিনি ছোট অথচ সাবলীল যে পারফরম্যান্সটি দিয়েছেন তাতে সুজয় ঘোষ যে ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা প্রমাণ। অন্যদিকে রাধিকা আপটে। অন্তহীন, বদলাপুর ছবিতে অভিনয়ের দক্ষতা দেখালেও সে অর্থে তারকা অভিনেত্রী নন রাধিকা। কিন্তু অভিনয় দক্ষতা যে তার রয়েছে তা তিনি আরও একবার অনায়াসে প্রমান করলেন। এছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ও অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনয় নিয়ে আলাদা করে বলার কিছুই নেই।

সুজয়োচিত রহস্য
সুজয় ঘোষের নিজস্ব একটা স্টাইল রয়েছে। কাহিনী ছবিতেও প্রথম দৃশ্য থেকে শেষ দৃশ্য পর্যন্ত রহস্যময়তা বজায় রেখে গিয়েছিলেন সুজয়। এই ছবিতেও একই কায়দায় রহস্যের পরতে রহস্যে মুড়ে পেশ করেছেন তিনি। ছবি শেষ হয়েও যেন শেষ হয় না।

অতিপ্রাকৃতিক উপাদান
এছবি যেন প্রাপ্তবয়স্কদের রূপকথার গল্প। এই ছবিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে (বলে দিলে দেখার মজাটাই চলে যাবে, তাই বলছি না।) যা শুনলে হাসি পায়, মনে হয় যত সব আজগুবি কাণ্ড। কিন্তু যতই যাই বলুন না কেন বাজি ধরতে পারি এই ১৪ মিনিটে নিজের জায়গা ছেড়ে উঠতে পারবেন না।

রামায়নের চরিত্র ঘিরে
এই ছবির তিনটি চরিত্রই রামায়েণের থেকে নেওয়া। ঋষি গৌতম এখানে শিল্পী গৌতম সাধু। অহল্যা এখানে অপরিবর্তিত। দেবরাজ ইন্দ্র এখানে পুলিশ অফিসার ইন্দ্র সেন। আর রামায়ণ-মহাভারত পর্দায় আসুক বা বইয়ে চিরকালই 'বেস্টসেলার'। যতই আমরা এই কাহিনীর আভ্যন্তরীন রহস্য ভেদ করি না কেন তাও এগুলির প্রতি মানুষের আকর্ষন কমে না।

যৌনতার রেশ কোনও অশ্লীলতা ছাড়াই
এই ছবিতে যৌনতা গল্পের একটা গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হলেও, কোথাও অশ্লীল বা কুরুচিপূর্ণ দৃশ্যের ব্যবহার করা হয়নি, পুরুষকে প্রলুব্ধ করার জন্য মহিলার শরীরে খোলামেলা পোশাও কখনও অশোভনীয় লাগেনি। অথচ পরিচালক যা বোঝাতে চেয়েছেন সেই বার্তা স্পষ্টভাবে পৌঁছিয়েছে দর্শকদের কাছে।

গল্প ও পরিবেশের অসাধরণ কনট্রাস্ট
রহস্য বোঝাতে কখনও সেই ক্লিশে স্যাঁতস্যাতে ঘরের কম আলো দেখানো হয়নি। সূর্যের উজ্জ্বল টোনের আলোতেই শুট করা হয়েছে ১৪ মিনিটের এই ছবিটি। যা অন্ধকারচ্ছন্ন কাহিনির দিকের সঙ্গে বৈপরীত্যের ভারসাম্য তৈরি করে দারুণভাবে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত