সিলেটটুডে ডেস্ক

২২ মার্চ, ২০২৪ ১০:৫৭

শান্তির জন্য পানি

বিশ্ব পানি দিবস ২০২৪

ছবি : সংগৃহীত

বিশ্ব পানি দিবস আজ। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত প্রস্তাব অনুযায়ী প্রতি বছর ২২ মার্চ ‘বিশ্ব পানি দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে।

এ বছরের প্রতিপাদ্য, ‘ওয়াটার ফর পিস’ বা ‘শান্তির জন্য পানি’।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি পালিত হবে। দিবসটি পালনে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং পানিসম্পদের পরিমিত ব্যবহার, সংরক্ষণ ও টেকসই ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বিশ্বব্যাপী জনসচেতনতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, মানুষসহ পৃথিবীর প্রাণিকূলের জীবনধারণের জন্য পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ, নিরাপদ ও সুপেয় পানি অপরিহার্য।

দুষ্প্রাপ্যতা ও দূষণের ফলে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার উল্লেখযোগ্য অংশ পর্যাপ্ত এবং সুপেয় পানির অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি পানির সুষম প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে পানিসম্পদের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎস হতে ভোক্তা অবধি পানির ন্যায়সঙ্গত বণ্টন ও টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, পানির প্রতিটি ফোঁটার সর্বোত্তম ব্যবহারই নিশ্চিত করতে পারে পানির সর্বজনীন ন্যায়ভিত্তিক বণ্টন ও ব্যবস্থাপনা।

বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নদীমাতৃক বাংলাদেশের সব জনগণ ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পানি দিবসের এ বছরের প্রতিপাদ্য- ‘ওয়াটার ফর পিস’ সময়োপযোগী হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পানি’ শান্তি কিংবা সংঘাত ঘটাতে পারে। পানির অসম বণ্টন বা দুষ্প্রাপ্যতা উত্তেজনা ও সংঘাত সৃষ্টি করে। সুষম পানি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্যের সমৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহজতর হলে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় তা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ এবং পানিসম্পদের ওপর এর প্রভাব মোকাবিলা করার জন্য সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক শান্তি রক্ষার লক্ষ্যে আন্তসীমান্ত নদীর পানি ব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আস্থা ও সহযোগিতামূলক মনোভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানির প্রতিটি ফোঁটার সর্বোত্তম ব্যবহারই নিশ্চিত করতে পারে পানির সর্বজনীন ন্যায়ভিত্তিক বণ্টন ও ব্যবস্থাপনা।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই উন্নয়ন একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। আবহমানকাল থেকে পানি আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে অপরিহার্য উপাদান হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। তাই টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পানিসম্পদকে দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।

পানির পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনাই আমাদের জলবায়ু ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করাসহ জীববৈচিত্র্য রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়নে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত সহিষ্ণু বদ্বীপ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের সরকার ‘বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন করেছে। অভিযোজনভিত্তিক কারিগরি এবং অর্থনৈতিক এ মহাপরিকল্পনায় জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করে পানিসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবস্থাপনা, ভূমি ব্যবহার এবং পরিবেশ-প্রতিবেশ উন্নয়নের অঞ্চলভিত্তিক কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছে। পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও পানি ব্যবহার শৃঙ্খলা প্রবর্তনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে পানি আইন, জাতীয় পানিনীতি ও পানি বিধিমালা প্রণীত হয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় নদী ব্যবস্থাপনা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও নিষ্কাশন, নদীতীর ভাঙন প্রতিরোধ ইত্যাদি বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে।’

এ ছাড়া ডিজিটাল পদ্ধতিতে বন্যার পূর্বাভাস সংবলিত প্লাবন মানচিত্র ও আগাম সতর্কবার্তা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়াসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে, যা স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা করেন।

প্রধানমন্ত্রী পরিবেশবান্ধব ও টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ গড়তে সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি ‘বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত