১৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১১:১৬
পেট্রোবাংলা (Petrobangla) রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশের জাতীয় তেল কোম্পানি। এটি বাংলাদেশে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান, উত্তোলন, পরিশোধন, ও বাজারজাতকরণের কাজ করে। এছাড়াও কোম্পানিটি বাংলাদেশে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস অনুসন্ধান এবং উন্নয়নে আন্তর্জাতিক তেল কোম্পানিসমূহের সাথে উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি করে থাকে।
২৬ মার্চ, ১৯৭২ সালের রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ২৭ এর মাধ্যমে দেশের তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ খনিজ, তেল ও গ্যাস করপোরেশন (বিএমওজিসি) গঠিত হয়। ১৯৭২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ১২০ এর মাধ্যমে দেশের খনিজ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনার উদ্দেশ্যে “বাংলাদেশ খনিজ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন করপোরেশন” (বিএমইডিসি) নামে অপর একটি সংস্থা গঠন করা হয় যা পরবর্তীতে বাংলাদেশ খনিজ, তৈল ও গ্যাস করপোরেশন (বিএমওজিসি)-কে বাংলাদেশ তৈল ও গ্যাস করপোরেশন (বিওজিসি) নামে পুনর্গঠন করা হয় এবং ১৯৭৪ সালের ২২ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশ নং ১৫ এর মাধ্যমে বিওজিসি’কে ‘পেট্রোবাংলা’ নামে সংক্ষিপ্ত নামকরণ করা হয়।
১৯৭৪ সালের ২৮ নভেম্বর জারিকৃত ৭০ নং অধ্যাদেশ-এর মাধ্যমে অয়েল এন্ড গ্যাস ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন অর্ডিন্যান্স, ১৯৬১-কে বাতিল করে অয়েল এন্ড গ্যাস ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন (ওজিডিসি) বিলুপ্ত করা হয় এবং উহার সম্পদ ও দায় বিওজিসি’র (পেট্রোবাংলা) ওপর ন্যস্ত করা হয়।
১৯৭৬ সালের ১৩ নভেম্বর জারিকৃত অধ্যাদেশ নং ৮৮ এর মাধ্যমে নবগঠিত বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে অপরিশোধিত তেল ও পেট্রোলিয়াম দ্রব্যাদি আমদানি, পরিশোধন ও বিপণন কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ অয়েল, গ্যাস এন্ড মিনারেল করপোরেশন অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৫ (১৯৮৫ সালের ১১ এপ্রিল জারিকৃত ২১ নং অধ্যাদেশ) এর মাধ্যমে বিওজিসি ও বিএমইডিসিকে একীভূত করে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন (বিওজিএমসি) গঠন করা হয়।
দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট তৎকালীন ব্রিটিশ তেল কোম্পানি শেল অয়েল এর নিকট থেকে তিতাস, হবিগঞ্জ, রশিদপুর, কৈলাশটিলা ও বাখরাবাদ-এ ৫টি গ্যাসক্ষেত্র মাত্র ৪.৫ মিলিয়ন পাউন্ড স্টার্লিং মূল্যে ক্রয়পূর্বক বাংলাদেশের জ্বালানির অগ্রযাত্রা শুরু হয়।
সর্বশেষ ২০ নভেম্বর, ২০২২ সালের ১৯ নং আইন দ্বারা বাংলাদেশ অয়েল, গ্যাস এন্ড মিনারেল করপোরেশন অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৫ (১৯৮৫ সালের ১১ এপ্রিল জারিকৃত ২১ নং অধ্যাদেশ) রহিতপূর্বক উহাকে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে যুগোপযোগী করে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন আইন, ২০২২ নামে বাংলা ভাষায় একটি আইন প্রণয়ন করা হয় এবং এটাকে তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন-পেট্রোবাংলা (Bangladesh Oil, Gas & Mineral Corporation) নামে অভিহিত করা হয়।
পেট্রোবাংলার অধীনে যত কোম্পানি
পেট্রোবাংলার অধীনে ১৩টি কোম্পানি রয়েছে। সেগুলো হলো-বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স), বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল), সিলেট গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (এসজিএফএল), গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল), তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল), বাখরাবাদ গ্যাস সিস্টেমস লিমিটেড (বিজিডিসিএল), জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড (জেজিটিডিএসএল), পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (পিজিসিএল), কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল), সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (এসজিসিএল), রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল), বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএমসিএল) ও মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল)।
পেট্রোবাংলার গ্যাস পাইপলাইন নেটওয়ার্ক
এমআইএস প্রতিবেদন জুলাই, ২০২৫ অনুযায়ী পেট্রোবাংলার গ্যাস পাইপলাইন নেটওয়ার্ক হচ্ছে পরিবহন পাইপলাইন নেটওয়ার্ক ৩,৫১৯.২০ কিলোমিটার, বিতরণ ২,৪৬০.২৯ কিলোমিটার, লেটারেল ২১৬.৮৯ কিলোমিটার, ফিডার মেইন ও সার্ভিস ২০,৩৪২.৫২ কিলোমিটার এবং অন্যান্য ১,৯৮৬.৪০ কিলোমিটার।
আপনার মন্তব্য