১০ মার্চ, ২০২০ ১৯:০৫
একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে সঠিক সময়ে, সঠিক তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করা আমাদের দায়িত্ব। সেটি করতে যেয়ে আমরা যেন ভুল তথ্য দিয়ে তাদের বিভ্রান্ত না করি। আমরা হুজুগে বাঙালি অনেক জিনিসই কিনে ফেলি কিন্তু কোন জিনিসই নিয়ম মেনে মাপমত ব্যবহার করি না। ফেস মাস্কের বেলাতেও তাই হচ্ছে। অথচ ফেস মাস্ক সঠিক মাপের না হলে এবং এটি সঠিক নিয়মে ব্যবহার না করলে আমাদের উপকারের চেয়ে অপকার বেশি করতে পারে।
করোনা ভাইরাস আতঙ্কে গত কয়েক দিনে ফেস মাস্ক ব্যবহার করার পরিমাণ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। গত কয়েকদিনের অভিজ্ঞতায় সবচে বেশি মানুষ দেখলাম কাপড়ের তৈরি মাস্ক (নেকাবও এই গোত্রে পড়ে) ব্যবহার করছেন। অথচ এ ধরণের মাস্ক ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং বাতাসে সাথে মিশে থাকা ক্ষতিকর গ্যাসীয়, তরল ও কঠিন পদার্থ থেকে কোনধরনের সুরক্ষা দেয়া না। এমনকি এগুলো ব্যবহারকারীর শরীর থেকে নির্গত হওয়া কফ, লালা, ঘাম, থুথুর স্পর্শ থেকে অন্যদের মুক্ত রাখতে পারে না। উল্টো দীর্ঘক্ষণ কিংবা একই মাস্ক বারবার ব্যবহারের ফলে আমরা নিজেদের শরীরে ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া চাষাবাদ করার পরিবেশ তৈরি করতে পারি।
শ্বাসকষ্টের রোগী এ ধরণের মাস্ক ব্যবহার করলে শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে যেতে পারে, এমনকি হার্ট ফেইলিউর পর্যন্ত হতে পারে। তাছাড়া এ ধরনের মাস্ক পড়ে আমরা নিজেকে সুরক্ষিত মনে করে নিশ্চিন্তে দূষিত পরিবেশে চলাফেরা করে আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারি।
কাপড়ের মাস্কের পর সবচে বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে সার্জিক্যাল মাস্ক। এই ধরনের মাস্কের মূল কাজ, ব্যবহারকারীর নাক মুখ থেকে নির্গত হওয়া কফ, লালা, থুথু ইত্যাদি থেকে অন্যদের রক্ষা করা এবং বাইরে রক্তের ছিটা ফোটা থেকে ব্যবহারকারীকে স্পর্শমুক্ত রাখা। সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে এটি ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া থেকে কিছু মাত্রায় হলেও সুরক্ষা দিয়ে থাকে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর কঠিন, জলীয় এবং বায়বীয় পদার্থ থেকে সুরক্ষা দিতে ফেসমাস্ক হিসেবে একমাত্র N95 গ্রেডের মাস্ক বা রেসপিরেটর ব্যবহার করা উচিত। এবং সেগুলো অবশ্যই CDC এবং NIOSH approved সুনির্দিষ্ট কয়েকটি কোম্পানির হতে হবে এবং অবশ্যই সব রকম নিয়ম মেনে ব্যবহার করতে হবে। বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহারের আগে এবং পরে সঠিক নিয়মে হাত ধুতে হবে। এই কাজটি মাস্ক ব্যবহারের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলেও আমরা কেউ এটি নিয়ে কোন কথা বলছি না। হাত ময়লা থাকলে মাস্ক পরেও লাভ নেই, ভাইরাস চোখের মাধ্যমে বা সরাসরি ত্বকে স্পর্শ করার মাধ্যমেও আমাদের শরীরে প্রবেশ করতে পারে।