ডা. মো. তারেক আজাদ

০৩ এপ্রিল, ২০২০ ২২:৫৪

করোনা পরিস্থিতি ও আমাদের করণীয়

বিশ্ব বর্তমানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে দুর্যোগময় পরিস্থিতির মোকাবেলা করছে। ডিসেম্বর ২০১৯ এর শেষ থেকে বিগত ৩ মাস যাবত করোনা ভাইরাস মহামারি পুরো বিশ্বকে টালমাটাল অবস্থায় নিয়ে এসেছে। অর্থনীতি, রাজনীতি, কর্মচাঞ্চল্য সবকিছু বর্তমানে স্থবির। সারা বিশ্ব আজ করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ব্যস্ত।

বাংলাদেশসহ তৃতীয়বিশ্বও এর থেকে আলাদা নয়। যদিও তৃতীয়বিশ্বে এই মহামারি ততটা বিশাল আকার এখনও ধারণ করেনি।

বিজ্ঞাপন

অদ্যাবধি ১০ লক্ষাধিক মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৫০ হাজারের অধিক মানুষ এতে মৃত্যুবরণ করেছেন। মার্চ মাসের ৮ তারিখ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় এবং আজ (শুক্রবার) পর্যন্ত ৬১ জন রোগী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

তবে এই সংখ্যায় আমাদের আত্মতুষ্টির কোন অবকাশ নাই। রোগী কম হওয়া নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মাঝে নানান রকম তত্ত্ব আলোচনা হচ্ছে। যেমন:

  • আমাদের TB’র টীকা
  • আমাদের ম্যালেরিয়া’র endemicity
  • আমাদের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা
  • বিভিন্ন রোগ এর কারণে আমাদের অর্জিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
  • উন্নত বিশ্বের তুলনায় অস্বাস্থ্যকর খাদ্য, অভ্যাস, চলাফেরার কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ইত্যাদি।

আমাদের মনে রাখতে হবে, এগুলো কোনটারই কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এগুলো সবই বর্তমানের তত্ত্ব। কাজেই এই তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে আমাদের ‘ঘরে থাকা’র গুরুত্বকে হালকা করা যাবে না।

বিজ্ঞাপন

উন্নত বিশ্ব যেখানে এই মহামারি মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে সেখানে আমাদের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। সৃষ্টিকর্তা আমাদের যেন সেই পরীক্ষায় না ফেলেন। আমাদের সবারই দায়িত্ব ঘরে থাকা।

আমরা নিজেরা ঘরে থাকি, অন্যকেও ঘরে থাকতে অনুরোধ করি, অনুপ্রাণিত করি। নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, সমাজের জন্য, দেশের জন্য আমরা সবাই ঘরে থাকি। এই মহামারি মোকাবেলার জন্য ঘরে থাকা ছাড়া আমাদের হাতে আর কোন অস্ত্র নেই।

সবাই ভালো থাকুন, সবাই ঘরে থাকুন।

  • ডা. মো. তারেক আজাদ: অধ্যাপক, জালালাবাদ রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত