সিলেটটুডে ডেস্ক

০২ জুন, ২০১৬ ১৭:৪৫

৬ জিবিপিএস গতিসম্পন্ন তারহীন নেটওয়ার্ক!

এলইডি বাতি নির্ভর লাই-ফাই প্রযুক্তির ইন্টারনেটের পরীক্ষামূলক সাফল্যে যাঁরা আনন্দিত হয়েছিলেন, তাঁদের জন্য এবার এলো আরও খুশির খবর।

পরীক্ষাগার কিংবা কল্পনায় নয়, সম্প্রতি জার্মানির একদল প্রকৌশলী বাস্তবে অতি দ্রুতগতির তারহীন ইন্টারনেট প্রযুক্তিতে সাফল্য অর্জন করেছেন। তারা তথ্য আদান-প্রদান করতে পেরেছেন ৩৭ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে প্রতি সেকেন্ডে ৬ গিগাবিট (জিবিপিএস) গতিতে।

সহজ ভাষায়, মাত্র ১০ সেকেন্ড সময় লাগবে এই গতিতে একটি গোটা ডিভিডির তথ্য ইন্টারনেট থেকে নামাতে। এমনকি জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ‘গেম অব থ্রোনস’-এর ছয়টি উচ্চমানের এপিসোড নেমে যাবে চোখের পলকেই।

তবে আগেও তারহীন প্রযুক্তিতে এর চেয়ে বেশি গতি দেখা গেছে। গত বছরই ১ টেরাবাইট গতিতে তথ্য সম্প্রচার করা হয়েছিল এক গবেষণাগারে। তবে সে ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হতো ‘লাই-ফাই’ প্রযুক্তি। কিন্তু নতুন এই জার্মান প্রযুক্তিতে ৭১ থেকে ৭৬ গিগাহার্টজ মানের এক বেতার সংকেত পাঠিয়েই এমন গতি পাওয়া গেছে।

জার্মানির কোলোন শহরের ৪৫ তলাবিশিষ্ট একটি টাওয়ার থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দূরের ওয়াচবার্গ পৌর এলাকায় এই বেতার সংকেত পাঠানো হয়। ব্যবহার করা হয় মিলিমিটার ওয়েভ নামের তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ। বিশ্বব্যাপী গবেষকদের সমন্বয়ে অ্যাডভান্সড ই ব্যান্ড স্যাটেলাইট লিংক স্টাডিজ (এসিসিইএসএস) নামের একটি দল এই গবেষণা চালায়। তরঙ্গের পাল্লায় এটি মাইক্রোওয়েভ এবং ইনফ্রারেড ওয়েভের মাঝামাঝি অবস্থিত। নতুন এই প্রযুক্তিতে ব্যবহার করা হয়েছে একটি ট্রান্সমিটার (প্রেরণযন্ত্র), যা গ্যালিয়াম নাইট্রাইড অ্যাপ্লিফায়ার ব্যবহার করে সংকেতকে ১ ওয়াট পর্যন্ত বিবর্ধিত (অ্যাপ্লিফাই) করতে সাহায্য করে। কিন্তু বেশি দূরত্ব পাড়ি দিতে গিয়ে এই সংকেত যাতে শক্তি হারিয়ে না ফেলে, তার জন্য গবেষকেরা তৈরি করেছেন এমন কিছু অ্যাপ্লিফায়ার, যা কম শক্তির সংকেতগুলোকেও তুলে আনে।

গবেষকদের ইচ্ছা আছে এই সুবিধা প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেওয়ার, যেখানে ইন্টারনেট এখনো পৌঁছায়নি। তবে তাঁরা তাঁদের এই সাফল্যের কথা এখনো পর্যন্ত কোনো গবেষণাপত্রে প্রকাশ করেননি। তাই আপাতত তাঁদের ঘোষণাটিকেই বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। তবে প্রকৌশলীদের এই মানের গতি প্রাপ্তির দাবি যদি সত্যতা পায়, তবে এই গতি আগের সর্বাধিক গতির বিশ্বরেকর্ড ভেঙে ফেলবে এবং নতুন এই গতি হবে আগের গতির ১০ গুণ। সত্যিই দারুণ হবে ব্যাপারটা।
সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

আপনার মন্তব্য

আলোচিত