শাকিলা ববি, হবিগঞ্জ

২১ জানুয়ারি, ২০১৭ ১৫:১৪

অগ্রিম অগ্নি সুরক্ষা যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন হবিগঞ্জের শিক্ষার্থীরা

ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা-২০১৭ তে নিজেদের উদ্ভাবন করা অগ্রিম অগ্নি সুরক্ষা যন্ত্র প্রদর্শন করেছেন হবিগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিক্স টেকনলজি বিভাগের ছাত্ররা।

এই যন্ত্রটি উদ্ভাবন করে ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার 'Solve-A-Thon' প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অর্জন করেছে হবিগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের এই উদ্ভাবক দল।

মেলার ১ম দিনে 'Multistage line monitoring, detection & advance fire protection' নামক একটি প্রজেক্ট প্রদর্শন করেন হবিগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইলেকট্রনিক্স টেকনলজি বিভাগের ২০১৪-২০১৫ বর্ষের ৩ ছাত্র। এই যন্ত্রটি অগ্নিকান্ডের পূর্বেই সমস্যা সনাক্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে অগ্নিকান্ড থেকে বিরত কিভাবে রাখবে, তা মেলাতে প্রর্দশন করা হয়েছে।

প্রর্দশনীতে দেখানো হয়, এই প্রজেক্টেটি যেকোন ধরনের আগুন থেকে জানমালের সম্পূর্ন নিরাপত্তা প্রদান করবে। কোন বৈদ্যুতিক লাইনে, কোন জায়গায়/রুমে সমস্যা হচ্ছে, সেটা ওই যন্ত্রের ডিসপ্লেতে দেখাবে এবং তাপমাত্রা নির্দিষ্ট লেভেল ক্রস কারর পর এলার্ম বাজবে এবং অটোমেটিক লাইন কাট অফ করে আগুন ধরা থেকে বিরত রাখবে।

বাস্তব ব্যবহারের উপযোগীতা সর্ম্পকে জানতে চাইলে বলা হয়, সহজে শিল্প কারখানা, শপিং মল, সাধারন বাসা-বাড়ি, বহুতল ভবনে এখনই ব্যবহার করা সম্ভব এই যন্ত্র। ৫ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে এই যন্ত্রটি তৈরী করা যাবে এবং এটি এখনই বাজারজাত করা সম্ভব। তবে শিল্প কারখানা বা বড় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এই যন্ত্র তৈরি করতে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে।

এই প্রজেক্ট সর্ম্পকে দলনেতা আশরাফুল আলম বলেন, অগ্নিকান্ড আমাদের দেশের একটি নিয়মিত সমস্যা। বিশেষ করে শিল্প কারখানা, বড় বড় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়তই অগ্নিকান্ড ঘটে। যার ফলে বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয় ব্যবসায়ীদের। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান আগুন নেভানোর জন্য প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে বিদেশি প্রকল্প ব্যবহার করে থাকেন। আমাদের এই প্রকল্পটি মিল ফ্যাক্টরী, গার্মেন্টসগুলোর যে ইলেকক্টিক লাইন থেকে অগ্নিপাত সৃষ্টি হয়, সেই সব লাইন কয়েকটি ধাপে মনিটরিং করবে।

তিনি বলেন, আমাদের উদ্ভাবিত এই যন্ত্রটি প্রতি ঘন্টায় কতবার স্পার্কিং হচ্ছে তা এলসিডি ডিসপ্লেতে প্রদর্শন করবে। কানেকশন লুজ কন্টাক্ট আছে কিনা, তারের রেজিষ্টেন্স নষ্ট হয়ে গেছে কিনা, ওয়্যারের টেম্পারেচার কত, সেটা এলসিডি  ডিসপ্লেতে দেখাবে এবং নির্দিষ্ট লেভেল ক্রস কারর পর এলার্ম এবং লাইন কাট অফ করে দেয়, কোন লাইনে সমস্যা হচ্ছে সেটা নির্ধারন করে দিবে। এমনকি বৈদ্যুতিক লাইন ছাড়া অন্যান্য অগ্নিকান্ডের ক্ষেত্রেও এলার্ম প্রদান করবে এবং ডিসপ্লেতে দেখাবে ও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

দলনেতা আরো জানান, এই প্রকল্পটি একটি এডভান্স লেভেলের প্রকল্প। এ ধরনের কোনো প্রোডাক্ট এখন বাজারে নেই। সকল দিক বিবেচনা করে তাদের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করা অতি জরুরি। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকারিভাবে পৃষ্টপোষকতা আশা করছেন তারা।

অগ্রিম অগ্নি সুরক্ষা যন্ত্রটি তৈরি করেন হবিগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউডের ইলেকট্রনিক্স টেকনলজি বিভাগের ৬ষ্ঠ সেমিস্টার ১ম শিফটের ছাত্র মোঃ আশরাফুল আলম (দলনেতা), অপূর্ব কুমার দাস ও মোঃ মিরাজুল ইসলাম। যন্ত্রটি তৈরি করতে সহযোগিতা করেছেন ইলেকট্রনিক্স টেক বিভাগের গেস্ট টিচার মোঃ নাজমুল হাসান।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত