১৮ মে, ২০২০ ১৫:০৬
করোনার সংক্রমণ রোধে ভারতে আজ সোমবার থেকে চতুর্থ দফার লকডাউন শুরু হয়েছে। ৩১ মে পর্যন্ত চলবে । এ দফার লকডাউনে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে ছাড় মেলেনি। তবে চতুর্থ দফার লকডাউনে সবচেয়ে বড় ঘোষণা হলো, দেশজুড়ে সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কার্যকর হচ্ছে কারফিউ।
কারফিউর ফলে সন্ধ্যা ৭টার পর কেউ বাড়ি থেকে বের হতে পারবে না। সন্ধ্যায় বন্ধ হয়ে যাবে পরিবহন–ব্যবস্থা থেকে শুরু করে সব দোকানপাট।
গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিপরিষদ সচিব রাজীব গৌবা বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্য সচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আয়োজিত এক বৈঠকের পর কারফিউর কথা জানিয়ে দেন।
পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যে পরিবহন ব্যবস্থা চালু করার কথাও বলা হয়। একই সঙ্গে আন্তঃজেলা ও আন্তঃরাজ্য দূরপাল্লার বাস পরিসেবা চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে বলা হয়, এসব ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে নিজ নিজ রাজ্য।
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া করোনা–সংক্রমিত এলাকাকে লাল, কমলা ও সবুজ জোনে ভাগ করা; অতিসংক্রমিত এলাকার কোনটিকে কনটেনমেন্ট জোন হিসাবে ঘোষণা করা হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রতিটি রাজ্যকে।
৬৫ বছরের বেশি বয়সের প্রবীণ ব্যক্তি, গর্ভবতী নারী ও ১০ বছরের নিচের শিশুদের চতুর্থ দফার লকডাউনের মধ্যে বাড়ি থেকে একদম বের না হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন প্রয়োজনে ১৪৪ ধারাও জারি করতে পারবে। এই লকডাউনকালে বিবাহ অনুষ্ঠানে মাত্র ৫০ জন যোগ দিতে পারবে। অন্ত্যেস্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে পারবে ২০ জন। তবে এসব হতে হবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে। মূলত করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ বেগবান করতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই নির্দেশ দিয়েছে।
ভারতে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু থামছে না। এরই মধ্যে আজ থেকে শুরু হলো চতুর্থ দফার লকডাউন।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনায় মারা গেছে ১২০ জন। সংক্রমিত ৪ হাজার ৯৮৭ জন। ভারতে গতকাল পর্যন্ত সংক্রমিত ব্যক্তির সংখ্যা ৯০ হাজার ৯২৭ জন আর মৃত্যু ২ হাজার ৮৭২ জন।
পশ্চিমবঙ্গের করোনা পরিস্থিতিও সুবিধার নয়। রাজ্যে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ৬ জন। সংক্রমিত হয়েছে ১০১ জন। সব মিলিয়ে পশ্চিমবঙ্গে করোনায় মারা গেছে ১৬৬ জন। সংক্রমিত ২ হাজার ৬৭৭ জন । এ ছাড়া অন্যান্য রোগের সঙ্গে করোনায় সংক্রমিত হয়ে আরও মারা গেছেন ৭২ জন।
ভারতে চতুর্থ দফার লকডাউনে বন্ধ থাকবে ট্রেন ও মেট্টো চলাচল। বন্ধ থাকবে বিমান চলাচল। তবে বিভিন্ন রাজ্যে আটকে থাকা শ্রমিক, পর্যটক, রোগী, তীর্থযাত্রীদের নিয়ে আসার জন্য শ্রমিক ট্রেন ও বিশেষ ট্রেন চলবে।
চতুর্থ দফার লকডাউনে বন্ধ থাকবে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, হোটেল, রেঁস্তোরাঁ, শপিং মল, সিনেমা, থিয়েটার, প্রেক্ষাগৃহ, পানশালা, বিনোদন পার্ক, স্টেডিয়াম, সুইমিং পুল ইত্যাদি।
বন্ধ থাকবে ধর্মীয় স্থান, ধর্মীয় সভা ও ধর্মীয় জমায়েত। তবে নতুন করে এই লকডাউনে খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কনটেনমেন্ট জোনের বাইরের সেলুন ও পার্লার।
আপনার মন্তব্য