আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৫:২১

পুরুষের পাশাপাশি আফগান নারীদের কাজ করা উচিত নয়: তালেবান

তালেবান নেতারা এখন সুর পাল্টে ফেলেছেন। নারীদের বিষয়ে তাদের পুরনো নিয়মই আবার আফগানিস্তানের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

কট্টর এ ইসলামিক গোষ্ঠীর জ্যেষ্ঠ নেতা ওয়াহেদউদ্দিন হাশিমি বলেন, আফগান নারীদের পুরুষের পাশাপাশি কাজ করার অনুমতি দেওয়া ‘উচিত হবে না’।  খবর রয়টার্সের।

আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ম চালু করা হলে সরকারি অফিস, ব্যাংক কিংবা মিডিয়া কোম্পানিসহ অনেক ক্ষেত্রেই আফগান নারীদের কাজের সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।

ওয়াহেদউদ্দিন হাশিমি গণমাধ্যমকে বলেছেন, তারা আফগানিস্তানে ‘শরিয়া আইন’ পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে চান।

যদিও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলে আসছে, আফগান নারীরা যদি চায়, চাকরি করার অধিকার তাদের আছে এবং সেই অধিকার তাদের দিতে হবে।

১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত তালেবান শাসনামলে পুরুষের লিখিত অনুমতি ছাড়া নারীদের ঘরের বাইরে যাওয়া ছিল নিষিদ্ধ। অনুমতি থাকলেও তাদের বের হতে হতো সর্বাঙ্গ ঢাকা বোরকা পরে। বয়োপ্রাপ্ত হলেই মেয়েদের স্কুলে যাওয়া ছিল নিষিদ্ধ, নারীদের চাকরি করারও সুযোগ ছিল না।

তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকেই তাদের অধীনে নারীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয় উদ্বেগ, আতঙ্ক।

দেশটির নারী রাজনীতিবিদদের অনেকে দেশ ছেড়েছেন। নারী ক্রীড়াবিদ, অভিনয় শিল্পী, সাংবাদিক, অধিকারকর্মীদের অনেকেই আছেন আত্মগোপনে।

এমনকি আগের সরকারের সময় বিচারকের ভূমিকায় থাকা নারীদেরও এখন পালিয়ে থাকার খবর আসছে। কারণ যাদের তারা শাস্তি দিয়েছিলেন, তারা এখন সেই বিচারকদের খুঁজছে।

দুই দশক পর আবারও আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তালেবান বলেছে— তাদের শাসনে নারীরা অধিকার পাবে ‘শরিয়া আইন অনুযায়ী’। নারীরা কীভাবে শিক্ষাগ্রহণ করতে পারবে, সে বিষয়ে সম্প্রতি নতুন নিয়ম জারি করেছে তারা।

তালেবানের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী আবদুল বাকি হাক্কানি বলেন, নারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবেন, তবে পুরুষদের থেকে আলাদা হয়ে তাদের ক্লাস করতে হবে।

নারীদের জন্য একটি নতুন ইসলামিক পোশাকও চালু করা হবে। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব বিষয় পড়ানো হচ্ছে, সেগুলো পর্যালোচনা করা হবে।

ওয়াহেদউদ্দিন হাশিমি বলেন, আফগানিস্তানে শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠায় প্রায় ৪০ বছর ধরে আমরা লড়াই করে চলেছি। আর পরিবারের বাইরে নারী-পুরুষ একসঙ্গে থাকা, এক ছাদের নিচে বসা, এসব তো শরিয়তে নেই।

নারী আর পুরুষ একসঙ্গে কাজ করতে পারে না, এটি স্পষ্ট। তারা আমাদের অফিসগুলোতে আসতে পারবেন না, আমাদের মন্ত্রণালয়গুলোতে কাজ করতে পারবে না।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত