আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০ মে, ২০২২ ১৩:১৪

প্রথমবা্রের মতো ঋণ খেলাপির খাতায় শ্রীলঙ্কার নাম

শ্রীলঙ্কা প্রথমবারের মতো ঋণ খেলাপি দেশে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশটি তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ আর্থিক সংকটের সাথে লড়াই করছে। এমন সময়ে বুধবার দেশটি ৭৮ মিলিয়ন ডলারের অপরিশোধিত ঋণের সুদ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এরপর ৩০ দিনের সময় বাড়ানোর পরেও তারা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয় এবং ঋণ খেলাপি দেশ হিসেবে নিজেদের নাম তালিকাভুক্ত করে।

শ্রীলঙ্কার ৭০ বছরের স্বাধীনতার ইতিহাসে এমন অর্থনৈতিক সঙ্কট দেখা যায়নি। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি থাকার কারণে সেখানে ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে। দেশটিতে ওষুধ, জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব দেখা দিয়েছে। এবার দেশটি ঋণ খেলাপি দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এ বিষয়ে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেছেন যে দেশটি এখন একটি ‘প্রি-এমটিভ ডিফল্ট’-এর মতো ঋণ খেলাপির মধ্যে রয়েছে। এক্ষেত্রে কোনো দেশ হঠাৎ নৈরাজ্য বা অন্য কোনো ঘটনার কারণে ঋণ খেলাপি হয়ে যায়।

‘ঋণ খেলাপি’ তখনই সংঘটিত হয় যখন সরকার তাদের ঋণের কিছু অংশ বা সমস্ত ঋণ পরিশোধ করতে অক্ষম হয়। এর মাধ্যমে একটি দেশের সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে তার প্রয়োজনীয় অর্থ ধার করা কঠিন হয়ে যায়। এর মাধ্যমে দেশটির মুদ্রা ও অর্থনীতিতে আস্থার ক্ষতি হয়।

শ্রীলঙ্কা এখন ঋণ খেলাপি দেশে পরিণত হয়েছে কিনা? এমন প্রশ্নের উত্তরে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর পি নন্দলাল বীরাসিংঘে বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম যে আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিষয়টি পুনর্গঠন না হওয়া পর্যন্ত আমরা টাকা দিতে পারব না। তাই এটাকেই আপনি ‘প্রি-এমপ্টিভ ডিফল্ট’ বলতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে কৌশলগত সংজ্ঞা থাকতে পারে... তাদের দিক থেকে তারা এটাকে ঋণ খেলাপি হিসেবে বিবেচনা করা যায়। আমাদের (শ্রীলঙ্কার) অবস্থান খুবই পরিষ্কার, যতক্ষণ না ঋণ পুনর্গঠন হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা শোধ করতে পারব না।’

বর্তমানে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি করোনা মহামারি, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ও নমনীয় ট্যাক্স নীতির কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এখানে বৈদেশিক মুদ্রার দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতি রয়েছে। দেশটিতে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এমন সংকটের মধ্যেই মাহিন্দা রাজাপাকসে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। এরপর ৯ মে রাতে রাজাপাকসের সমর্থক ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সংঘাত বাঁধে। এরপর থেকে দেশটিতে একটি ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে। এখন রনিল বিক্রমাসিংহে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন। কিন্তু তিনি বলেছেন, ‘শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সমস্যা আগের চেয়েও প্রকট হবে।’ এখন তিনি ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে আর্থিক সাহায্যের জন্য আবেদন করেছেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত