১২ জুলাই, ২০২২ ১২:১২
অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যেই জানা যাচ্ছে, বুধবার দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। এদিকে প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি পদত্যাগের ইচ্ছা পোষণ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।
স্পিকার ইয়াপা আবেবর্ধনে আসছে ২০ জুলাই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার তারিখ ঘোষণা করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিবিসিকে শ্রীলঙ্কার প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা সজিথ প্রেমাদাসা জানিয়েছেন, গোতাবায়া পদত্যাগ করলে তিনি প্রেসিডেন্ট পদের জন্য লড়তে চান।
তার এই পদক্ষেপের বিষয়ে সমর্থন পেতে তার দল সামাজি জনা বালাওয়েগয়া (এসজেবি) পার্টির মিত্রদের সঙ্গে এরই মধ্যে আলোচনা করেছেন।
প্রেমাদাসা জানিয়েছেন, তার দল এবং মিত্ররা এই বিষয়ে সম্মত হয়েছে যে প্রেসিডেন্ট পদ খালি হলে আমার সে পদের জন্য লড়াই করা উচিত।
যদিও তার প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হতে হলে বর্তমান শাসক দলের এমপিদেরও সমর্থন লাগবে।
তিনি ২০১৯ সালে গোতাবায়ার সঙ্গে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং পরাজিত হন।
সজিথ প্রেমাদাসা এর আগেও বলেছিলেন, তিনি একটি সর্বদলীয় সরকারের অংশ হতেও প্রস্তুত।
যদিও কলম্বোতে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দেশটির পার্লামেন্টের ২২৫ এমপির সবাই দায়ী। তারা নতুন ও উদ্যমীদের রাজনীতি চান।
গত শনিবার সাম্প্রতিক সময়ের সরকারবিরোধী সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভের একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশি ব্যারিকেড ভেঙে প্রেসিডেন্ট বাসভবনের ভেতরে ঢুকে পড়েন।
সংবাদমাধ্যমের ছবিতে দেখা গেছে, শ্রীলঙ্কার পতাকা হাতে বাসভবনের ভেতরে ঢুকে গেছেন বহু বিক্ষোভকারী। এ ছাড়া বাসভবনের সামনের অংশে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী দাঁড়িয়ে আছেন। পরে জানা যায়, পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।
কয়েক মাস ধরেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে চরম মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে, মুদ্রাস্ফীতিও আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ।
এ অবস্থায় ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। একপর্যায়ে রাজাপাকসে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়।
বিক্ষোভ দমাতে এপ্রিলের শুরুতে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। কিন্তু প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপ বিক্ষোভ দমাতে ব্যর্থ হয়। উল্টো মাত্রা আরও তীব্র হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় মে মাসে পদত্যাগ করেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
এই পর্যায়ে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। নিহত হন এক এমপি। অনেক সাবেক মন্ত্রী-এমপির বাড়ি ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়িও জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
আপনার মন্তব্য