আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৪ জুলাই, ২০২২ ১১:৫১

শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভে এক তরুণের মৃত্যু

শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া টিয়ার শেলে আহত এক বিক্ষোভকারী তরুণ নিহত হয়েছেন।

শ্রীলঙ্কাভিত্তিক ডেইলি মিররের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিয়ার শেলে আহত ২৬ বছর বয়সী ওই বিক্ষোভকারী শ্বাসকষ্টে মারা গেছেন। তিনি কলম্বোর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭৫ জন আহত হয়েছে।

সন্ধ্যায় পার্লামেন্ট গোলচত্বরের কাছে পোলডুয়া জংশনে বিক্ষোভকারী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের পর ৩৩ জনকে কলম্বো ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

সংঘর্ষের সময় একজন পুলিশ কর্মকর্তাও গুরুতর আহত হয়েছেন।

এদিকে ফ্লাওয়ার রোডে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কাছে সংঘর্ষে আহত ৪২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এর আগে বিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কার পদত্যাগী প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে শনিবার কলম্বোয় তার সরকারি বাসভবন থেকে পালান।

বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেন তিনি। তবে তার আগেই মঙ্গলবার রাতে তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। গোতাবায়া মালদ্বীপে আশ্রয় নিয়েছেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।

এর আগে মঙ্গলবার সকালে গোতাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালাতে বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন। কিন্তু দেশটির ইমিগ্রেশন অফিসারদের বাধায় তিনি যেতে পারেননি। আকাশপথে ব্যর্থ হয়ে তিনি নৌবাহিনীর জাহাজে শ্রীলঙ্কা ছাড়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

এদিকে শ্রীলঙ্কায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে দেশটির সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে।

এর আগে দেশটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। এ ছাড়া দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশজুড়ে অনির্দিষ্টকালের কারফিউ জারি করা হয়েছে। রাজধানী কলম্বোতেও কারফিউ বলবৎ থাকবে।

কয়েক মাস ধরেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে চরম মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে, মুদ্রাস্ফীতিও আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন মানুষ।

এ অবস্থায় ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। একপর্যায়ে রাজাপাকসে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়।

বিক্ষোভ দমাতে এপ্রিলের শুরুতে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে। কিন্তু প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপ বিক্ষোভ দমাতে ব্যর্থ হয়। উল্টো মাত্রা আরও তীব্র হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় মে মাসে পদত্যাগ করেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন রনিল বিক্রমাসিংহে।

এই পর্যায়ে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। নিহত হন এক এমপি। অনেক সাবেক মন্ত্রী-এমপির বাড়ি ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়িও জ্বালিয়ে দেয়া হয়।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত