২০ জুলাই, ২০২২ ১৪:০৬
শ্রীলঙ্কায় নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রনিল বিক্রমাসিংহে। তিনি দেশটির প্রধানমন্ত্রী ও পরে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন।
দেশটির পার্লামেন্টে প্রথমবারের মতো ভোটাভুটিতে অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।
বুধবার দেশটির ২২৫ আসনের পার্লামেন্টে আয়োজিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেন ২২৩ এমপি। এর মধ্যে চারটি ভোট বাতিল ঘোষণা করা হয়।
রনিল বিক্রমাসিংহে পেয়েছেন ১৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক সাংবাদিক ও এমপি দুল্লাস আলাহাপ্পেরুমা পেয়েছেন ৮২ ভোট।
তৃতীয় অবস্থানে থাকা বামপন্থি নেতা অনুরা কুমারা দিসানায়াকা পেয়েছেন শুধু তিন ভোট।
পার্লামেন্টে নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করার প্রক্রিয়া হিসেবে এই তিন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী গতকাল মঙ্গলবার সফল ও চূড়ান্তভাবে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
বুধবার সকাল ১০টায় পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবিবর্ধনের উপস্থিতিতে শুরু হয় অধিবেশন। ফল ঘোষণা করা হয় দুপুর পৌণে ১টার দিকে।
তীব্র বিক্ষোভের মুখে গেল সপ্তাহে দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে মালদ্বীপ হয়ে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যান। এর আগে তিনি পদত্যাগপত্রে সইও করেন। এর পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। এর পর থেকে প্রেসিডেন্ট পদটি শূন্য হয়ে পড়ে।
এদিকে বিক্ষোভকারীরা রনিলকে মেনে নেননি। তারা গোতাবায়াসহ রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের দাবিতে অনড় রয়েছে।
এর আগে, সরকারবিরোধী টানা বিক্ষোভের মধ্যে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান গোতাবায়া রাজাপাকসে। পরে সিঙ্গাপুর থেকে পদত্যাগপত্র পাঠান তিনি। এর আগেই ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ পাওয়া রনিল বিক্রমাসিংহে শপথ নেন গত শুক্রবার।
শপথ নেয়ার পরপরই সর্বদলীয় সরকার গঠনে কাজ করতে আইনপ্রণেতাদের নির্দেশ দেন রনিল।
কয়েক মাস ধরেই শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে চরম মন্দা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে, মুদ্রাস্ফীতিও আকাশছোঁয়া। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী কিনতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন মানুষ।
এ অবস্থায় ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে দেশটির সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়।
বিক্ষোভ দমাতে এপ্রিলের শুরুতে রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা জারি করেন মাহিন্দার ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। কিন্তু প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপ বিক্ষোভ দমাতে ব্যর্থ হয়। উল্টো মাত্রা আরও তীব্র হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় মে মাসে পদত্যাগ করেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
এই পর্যায়ে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। নিহত হন এক এমপি। অনেক সাবেক মন্ত্রী-এমপির বাড়ি ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী রাজাপাকসের পৈতৃক বাড়িও জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
আপনার মন্তব্য