আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৪ আগস্ট, ২০২২ ১২:৫৪

পেলোসির সফরের পর তাইওয়ানে সাইবার হামলা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সফরের পরদিন হ্যাকাররা তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সাইবার হামলা চালিয়েছে আর দ্বীপটির প্রত্যন্ত অঞ্চলের ওপর দিয়ে কয়েকটি ড্রোন উড়ে গেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) রাজধানী তাইপে থেকে কর্তৃপক্ষ এসব কথা জানিয়েছে। পেলোসির সফর চীনকে অত্যন্ত ক্ষিপ্ত করে তোলায় এসব ঘটছে বলে মনে করা হচ্ছে।

পেলোসির সফরের জবাবে চীন বৃহস্পতিবার থেকে তাইওয়ানের আশপাশে ধারাবাহিক সামরিক মহড়া শুরু করতে যাচ্ছে। এসব মহড়ার কয়েকটি দ্বীপের ১২ নটিক্যাল মাইল সমুদ্র ও আকাশ সীমার মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে তাইপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে এমন কিছু কখনোই ঘটেনি বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সম্ভাব্য এ পদক্ষেপকে ‘সামগ্রিকভাবে তাইওয়ানের সমুদ্র ও আকাশ অবরোধ’ বলে বর্ণনা করেছেন তাইপের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা।

তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবিকারী চীন বৃহস্পতিবার বলেছে, স্বশাসিত দ্বীপটির সঙ্গে তাদের পার্থক্য একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়।

চীনের তাইওয়ান বিষয়ক দপ্তর বলেছে, তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী, বহিরাগত শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের শাস্তি যোক্তিক ও আইনসম্মত।

চীনের বার্তা সংস্থা শিনহুয়া বলেছে, বেইজিংয়ের স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা থেকে তাইওয়ানকে বৃত্তাকারে ঘিরে ছয়টি এলাকায় মহড়াগুলো শুরু হবে এবং এতে তাজা গুলিগোলা ব্যবহার করা হবে।

বুধবার রাতে পেলোসি দক্ষিণ কোরিয়ার পথে রওনা হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কিনমেন দ্বীপপুঞ্জের আকাশে অজ্ঞাত আকাশযান শনাক্ত হয়, সেগুলো ড্রোন হতে পারে বলে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

তাইওয়ান সেনাবাহিনীর কিনমেন প্রতিরক্ষা কমান্ডের মেজর জেনারেল চ্যাং জোন-সুং রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বুধবার রাত ৯টা ও ১০টার দিকে একজোড়া ড্রোন দুইবার কিনমেন এলাকার ওপর দিয়ে উড়ে যায়।

“সতর্ক করার জন্য ও সেগুলোকে তাড়িয়ে দিতে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ফ্লেয়ার ছুড়ি। এরপর সেগুলো ঘুরে যায়। তারা আমাদের সংরক্ষিত এলাকায় চলে এসেছিল,” বলেন তিনি।

অত্যন্ত সুরক্ষিত কিনমেন দ্বীপপুঞ্জ চীনের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় উপকূলের একেবারে প্রান্তে এবং দেশটির শামান শহরের কাছে।

তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, বুধবার রাতে তাদের ওয়েবসাইটে সাইবার হামলা হয়েছে এবং সেটি কিছু সময়ের জন্য অফলাইনে ছিল। চীনের সঙ্গে উত্তেজনা মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা উন্নত করতে তারা কাজ করছে বলেও জানিয়েছে।

পেলোসি ২৫ বছরের মধ্যে তাইওয়ানে যাওয়া শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা ও রাজনীতিক। সফরকালে তিনি তাইওয়ানের গণতন্ত্রের প্রশংসা করেন এবং দ্বীপটির প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সংহতির প্রতিশ্রুতি দেন। চীনের ক্ষোভ বিশ্ব নেতাদের তাইওয়ান সফর থামাতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এর জবাবে চীন বেইজিংয়ে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ও তাইওয়ান থেকে বিভিন্ন কৃষিপণ্যের আমদানি স্থগিত করে।

বেইজিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের আশপাশের এলাকায় বৃহস্পতিবারও কড়া নিরাপত্তা বিদ্যমান ছিল এবং আরও কিছুদিন ধরে এমনই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পেলোসির সফরের বিরুদ্ধে চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও দেশটিতে মার্কিন পণ্য বর্জনের ডাক বা কোনো উল্লেখযোগ্য বিক্ষোভ দেখা যায়নি।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত