ডেস্ক রিপোর্ট

০৭ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ ২২:২১

বিজেপির জনসমর্থনে ধাক্কা: বুথ ফেরত জরিপে এগিয়ে কেজরিওয়াল

বুথ ফেরত এসব জরিপ অনেক সময় মূল নির্বাচনের ফল বিষয়ে ভবিষ্যৎবাণী করে। আবার অনেক সময় নির্বাচনের ফলাফলে এসব জরিপের উল্টো ফলও হয়।

ভারতের রাজধানী দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনের সবক'টি বুথ ফেরত জরিপেই আম আদমি পার্টি (এএপি) এগিয়ে আছে বলে উঠে এসেছে। তবে এককেকটি জরিপে একে ধরনের ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। সাতটি জরিপের ফলাফল একত্রিত করে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিধানসভার ৭০ আসনের মধ্যে এএপি ৪২টি আসনে জয়ী হতে পারে। সূত্র: এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হবে আগামী মঙ্গলবার।

এদিকে বুথ ফেরত এসব জরিপের ফল জেনেই দিল্লির ভোটারদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন এএপির মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এক টুইটার বর্তায় তিনি বলেন, 'আমাকে সমর্থন করার জন্য দিল্লিবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা খুবই অসাধারণ। আপনারা জাত-পাত ও ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। আশা করি নির্বাচনের ফল বুথ ফেরত জরিপের ফলের মতোই হবে।'

নির্বাচনেরআগে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতেও মূলত প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির কিরণ বেদী ও এএপির অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দেওয়া হয়। দুজনই ভারতের সাবেক সরকারি কর্মকর্তা আন্না হাজারের দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। দু'জনই র‌্যামন ম্যাগসেসাই পুরস্কারপ্রাপ্ত।

১৬ বছর ধরে দিল্লির ক্ষমতার বাইরে থাকা বিজেপি লড়াইয়ে টিকে থাকতে কিরণ বেদিকে মনোনয়ন দেয়। প্রচারণার সময় কিরণ ও কেজরিওয়াল উভয়েই সুশাসন, দুর্নীতিমুক্ত ও নারীদের জন্য নিরাপদ দিল্লি গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন।এর আগে স্থানীয় সময় শনিবার সকাল ৮টায় শুরু হয় ভোটগ্রহণ, চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। নির্বাচনে ৬৩.৪৬ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানায় দেশটির নির্বাচন কমিশন। ভোট দেওয়ার হার কমিশনের প্রত্যাশার চেয়ে কিছুটা কম।

শনিবার সকাল থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি চোখে পড়ে। শীতের কারণে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ ভোট পড়লেও বিকেলের দিকে বেশি ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এক কোটি ৩৩ লাখ ভোটারের এ নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে দিল্লিজুড়ে ৫৫ হাজারেরও বেশি পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যসহ ৬৪ হাজার নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়। ১২ হাজার ৮৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৭১৪টিকে স্পর্শকাতর ও ১৯১টিকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিবেচনায় পৃথক ব্যবস্থা নেয় নির্বাচন কমিশন। ৭০ আসনের বিধানসভায় এবার ৬৩ জন নারীসহ ৬৭৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী পদে এএপির অরবিন্দ কেজরিওয়াল ছাড়াও ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) কিরণ বেদী, কংগ্রেসের অজয় মাকেন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি প্রার্থী হয়েছেন একটি আসনে।

দিল্লির নির্বাচন নিয়ে নানা জরিপে এএপি এগিয়ে ছিল। নির্বাচনের আগে ৬টি জরিপের ফল একত্র করে এনডিটিভির করা এক জরিপের ফলে জানানো হয়, এএপি ৩৬টি আসন পেতে পারে। বিজেপি ও তাদের সহযোগী আকালি দল পেতে পারে ৩০টি আসন। তবে ২০১৩ সালের আগে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে দিল্লিতে ক্ষমতায় থাকা কংগ্রেস মাত্র ৪টি আসন পেতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এর আগে ২০১৩ সালে ডিসেম্বরে দিল্লিতে সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচন হয়।

এ নিবার্চনে বিজেপি সর্বাধিক আসন পেলেও প্রয়োজনীয আসনের চেয়ে কম পাওয়ায় সরকার গঠন করতে পারেনি। ফলে ওই নির্বাচনে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আম আদমি পার্টি কংগ্রেসকে সাথে নিয়ে সরকার গঠন করে। আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হলেও বিরোধী দলের বিরোধীতায় দুর্নীতিবিরোধী একটি বিল পাস করতে ব্যর্থ হয়ে শপথ নেওয়ার মাত্র ৪৯ দিন পর তিনি পদত্যাগ করেন। 

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত