আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৬ অক্টোবর, ২০২২ ১২:১৮

ইরানের কারাগারে ভয়াবহ আগুন, গোলাগুলির শব্দ

চলমান বিক্ষোভ-আন্দোলনের মধ্যেই গতকাল রাতে ইরানের এভিন কারাগারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কারাগারের ভেতর থেকে গোলাগুলি ও সাইরেনের শব্দ শোনা গেছে। তবে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।

একজন সরকারি কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, আগুন এখনো জ্বলছে।

গত ১৬ সেপ্টেম্বর ইরানের পুলিশ হেফাজতে ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাশা আমিনির মৃত্যুর পর দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভ এখনো চলছে। বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত দেড় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। শত শত বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে ইরানি পুলিশ।

বিবিসির ইরানি সাংবাদিক রানা রহিমপুর জানিয়েছেন, শত শত বিক্ষোভকারীকে আটক করে এভিন কারাগারে পাঠিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে এই অগ্নিকাণ্ডের সঙ্গে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের কোনো সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না, তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক বন্দী, সাংবাদিক ও বিদেশি নাগরিকদের বন্দী করে রাখার জন্য এভিন ‘কুখ্যাত কারাগার’ হিসেবে পরিচিত।

ইরানের সরকারবিরোধী একটি পর্যবেক্ষক গ্রুপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কারাগারের ভেতর থেকে ‘স্বৈরশাসক নিপাত যাক’ এবং অন্যান্য সরকারবিরোধী স্লোগান ভেসে আসছে।

অন্য এক ভিডিওতে দেখা গেছে, বাইরে থেকে কারাগারের প্রাচীর লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হচ্ছে। এরপর একটি বিস্ফোরণের শব্দও শোনা গেছে।

সরকারনিয়ন্ত্রিত ইরানের গণমাধ্যমগুলো বলেছে, বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত বন্দীদের মধ্যে দাঙ্গা শুরু হয়েছিল। এতে কোনো রাজনৈতিক বন্দী জড়িত ছিলেন না। এই দাঙ্গায় অন্তত আটজন আহত হয়েছেন।

তেহরানের গভর্নর রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে বলেছেন, লঘু অপরাধীদের আবাসন কারাগারের একটি শাখায় দাঙ্গা বেধেছিল। তবে পরিস্থিতি এখন সম্পূর্ণ শান্ত রয়েছে।

এদিকে বিবিসি বলছে, কারাগারের পরিস্থিতি এখনো বিভ্রান্তিকর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখনো ভিডিও পোস্ট করা অব্যাহত রয়েছে এবং সেখানে দেখা যাচ্ছে, আগুন জ্বলছে। কারাগারের চারপাশ থেকে গুলির শব্দ ভেসে আসছে। প্রকৃতপক্ষে কী কারণে এই অগ্নিকাণ্ড ও গোলাগুলির সূত্রপাত, তা এখনো স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।

কারাগারের আশপাশে সম্ভবত ইন্টারনেটের নেটওয়ার্ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং কারাগারে যাওয়ার রাস্তাটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, একটি ভিডিওতে দাঙ্গা পুলিশকে এভিনে প্রবেশ করতে দেখা গেছে। কারাগারের ওই এলাকায় বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, সেখানে অ্যাম্বুলেন্সও দেখা গেছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত