অনলাইন প্রতিবেদক

১০ জুন, ২০১৬ ২২:৫৮

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে নিত্যরঞ্জন পাণ্ডে হত্যাকাণ্ড

পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুরে শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র সৎসঙ্গ সেবাশ্রমের সেবক নিত্যরঞ্জন পাণ্ডেকে হত্যার খবর দেশি গণমাধ্যমের পাশাপাশি বিদেশি গণমাধ্যমেও গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার পেয়েছে। শুক্রবার সকালে নিত্যরঞ্জন পাণ্ডে খুন হন।
 
বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরা, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস. গালফ নিউজ, দ্য গার্ডিয়ান, দ্য হিন্দুস্তান টাইমস, ডয়েচে ভেলে, আনন্দবাজার, টাইমস অব ইন্ডিয়ার মতো প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি এপি, রয়টার্স, সিনহুয়া ও এএফপি’র মতো আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থাগুলোও দ্রুততম সময়ে সেবাশ্রমের সেবক নিত্যরঞ্জনকে হত্যার খবর ছড়িয়ে দিয়েছে।
 
‘হিন্দু মনাস্টেরি ওয়ার্কার হ্যাকড টু ডেথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক শিরোনামে বিবিসি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষ ও সংখ্যালঘুদের টার্গেট করে হামলার সর্বশেষ শিকার একজন হিন্দু সেবাশ্রমের সেবক। সকালে সেবক নিত্যরঞ্জনের হামলার কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষী নেই। এখন পর্যন্ত কোনো জঙ্গি সংগঠন এর দায় স্বীকার করেনি।
 
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বহুল প্রচারিত আনন্দবাজার পত্রিকার এক খবরের শিরোনাম হলো ‘বাংলাদেশে এ বার কুপিয়ে খুন করা হল অনুকূল আশ্রমের সেবককে’। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফের সংখ্যালঘুর উপর আক্রমণ বাংলাদেশে। পাবনা জেলায় কুপিয়ে খুন করা হল একটি হিন্দু আশ্রমের সেবক নিত্যরঞ্জন পাণ্ডেকে। বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় সম্প্রতি যে সব খুনের ঘটনা ঘটছে, তার সঙ্গে এই খুনের মিল রয়েছে। একই গোষ্ঠী এই খুন করেছে বলে প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে। গত এক সপ্তাহে এই নিয়ে তিন সংখ্যালঘু একই কায়দায় খুন হলেন বাংলাদেশে।
 
‘বাংলাদেশ:হিন্দু ম্যান হ্যাকড টু ডেথ ইন পাবনা’ শিরোনামে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গণমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা ৬২ বছর বয়সী হিন্দু আশ্রমের সেবককে হত্যা করেছে। প্রধানত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর ধারাবাহিক হামলার সর্বশেষ ঘটনা এটি। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশি রাজনীতিতে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ দুর্বৃত্তদের ধর্মীয় হিংসাজনিত অপরাধকে উদ্বুদ্ধ করছে এবং আড়াল করছে।
 
জার্মান গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষ অভিযান শুরুর পরই হিন্দু সেবককে কুপিয়ে হত্যা।
 
ব্রিটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকার অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ধর্মীয় হত্যার সর্বশেষ ভিকটিম এক হিন্দু আশ্রমের সেবক। গত ৪০ বছর ধরে পাবনার আশ্রমে কাজ করে আসছিলেন নিত্যরঞ্জন পাণ্ডে। বাংলাদেশে দুর্বৃত্তদের হামলায় গত তিন বছরে প্রায় ৫০ জন নিহত হয়েছে। বেশিরভাগ ঘটনায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) ও আল কায়েদার দক্ষিণ এশীয় শাখা দায় স্বীকার করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিরোধীদের উপর সরকারের দমন-পীড়নে সৃষ্ট রাজনৈতিক সংকট অনেককে উগ্রবাদের দিকে ধাবিত করেছে।
 
ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আইএসের হিন্দু পুরোহিতকে হত্যার দায় স্বীকারের একদিন পরই বাংলাদেশে হিন্দু আশ্রমের এক সেবককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সাম্প্রতিক কয়েক মাসে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু, ব্লগার, বুদ্ধিজীবী ও বিদেশিদের টার্গেট করে হত্যা করা হচ্ছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত