২১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০১:০৬
তৃণমূল বিধায়কের অদ্ভুত এক বিক্ষোভে হতচকিত হয়ে গেল ভারতের ত্রিপুরা বিধানসভা।
স্পিকারের পোডিয়াম থেকে আচমকা রুপার তৈরি ন্যায়দণ্ডটি তুলে নিয়ে দৌঁড়াতে শুরু করলেন তৃণমূল বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন। আগরতলার দাপুটে এই বিধায়ককে আটকাতে তার পিছন পিছন ছুটলেন বিধানসভার মার্শালরা।
কিন্তু 'অপ্রতিরোধ্য' সুদীপকে আটকাতে পারলেন না তারা। ন্যায়দণ্ড নিয়ে তিনি অধিবেশন কক্ষের বাইরে চলে গেলেন। ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন স্পিকার রমেন্দ্রচন্দ্র দেবনাথ।
আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার বিধানসভার অধিবেশন শুরু হতেই প্রধান বিরোধী দল তৃণমূল এবং অপর বিরোধী দল কংগ্রেস বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। বনমন্ত্রী নরেশ জামাতিয়ার বিরুদ্ধে যৌন কেলেঙ্কারির যে অভিযোগ সম্প্রতি সামনে এসেছে, তা নিয়েই বিক্ষোভ দেখায় দুই বিরোধী দল।
বনমন্ত্রীর অপসারণ দাবি করে ওয়েলে নেমে এসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তারা। আচমকা স্পিকারের আসনের দিকে উঠে যান সুদীপ রায় বর্মন এবং পোডিয়ামের সামনে রাখা রুপার ন্যায়দণ্ডটি তুলে নেন।
এই কাণ্ড দেখে তৃণমূল বিধায়কের দিকে ছুটে যান বিধানসভার মার্শালরা। কিন্তু সুদীপ রায় বর্মন ততক্ষণে ছুটতে শুরু করেন দরজার দিকে। মার্শালও পিছনে ছুটতে শুরু করেন তাকে আটকানোর জন্য।
ঘটনার আকস্মিকতায় হতচকিত হয়ে যায় সবাই। বিরোধীদের বিক্ষোভও থেমে যায়। সুদীপ রায়ের নিজের দলের বিধায়করাও সম্ভবত আশা করেননি, তিনি এমন কাণ্ড ঘটাতে চলেছেন! ন্যায়দণ্ড হাতে দৌঁড়াতে থাকা সুদীপ রায় বর্মনকে অবশ্য আটকাতে পারেননি মার্শাল। তিনি অধিবেশন কক্ষের বাইরে চলে যান। সেখানেও বেশ কিছু ক্ষণ দৌড়ঝাঁপের পর তৃণমূল বিধায়কের হাত থেকে মার্শালরা ন্যায়দণ্ড উদ্ধার করেন।
স্পিকার রমেন্দ্রচন্দ্র দেবনাথ তৃণমূল বিধায়কের নিন্দা করে বলেছেন, ‘এই কাজ সংসদীয় রীতিনীতির সম্পূর্ণ বিরোধী।’
আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের চার বারের বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন আগে কংগ্রেসে ছিলেন। চলতি বছরেই তিনিসহ কয়েক জন কংগ্রেস বিধায়ক দলত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দেন।
পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে সুদীপ রায় ত্রিপুরায় তৃণমূলের তথা বিরোধী পক্ষের প্রধান মুখ হয়ে উঠতে চান বলে আগরতলার রাজনৈতিক মহলে জল্পনা রয়েছে। স্পিকারের ন্যায়দণ্ড ছিনিয়ে নিয়ে তিনি আসলে খবরে থাকতে চাইছেন বলে অনেকে মনে করছেন।
আপনার মন্তব্য