সিলেটটুডে ডেস্ক

৩০ আগস্ট, ২০১৮ ০২:৫৩

সম্ভ্রম বাঁচাতে কলেজছাত্রীর চিঠি

আইনি জটিলতায় মাঝ পথে থমকে গেছে সরকারি গৃহনির্মাণ প্রকল্পে বাড়ি তৈরির কাজ। তাতে বিপাকে পড়েছে রামপুরহাট পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের একটি পরিবার। বাড়ি তৈরির সময় পুরনো শৌচাগার ভেঙে দেওয়ায় প্রকৃতির ডাকে মাঠঘাটে যেতে হচ্ছে বাড়ির মহিলাদেরও। এই অবস্থায় স্বজনদের সম্ভ্রম বাঁচাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সাহায্যের আর্জি পাঠিয়েছেন ওই পরিবারের এক তরুণী।

স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছে, রামপুরহাট কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী পায়েল মণ্ডল সোমবার ডাকযোগে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে সম্মান নিয়ে বাঁচার ব্যবস্থা করে দেওয়ার আবেদন জানিয়েছেন।

চিঠিতে তিনি লিখেছেন— ‘শৌচালয়ের অভাবে সামাজিক সম্মানহানি থেকে তার পরিবারকে বাঁচানোর আর্জিতেই মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয়েছেন।’

শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পায়েলের বাবা তপন মণ্ডল আনাজ বিক্রেতা। রামপুরহাট হাটতলার বাজার সংলগ্ন বেনেপুকুর পাড়ে তাদের বাড়ি। মঙ্গলবার সকালে সেই বাড়িতে দেখা মিলল পায়েলের। খড়ের ছাউনি, জীর্ণ মাটির দেওয়ালে ঘেরা। পায়েল বলেন, ‘‘সাত জন থাকি এই ভাঙা বাড়িতে। কালো মেঘ জমলে বা ঝড় উঠলে বাড়ি ছেড়ে পড়শিদের পাকা বাড়িতে ঢুকতে হয়।’’

তিনি জানান, ২০১৭ সালে সরকারি গৃহনির্মাণ প্রকল্পে তাদেরও পাকা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। সেই সময় বাড়ির পুরনো শৌচাগার ভেঙে ফেলা হয়। কিন্তু এক পড়শি ওই বাড়ি তৈরিতে আপত্তি তুলে আদালতে মামলা ঠুকে দেন। বন্ধ হয়ে যায় বাড়ি তৈরির কাজ।

পায়েল জানান, তারপর থেকেই ভাগাড়, জঙ্গলে ঘেরা ডোবায় রাতবিরেতে শৌচকর্ম করতে যেতে হয় তাদের। সব চেয়ে সমস্যা বাড়ির মহিলাদের। তার কথায়, ‘‘এতে সামাজিক সম্মানহানির ভয় রয়েছে। কিছু করারও নেই।’’

তপনবাবুর অভিযোগ, তার জমিতে পুরসভার অনুমোদনে সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরি করা হচ্ছিল। এক দিকের দেওয়ালের গাঁথনির কাজ শেষ হওয়ার পরে পুরনো শৌচাগার ভেঙে দেওয়া হয়। তারপরেই এক পড়শি বাড়ির জায়গা নিয়ে আপত্তি তুলে আদালতে মামলা করেন। প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েও সুরাহা হয়নি।

ওই ওয়ার্ডের বিজেপি পুরপ্রতিনিধি শুভাশিস চৌধুরী জানান, ‘‘ওই উপভোক্তার নিজের জমিতে বাড়ি তৈরির কাজ চলছিল। বিএলএলআরও অফিসে জমিটি ওই উপভোক্তার বলেই চিহ্নিত। এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তি সেটি তার জমি বলে দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন।’’

তার অভিযোগ, ওই ব্যক্তি নিজে প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় পুকুর বুজিয়ে বাড়ি তৈরি করছেন। পুরসভার উদাসীনতায় গরিব মানুষকে আইনি লড়াই করতে হচ্ছে।

পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি বলেন, ‘‘আদালতের ঊর্ধ্বে পুরসভা নয়। তবুও বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে। তাদের নির্দেশ মেনেই পদক্ষেপ করা হবে।’’ সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত