আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৪ আগস্ট, ২০১৫ ১০:৫৪

বিস্ফোরণস্থলে রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়েছে চীনা সরকার

চীনের তিয়ানজিন শহরের বিস্ফোরণস্থলে সামরিক বাহিনীর দুশো সদস্যের একটি রাসায়নিক বিশেষজ্ঞদল পাঠিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

বুধবার রাতে তিয়ানজিন বন্দরের কাছে রাসায়নিকের একটি গুদামে পরপর দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে যাতে নিহতের সংখ্যা দাড়িয়েছে অন্তত ৫০। আর আহতের সংখ্যা সাতশ ছাড়িয়ে গেছে।

বিস্ফোরণের কারণ এখনও জানা যায়নি।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে ওই এলাকার বাতাসে তীক্ষ্ণ গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে এবং সেখানকার মানুষেরও চোখে সমস্যা হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করছে।

এদিকে প্রায় সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি মানুষ অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রাত কাটাচ্ছে।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম জিনহুয়া জানাচ্ছে যে বিধ্বংসী অগ্নিকান্ডের প্রায় ৩০ ঘন্টা পরও গুদাম থেকে কালো ধোয়ার কুন্ডুলি বেরুচ্ছে।

বিস্ফোরণস্থলের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে, আহতদের উদ্ধার করতে হিমশিম খাচ্ছে উদ্ধারকর্মীরা।

স্থানীয় হাসপাতালগুলোকেও শত শত আহত লোককে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সিয়াজোই হাসপাতাল জানাচ্ছে, আহতদের অনেকের গায়ে ছোট ছোট কাচের টুকরা লেগে আছে; কারও হয়তো মাথায় আঘাত লেগেছে কারও হাত পা ভেঙেছে ,গুরুতর অবস্থায় রয়েছে ৭১ জন।

কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি শক্তিশালী বিস্ফোরণ ঘটে তিয়ানজিন শহরের শিল্প এলাকায়- যেখানে গাড়ির কারখানা, বিমান সংযোজন কারখানা, বিভিন্ন ধরনের উৎপাদন শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং গবেষণা সংস্থার দপ্তর ছিল। গুদাম থেকে এখনও কালো ধোঁয়ার কুন্ডলি উঠছে।

কর্তৃপক্ষ বলছে ‘বিস্ফোরকের একটি’ চালান আসার সময় বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে ।

ওই ঘটনায় আহত একজন সান কুমিন বলছেন-“প্রথমে আগুন দেখতে পেলেও বুঝতে পারিনি এটা এত বড় অগ্নিকান্ডের ঘটনা। বিস্ফোরণের জায়গা থেকে অনেক দূরে একটা কারখানায় আমি সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করি। হঠাৎ শব্দ শুনে শুয়ে পড়ি , তারপরও আহত হই। আর সিকিউরিটি বুথগুলো পুরোই ধ্বংস হয়ে যায়”।

এদিকে চীনা সামরিক বাহিনীর একটি রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ দলের প্রায় দুশোরও বেশি সদস্য পাঠানো হয়েছে বিস্ফোরণস্থলে। উদ্ধারকর্মীদের বলা হয়েছে তারা যেন শরীর সুরক্ষা কারার মতো পোশাক পড়ে কাজ করে।

রুইহাই লজিস্টিকস কোম্পানির যে গুদামে বিস্ফোরণ ঘটেছে সেখানে সোডিয়াম সায়ানাইডের মত আরো অনেক বিষাক্ত রাসায়নিক আদান-প্রদান হয়।

চীনের পরিবেশ সুরক্ষা ব্যুরোর প্রধান ওয়েন উরুই এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বিস্ফোরণের ঘটনার পর তিয়ানজিনের বাতাস এবং পানিতে দূষণের মাত্রা কতটা তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

তিনি বলেছেন, “বেশিদিন ধরে বিষাক্ত বাতাসে শ্বাস নেয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু আমরা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি এ মুহুর্তে জায়গাটিতে দূষণের মাত্রা সে পর্যায়ে পৌঁছেনি”।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা দ্য পিপলস ডেইলি বলছে, উদ্ধারকর্মীরা ওই জায়গায় মজুদ ৭শ’ টন সোডিয়াম সায়ানাইড সরানোর চেষ্টা করছে।

এই রাসায়নিকটিকে বিষমুক্ত করতে হাইড্রোজেন প্রিঅক্সাইডও প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানাচ্ছে পত্রিকাটি।

বিবিসি বাংলা ।

 

আপনার মন্তব্য

আলোচিত