আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৪ জানুয়ারি, ২০১৫ ১৪:৫০

সৌদি বাদশাহর মৃত্যুতে বিশ্ববাজারে বাড়ল তেলের দাম

সৌদি আরবের বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের মৃত্যু সংবাদ বৃহস্পতিবার রাতে প্রচারিত হওয়ার পরপরই আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়ে গেছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম। খবর সূত্র: ফক্স নিউজ, রয়টার্স, বিবিসি।

তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেকের সর্ববৃহৎ তেল উৎপাদনকারী দেশ সৌদি আরবসহ কয়েকটি দেশের অতিরিক্ত সরবরাহ এ মূল্য পতনের জন্য অনেকাংশে দায়ী। এ কথা চরম সত্য, বিশ্ববাজারে তেলের দাম নির্ধারণে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা সৌদি আরবের। 

মার্কিন বাজারে ব্যারেলপ্রতি জ্বালানি তেলের দাম ৮৮ সেন্ট বা ১.৯ শতাংশ বেড়ে ৪৭.১৯ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এদিকে আন্তর্জাতিক জ্বালানি তেলের মাপকাঠি হিসেবে গণ্য ব্রেন্টের দামও ২.১ শতাংশ বেড়ে ৪৯.৫৮ ডলারে উঠেছে। এ ইস্যুতে এনার্জি পলিসি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের তেলবিষয়ক প্রবীণ উপদেষ্টা ল্যারি গোল্ডস্টেইন বলেন, সৌদি আরবের বাদশাহর মৃত্যুসংবাদে পণ্যের বাজারে হয়তো একটি ধাক্কা লেগেছে এবং তারই প্রতিক্রিয়ায় তেলের দাম খানিকটা বেড়েছে। 

গত জুন ২০১৪ থেকে তেলের দাম প্রায় ৬০ শতাংশ কমে গেছে। কয়েক মাস ধরে দুর্বল চাহিদা এবং অব্যাহত অতিরিক্ত সরবরাহকে তেলের মূল্য পতনের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। ম্যাকগ্রো এনার্জি ইনফরমেশন ডিভিশন প্ল্যাটস জানিয়েছে, চলতি বছর জানুয়ারি মাসেও সৌদি আরব প্রতিদিন ৯.৬ বিলিয়ন ব্যারেল তেল উৎপাদন করছে। অর্থাৎ বৈশ্বিক চাহিদা পূরণে সৌদি আরবের ভূমিকা ১১ শতাংশ। 

প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, সৌদি আরবের প্রয়াত বাদশাহ আবদুল্লাহর উত্তরাধিকারী তারই সৎভাই সালমান দেশটির তেল উৎপাদনের ক্ষেত্রে কী নীতি নির্ধারণ করেন। তবে অদূর ভবিষ্যতে এমন কোনো পরিবর্তন দেশটির তেলের বাজারে আসবে না বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সৌদি আরবে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দিনে দিনে বাড়ছে এবং এ পরিপ্রেক্ষিতে আবদুল্লাহর মৃত্যুতে তেলসমৃদ্ধ দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

উল্লেখ্য, ৯০ বছর বয়সী বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গেল বছর ডিসেম্বর ২০১৪-তে হাসপাতালে ভর্তি হন। সৌদি সরকার জানায়, বৃহস্পতিবার (২২ জানুয়ারি) রাত ১টায় তিনি মারা যান। 

এদিকে বাদশাহ আবদুল্লাহ বিন আবদুল আজিজের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরবের শাসন ক্ষমতায় এলেন তার সৎভাই সালমান বিন আবদুল আজিজ, যিনি পশ্চিমা মিত্রদের কাছে পরিচিত তুলনামূলকভাবে উদারপন্থী হিসেবেই। ৭৯ বছর বয়সী সালমান যখন আনুষ্ঠানিকভাবে সৌদি আরবের শাসনভার নিতে যাচ্ছেন, তখন ইরাক ও সিরিয়ায় চলছে যুদ্ধাবস্থা, ইয়েমেনে হুমকি দিচ্ছে আল কায়দা, আর ইরানের শিয়া নেতৃত্বের সঙ্গে পুরনো বৈরিতা তো রয়েছেই। 
প্রয়াত বাদশাহর সৎভাই ষাটোর্ধ্ব মোকরিনকে এরই মধ্যে সৌদি আরবের নতুন যুবরাজ ঘোষণা করা হয়েছে। তারা চারজনই আধুনিক সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠাতা বাদশাহ আবদুল আজিজ ইবনে সউদের ছেলে। তার মৃত্যুর পর থেকে তার ছেলেরাই ক্রমানুযায়ী উত্তরাধিকারসূত্রে সৌদি আরবের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হচ্ছেন। 



আপনার মন্তব্য

আলোচিত