সিলেটটুডে ডেস্ক

২৮ জানুয়ারি, ২০২০ ১৯:২৯

পুরুষের সঙ্গে হোটেলে রাত্রিযাপন: শরিয়া আইনে নারীকে শাস্তি দিলেন নারী

ঢিলেঢালা বোরকার ওপরে পরেছেন ভিন্নধর্মী এক মুখোশ। হাতে বেত নিয়ে এগিয়ে এসে সবার সামনেই বসে থাকা এক নারীকে আঘাত করা শুরু করলেন। বোঝা গেলো, তিনি ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশের ‘ফিমেল ফ্লগিং স্কোয়ার্ড’র একজন সদস্য। বেত্রাঘাতের শিকার স্থানীয় ওই নারী বিয়ের আগে এক পুরুষের সঙ্গে হোটেলে রাত্রিযাপন করায় তাকে এই শাস্তি প্রদান করা হয়।

কোনো নারী যদি ‘অনৈতিক’ কোনো কাজ করে থাকেন তবে শরিয়া আইন অনুযায়ী এই স্কোয়ার্ডের সদস্যরা প্রকাশ্যেই ওই নারীকে শাস্তি দেন। এই আইনে কেউ অপরাধী হলে তাকে জনসমক্ষে এনেই বেত্রাঘাত করা হয়। ইন্দোনেশিয়ার এই প্রদেশটিতে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আগে পুরুষ সদস্যরা এই শাস্তি প্রদান করলেও বর্তমানে বাহিনীতে যোগ করা হয়েছে নারী সদস্য।

প্রথমবারের মতো একজন নারী সদস্য দিয়ে অন্য নারীকে শাস্তির দেওয়ার ঘটনার মূল্যায়ন করতে গিয়ে বান্দা আচেহ প্রদেশের শরিয়া পুলিশের প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা জাকওয়ান বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, আমি মনে করি সে তার কাজ ঠিকঠাকভাবে করেছে। তার কৌশল বেশ চমৎকার ছিল।

তবে শাস্তি প্রদানের এমন বিতর্কিত পদ্ধতি নিয়ে সমালোচনা উঠেছে দেশটির মানবাধিকার রক্ষা কর্মী, রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন মহলে।
 
জনসম্মুখে বেত্রাঘাত বন্ধে একটি আদেশ জারি করেছেন ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি। তবে তীব্র রক্ষণশীল প্রদেশ আচেহ এর এমন ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।

কয়েক দশকের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের পর কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে স্বায়ত্বশাসন লাভ করে আচেহ প্রদেশ। তারই অংশ হিসেবে ২০০৫ সাল থেকে সেখানে চলছে শরিয়া আইন।

সেখানে জুয়া, যৌনতা, মদ্যপান অথবা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জন্য জনসম্মুখে বেত্রাঘাত সাধারণ একটি ঘটনা। তবে এতোদিন ঘরে এই কাজটি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পুরুষ সদস্যরা করেন। এখন থেকেই এই স্কোয়ার্ডে যোগ হয়েছেন নারীরাও।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত