০২ মার্চ, ২০২০ ১৬:০১
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত মানুষের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়েছে। রোগের প্রাদুর্ভাব কেন্দ্র চীনে মৃত্যুর ঘটনা বাড়ায় আজ সোমবার মৃত মানুষের সংখ্যা তিন হাজার ছাড়িয়ে যায়।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশ থেকে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ ছড়ায়। এখন তা ৬০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
এর মধ্যে ইতালি, ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়ার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। সবশেষ গত শনিবার ও গতকাল রোববার যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া প্রথম তাদের কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছে। প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার নিজ দেশে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানা যায়, ভাইরাসটিতে ৬০টিরও বেশি দেশে আক্রান্ত হয়েছেন ৮৮ হাজারেরও বেশি মানুষ।
আক্রান্ত মানুষের দিক দিয়ে চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক আক্রান্ত হয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ায়। আজ সেখানে নতুন করে আরও ৫০০ জনের আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এতে দেশটিতে মোট আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা চার হাজারে পৌঁছেছে। এর মধ্যে শুধু চীনেই মারা গেছেন ২ হাজার ৯১২ জন। এরপরই রয়েছে ইরান। সরকারি তথ্য অনুসারে ইরানে ৫৪ জন মারা গেছেন।
যে হারে বিভিন্ন দেশে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে, এতে প্যানডেমিকের (বিশ্বের বড় অঞ্চলজুড়ে মহামারি আকারে রোগের বিস্তার) শঙ্কায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) শ্বাসকষ্টজনিত ভয়াবহ এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসায় সংকটাপন্ন সময়ের জন্য যথাযথ পরিমাণের ভেন্টিলেটর মজুত রাখতে সব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি এবং যাদের পূর্ব–অসুস্থতা রয়েছে, তারাই করোনাভাইরাসের ঝুঁকিতে রয়েছেন বেশি।
করোনাভাইরাসের দ্রুত বিস্তার বিশ্ব অর্থনীতির ওপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে। বিশ্ববাজার ২০০৮ সালের অর্থনৈতিক সংকটের পর আরেকটি বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
কোয়েরেন্টাইন (রোগ সংক্রমণের শঙ্কায় পৃথক রাখা) এবং ভ্রমণ–নিষেধাজ্ঞা থাকায় চীনের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। অন্য দেশগুলো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশদ ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছে। যেমন ভাইরাস উপদ্রুত এলাকায় ভ্রমণ–নিষেধাজ্ঞা, শহর অবরুদ্ধ করা, বাসিন্দাদের ঘরে অবস্থান করতে বলা, ফুটবলের মতো বিভিন্ন বড় অনুষ্ঠান বা বাণিজ্য মেলা বাতিল।
বিশ্বজুড়ে ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বেগ বাড়তে থাকার সবচেয়ে বড় উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে লুভ জাদুঘর। ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত জাদুঘরটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দর্শনার্থীর পদভারে মুখরিত থাকে। জাদুঘরের কর্মীদের ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল তা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
আপনার মন্তব্য