
১৪ মে, ২০২০ ০৩:৩৬
সারা পৃথিবীতে যখন সাড়ে ৪৩ লক্ষ মানুষ কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ও প্রায় তিন লক্ষ মানুষ করোনা মহামারিতে মৃত্যু হয় ভিয়েতনাম তখন নিউ জিল্যান্ডের পর নিজেদের কোভিডশূন্য দেশ হিসেবে ঘোষণা দেয়। মোট ২৮৮ জন আক্রান্ত হলেও একজনেরও মৃত্যু হয়নি দেশটিতে। আজ শেষ ১২ জন পজিটিভ আক্রান্ত মানুষও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলো।
চীনের সাথে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে টনকিন উপসাগর আর ১১০০ কিলোমিটার স্থলসীমান্ত ভাগ করে নেওয়া সাড়ে ন'কোটি মানুষের দেশে লকডাউন উঠে যাচ্ছে আজ থেকে।
বিজ্ঞাপন
সব মিলিয়ে ২৮৮ জন কোভিড পজিটিভ রোগী বাড়ি গেছেন সুস্থ হয়ে—একজনও মারা যাননি। একটা রিপোর্টও লুকাতে হয়নি সরকারের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮৮ বছরের বৃদ্ধাও।
একজন ডাক্তার স্বাস্থ্যকর্মীও মারা যাননি চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবে। একটা লোকও খিদের জ্বালায় মরেনি, রাস্তায় চালের জন্য দাঙ্গা হয়নি, ত্রাণ-সামগ্রী লুটপাট হয়নি।
১৯৯৭ সালে আমি ৪ সপ্তাহ হলিডে কাটিয়েছি ভিয়েতনামে। একটা কর্মঠ সুশৃঙ্খল জাতি। হ্যানয়ে দেখেছি প্রতিদিন ভোরবেলা প্রায় সকল নগরবাসী জগিং অথবা যোগব্যায়াম করেন পার্কে বা জলাশয় এর পার্শে এবং সাইকেলে চলাফেরা করেন, প্রতিটি শহরেই একই দৃশ্য উত্তর থেকে দক্ষিণে লম্বা পথ পাড়ি দিয়েছি বাসে চড়ে প্রতিদিন রাত্রে, আর দিনে এক একটি নতুন শহরে ঘুরেছি, এমনকি সায়গন (হো-চি-মিন সিটি) শহরেও হাজার হাজার মানুষ সকালে যোগব্যায়াম করে। সম্ভবত, এই যোগব্যায়ামই তাদেরকে সুস্থ রেখেছে।
ভিয়েতনামের জনগণ স্বল্প ক্ষমতায়, নিজেদের সাধ্যমত স্বাস্থ্য-পরিকাঠামো নিয়ে লড়াই করে নিজেদেরকে সুস্থ রেখেও চার লাখ পিপিই তৈরি করে পাঠিয়েছে আমেরিকায়, যারা রোজ সকালে ন্যাপাম বোমা ফেলে হত্যা করতো বৃদ্ধ ও শিশুদেরকে। বেশি দিনের আগের কথা নয় মাত্র ৪৫ বছর আগের কাহিনী।
তাই আজ ভিয়েতনামের জন্যেই বিজয়ের স্লোগান দিতে জয় - জয় ভিয়েতনামের জয়!
আপনার মন্তব্য