রাজেশ পাল

১৫ জানুয়ারি, ২০১৬ ০১:৫১

ব্যলাড অফ এ ট্রু হিরো: এক মৃত্যুঞ্জয়ী বীরের কথা

৫ই সেপ্টেম্বর,১৯৭১। ৮নং সেক্টরের অধীন বয়রা সাব সেক্টরের হেডকোয়ার্টার।

শীত আসি আসি করেও আসছেনা। কেমন যেন ভ্যাপসা গরম ছড়িয়ে আছে চারপাশে।নিজের তাবুতে বসে একাগ্র মনে সেক্টরের ম্যাপের উপর ঝুঁকে চোখ বুলাচ্ছেন ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদা।কপালে চিন্তার বলিরেখা ফুটে উঠেছে স্পষ্ট। ৮নং সেক্টরের বিস্তৃতি কম নয়।কুষ্টিয়া- যশোর থেকে শুরু করে খুলনা-সাতক্ষীরা পর্যন্ত অঞ্চল ছিল ৮ নং সেক্টর। এর উত্তরে বৃহত্তর রাজশাহী ছিল ৭ নং সেক্টরে, দক্ষিণে সুন্দরবন আর বৃহত্তর বরিশাল ছিল ৯ নং সেক্টরের অধীন। এত বিশাল অঞ্চলের কমব্যাট লোকেশন নখদর্পণে রাখা চাট্টিখানি কথা নয়।মানচিত্রের উপর লাল ও কালো কালিতে বৃত্তাকার চিহ্ন। লালচিহ্নিত অঞ্চলগুলো মুক্তি আর মিত্রবাহিনীর দখলে। কালোগুলো পাকবাহিনীর। কালো চিহ্নিত স্থানের সংখ্যা কমে আসছে প্রতি সপ্তাহেই। ইতিমধ্যেই গোয়ালহাটি, ছুটিপুর ঘাট, ছুটিপুর সেনাক্যাম্প, বরনী এলাকা শত্রুমুক্ত করে ফেলেছেন তারা।বাকি এলাকাগুলোতেও চলছে গেরিলা বাহিনীর বিচ্ছুদের কমান্ডো হামলা। রীতিমতো আতংকে পড়ে গেছে পাইক্কারা।রাতে চলাচল বলতে গেলে একপ্রকার বন্ধই করে দিয়েছে।দিনে বের হলেও একেবারে সদলবলে পূর্ণ কমব্যাট প্রস্তুতি নিয়েই। গেরিলাদের হিট এন্ড রান গেরিলা একশন তাদের মনোবল ভেঙে দিয়েছে ভালোভাবেই। বাতাসে গাছের ডাল নড়লেও চমকে উঠে গুলি শুরু করে কেউ কেউ। বলা তো যায়না,বাতাস না হয়ে বিচ্ছুরাও তো হতে পারে।গুলি বা গ্রেনেড ছুড়ে বসলে এই জন্মে আর মারখোরের গোস্তের সাথে তন্দুরি রুটির স্বাদ নেয়া হবেনা।হীরামণ্ডির মুজরো দেখা হবেনা আর কোনদিন।তাই খুব সাবধানে তাদের সতর্ক চলাফেরা।

ক্যাপ্টেন হুদার কপালে ভাজ আরো স্পষ্ট হলো। সেক্টর হেডকোয়ার্টার থেকে জরুরী নির্দেশ এসেছে। ছোটখাটো গেরিলা অপারেশনে আর সন্তুষ্ট নন সেক্টর কমান্ডার।বড় ধরণের অফেন্সিভ রেইড চান তিনি। তিন দিনের মধ্যে কপোতাক্ষের অপর পার মুক্ত করার নির্দেশ দিয়ে দিয়েছেন। বিড়বিড় করে গালিই দিলেন কয়েকটা।শালার বাঙালির আর স্বভাব গেলো না।যতই করো সন্তুষ্টি নামক শব্দটি তাদের ডিকশনারিতে কখনো লেখা হবে বলে মনে হয়না।যাই হোক,হেডকোয়ার্টার অর্ডার।তামিল তো করতেই হবে।তাই অফেন্সিভের পরিকল্পনা করতেই বসেছেন তিনি।হাতে থাকা গোয়েন্দা তথ্যগুলোর উপর খুব একটা নির্ভর করতে পারছেন না।কারণ সবগুলো তথ্যই এক সপ্তাহের পুরনো।রণাঙ্গনে কয়েক মিনিটের হেরফের হলে যে কতবড় সর্বনাশ হয়ে যেতে পারে, সেটা নেপোলিয়ন ওয়াটারলুতে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন।তাই হালনাগাদ তথ্যের প্রয়োজন মেজর অফেন্সিভে যাওয়ার আগেই।অনেক ভেবেচিন্তে একটা স্ট্যান্ডিং পেট্রোল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।কিন্তু পাঠাবেন কাকে?শত্রুর গতিবিধি বলতে গেলে কিছুই জানা নেই।এই অবস্থায় ৪/৫ জনের একটা পেট্রোল পাঠানো যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ। অনেকটা জেনেশুনে কাউকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়ার মতোই।কিন্তু এছাড়া তো আর কোন পথই চোখে পড়ছেনা। তো কাকে পাঠাবেন এই চরম ঝুঁকির মুখে? হঠাত মনে পড়লো ল্যান্স নায়েক শেখের কথা।মধ্য ত্রিশের যুবক।চওড়া বুক, কঠিন হাসি।কপালের নীচের জ্বলজ্বলে চোখ দুটো দেখলেই বোঝা যায়, জীবনে পরোয়া করেনি কারো।এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করেনা এই অসমসাহসী মানুষটি। ৬৫ এর পাক ভারত যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য দু-দুটো মেডেল পেয়েছেন।যুদ্ধের শুরু থেকেই সাথে আছেন।বরনীতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার জীবন রক্ষা করেন।এই দুঃসাহসী কাজের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি।হাবিলদারের মারফত শেখের কাছে যাবতীয় নির্দেশ পাঠালেন ক্যাপ্টেন।তারপর টেবিলের উপর থেকে স্টেনগানটা নিয়ে নিজে পা বাড়ালেন কমান্ড পোস্টের দিকে।

গোয়ালহাটি যশোর জেলার চৌগাছা উপজেলার অন্তর্গত। সীমান্তবর্তী এলাকা। এ গ্রামের পাশ দিয়ে কপোতাক্ষ নদ। গোয়ালহাটির পাশেই সুতিপুরে (বাংলাদেশের অভ্যন্তরে) ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরক্ষা অবস্থান। এ অবস্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধারা প্রায়ই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর ঝটিকা আক্রমণ চালাতেন। তাঁদের এই আক্রমণের মাত্রা আগস্ট মাসে ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে ওঠে।এখন সময় এসেছে চরম আঘাত হানার।তাই শত্রুর গতিবিধি লক্ষ্য করার জন্য ৫ জনের স্ট্যান্ডিং পেট্রোলটি সন্তর্পণে এগিয়ে যেত লাগলো তারা।চোখে বাজ পাখির মতো সতর্ক দৃষ্টি।কারো মুখে কথা নেই। পেট্রোল প্রধান ল্যান্স নায়েক শেখের হাতে এসএলআর,সিপাহী নান্নুর হাতে একমাত্র ভারী অস্ত্র এলএমজি টি,সিপাহী মোস্তফার হাতে চাইনিজ এসএমজি, বাকি দুজনের হাতে রাইফেল।কেমন যেন অস্বাভাবিক চুপচাপ চারদিক।একেবারে পিনপতন নীরবতা।বাতাসীর ফিসফিসানিটুকুও শোনা যাচ্ছেনা। কোথাও যেন হিসেবে বড় ধরণের গড়মিল দেখা দিয়েছে।বুঝতে পারছেন ৫ জনই। কিন্তু সহযোদ্ধার মনোবল  ভেঙে যাওয়ার আশংকায় চুপ করে আছেন সবাই।আচমকা শুরু হলো বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণ। মুহূর্তেই মাটিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পালটা ফায়ার ওপেন করলেন তারা। পাকবাহিনীর খাস বান্দা রাজাকাররা আগেই পৌঁছে দিয়েছিল তাদের পেট্রোল পার্টি আসার সংবাদ। তাই আগে থেকেই শিকারের আশায় এম্ব্যুশ পেতে বসেছিল পুরো এক কোম্পানি পাকসেনা। সাথে ছিলো হেভি মেশিনগান আর মর্টারের মতো ভারী অস্ত্রশস্ত্র। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা বুঝতে পারেন, পাকসেনারা তাদের তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে। পাকসেনারা ততক্ষণে নূর মোহাম্মদের টিমকে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে। মুক্তিযোদ্ধারা এগিয়ে এলেও তাদের উদ্ধার করতে পারছিল না।

নূর মোহাম্মদ তার টিম নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করতে করতে পিছিয়ে আসছিলেন।নূর মোহাম্মদের টিমে একটিই মাত্র এলএমজি ছিল।সেটি ছিলো সিপাহী নান্নু মিয়ার কাছে। আচমকা নান্নু মিয়াই গুলিতে আহত হলেন। এখন কী করা যায়? একে তো শত্রুরা তাদের তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে, পালানই কষ্টকর হয়ে উঠেছে। তার উপর আবার একজন আহত। আহত সঙ্গীকে নিয়ে পিছু হটা তো আরও কষ্টকর। বাঁচতে হলে, এরকম পরিস্থিতিতে আহত সঙ্গী ফেলে রেখে পিছু হটতে হয়। কিন্তু তা কি করা সম্ভব? একজন মুক্তিযোদ্ধা কি আরেকজন মুক্তিযোদ্ধাকে মৃত্যুর মুখে ফেলে রেখে যেতে পারে?নূর মোহাম্মদ, নান্নু মিয়ার অস্ত্র তুলে নিলেন হাতে। এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পিছাতে লাগলেন সবাইকে নিয়ে। আর দ্রুত জায়গা বদল করতে লাগলেন, যাতে শত্রুরা তাদের অবস্থান নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যায়। কিন্তু শেষ রক্ষা বুঝি আর হল না। এবার একটা মর্টারের গোলা এসে লাগল তারই ডান কাঁধে।

না, হাল ছাড়লেন না নূর মোহাম্মদ শেখ। সবাইকে পালিয়ে যাওয়ার আদেশ দিলেন। জানালেন, তিনি সবাইকে কাভার করার জন্য থেকে যাবেন। অবিরাম গুলি করবেন, তাতে পাকবাহিনীর আসতে দেরি হবে। ততোক্ষণে সবাই মুক্তিযোদ্ধাদের দলের কাছে, নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে পারবে।কিন্তু তাই কী আর হয়? কেউ-ই তো তাকে ফেলে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না। আহত নান্নু মিয়াকে যদি বহন করে নেওয়া যায়, তাকে কেন নেয়া যাবে না? কিন্তু একজনকে তো কাভার দিতেই হবে। তিনি একরকম জোর করেই সবাইকে পাঠিয়ে দিলেন। নিজের কাছে কিন্তু এলএমজিটা রাখলেন না। এলএমজিটা আর অধিনায়কত্ব সিপাহী মোস্তফাকে দিয়ে তার কাছ থেকে একটা মান্ধাতা আমলের ৩০৩ ব্রিটিশ রাইফেল চেয়ে নিলেন। তিনি তো ধরা পড়বেনই, মারা যাওয়াটাও একরকম নিশ্চিত। তখন তো তার কাছে যে অস্ত্রটা থাকবে, সেটাও পাকবাহিনীর হস্তগত হবে। মুক্তিবাহিনীর কাছে তখনও এলএমজি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও তিনি দেশের কথা ভাবলেন। সেভাবেই কাজ করলেন, যাতে মুক্তিবাহিনীর ক্ষতি খুবই কম হয়।সবাইকে নিয়ে সিপাহী মোস্তফা মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে পিছু হটতে লাগলেন। আর নূর মোহাম্মদ শেখ একাই একটা মাত্র রাইফেল নিয়ে আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত বড়সড় একটা পাকবাহিনীর টিমের মোকাবিলা করতে লাগলেন। এলোমেলোভাবে গুলি ছুড়তে লাগলেন যাতে তার অবস্থান চিহ্নিত করা না যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই মুক্তিবাহিনী পাল্টা আক্রমণ হানল। মুক্তিবাহিনীর পাল্টা আক্রমণে পাকসেনারা পিছু হটতে শুরু করে। পরে খুঁজে-পেতে নূর মোহাম্মদ শেখের মরদেহও পাওয়া গেল। বর্বর পাকবাহিনী তাকে হত্যা করে, বেয়নেট দিয়ে ক্ষত-বিক্ষত করে, তার মরদেহ ফেলে রেখে গেছে পাশেরই একটা ঝাড়ে।

সিপাহী  মোস্তফা কামালের বক্তব্য অনুযায়ী, নূর এমন একটি অবস্থানে ছিলেন যেখানে গুলি করে তাঁকে মারা সম্ভব ছিল না৷ তাই, শত্রুরা অন্তত ৩০টি মর্টারের গোলা নিক্ষেপ করে তাঁকে হত্যা করতে৷নূর মোহাম্মদের মরদেহের উপরও অমানবিক নির্যাতন করে পাকিস্তানি সেনারা৷ এমন বীভৎস নির্যাতন মোস্তফা কামাল সেদিনই প্রথম দেখেছিলেন৷ তিনি বলেন, বেয়নেট দিয়ে নূর এর চোখ উপড়ে ফেলেছিল শত্রুরা৷ তাঁর মাথার ঘিলু বের হয়ে যায়৷ মৃত নূরের উপর উপর্যুপরি বেয়নেট চার্জ করে পাকিস্তানিরা৷

নিজের জীবনের বিনিময়ে সহযোদ্ধাদের জীবন রক্ষা করে অপরিসীম বীরত্ব আর দেশপ্রেমের এক স্বর্ণজ্জোল ইতিহাস রচনা করেন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ।

বাল্য ও কর্মজীবন:
বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের জন্ম ২৬শে ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬, যশোর জেলার অন্তর্গত নড়াইল মহকুমার মহিষখোলা গ্রামে। পিতা আমানত শেখ ছিলেন কৃষক এবং মাতা জেন্নাতুন নেসা ছিলেন গৃহিণী। শৈশবেই বাবা-মা হারিয়ে অনেকটা সংসার বিরাগী জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন।স্কুল-পাঠশালা তার ভালো লাগত না। এরচেয়ে গান-বাজনা যাত্রা-থিয়েটারই তাকে বেশি টানত। শখ করে একটা গ্রামোফোনও কিনেছিলেন তিনি।

কোনোমতে স্কুল শেষ করলেন তিনি। তারপর আর পড়াশুনা করা হল না। গান-বাজনা করেই দিন কেটে যাচ্ছিল। হঠাৎ করেই তার বাবা-মা মারা গেলেন। একাকী হয়ে পড়লেন তিনি। বাবা-মার অভাব ঘোচাতে যেন আরও বেশি করে গান-বাজনা নিয়ে মেতে উঠলেন। বন্ধুদের নিয়ে গঠন করলেন যাত্রা আর জারিগানের দল। খরচ যোগাতে জমি বিক্রি করতে শুরু করলেন।গ্রামেরই আরেক অবস্থাপন্ন গৃহস্থ ঘরের মেয়ে তোতাল বিবি। তার সঙ্গেই নূর মোহাম্মদের বিয়ে হল। তখন থেকে তিনি শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন। তার সন্তান-সন্ততিও হল। কিন্তু কোনো কাজ না করে শুধু জমি বিক্রি করে আর কতদিন চলা যায়? এবার তাই তিনি চাকরির খোঁজে বের হলেন। সুঠাম দেহ আর অসীম সাহসের পরিচয় দিয়ে একবারেই ভর্তি হয়ে গেলেন ইপিআর (ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস) বাহিনীতে। সেদিন ছিল ১৯৫৯ সালের ১৪ মার্চ। প্রায় ৯ মাস ধরে সামরিক ট্রেনিং নিলেন।

তারপর তাকে দিনাজপুরে পোস্টিং দেওয়া হল।তার ই পি আর ক্রমিক নম্বর ছিল ৯৪৫৯। ১৫ ই নভেম্বর ১৯৬৪, জন্মগ্রহণ করে তার দ্বিতীয় সন্তান শেখ মোঃ গোলাম মোস্তফা কামাল। কিছুদিন পরেই আত্মীয়-স্বজনদের অনুরোধে বিয়ে করেন মৃত শ্যালকের স্ত্রী ফজিলাতুন্নেসাকে। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে দিনাজপুর সেক্টরে যুদ্ধরত অবস্থায় আহত হন। যুদ্ধ শেষে তিনি 'তকমা-ই-জং' ও 'সিতারা-ই-হারব' মেডেল লাভ করেন। মার্চ ১৯৭১এ তিনি ছুটি ভোগরত ছিলেন গ্রামের বাড়িতে। পাকিস্তানী বাহিনীর গণহত্যার খবর পেয়ে অসুস্থ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গায় ইপিআর-এর ৪নং উইং এ নিজ কোম্পানির সাথে যোগ দিয়ে বিদ্রোহ করেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। সেক্টর গঠন হলে তাদের উপর ন্যস্ত হয় ৮নং সেক্টরের দায়িত্ব। তিনি নিয়োগ পান বয়রা সাব-সেক্টরে। এই সাব-সেক্টরের অধীনে গোয়ালহাটি, ছুটিপুর ঘাট, ছুটিপুর সেনাক্যাম্প, বরনী আক্রমণে অংশ নেন এবং বীরত্ব প্রদর্শন করেন। বরনীতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার জীবন রক্ষা করেন।

১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর এক সরকারি গেজেট প্রকাশিত হয়। আর তাতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানিয়ে ভূষিত করা হল কয়েকটি খেতাবে। সবচেয়ে গৌরবময় খেতাব হল বীরশ্রেষ্ঠ।আর সেই বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবেই ভূষিত হন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ।

এই মৃত্যুঞ্জয়ী বীরের প্রতি জানাই সশ্রদ্ধ সালাম ও অভিবাদন।

আমরা তোমাদের ভুলবোনা!

রাজেশ পাল : আইনজীবী, প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কর্মী

আপনার মন্তব্য

আলোচিত