২৭ মে, ২০২০ ১২:১৭
একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সুরকার, সংগীত পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা সুজেয় শ্যাম সুজেয় শ্যাম করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। মঙ্গলবার (২৬ মে) রাতে তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে মেয়ে লিজা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বাবার ফুসফুসে সমস্যা রয়েছে। এছাড়াও উনার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তাই চিকিৎসক মনে করছেন তিনি করোনা আক্রান্ত হতে পারেন। আজকে দুপুরে হাসপাতাল থেকে তার করোনার নমুনা নেওয়া হবে। তারপর আমরা জানতে পারব আসলে উনি করোনা পজিটিভ নাকি নেগেটিভ।
১৯৪৬ সালে সিলেটে জন্ম নেওয়া সুজেয় শ্যামকে সংগীতে অবদানের জন্য ২০১৮ সালে একুশে পদক দেওয়া হয়। তার আগে ২০১৫ সালে শিল্পকলা পদক পান তিনি।
দশ ভাই বোনের মধ্যে সুজেয় শ্যাম ষষ্ঠ। তার বাবা, মা ও ভাই বোনেরাও বেতারে গান করতেন।
গিটার বাদক ও শিশুতোষ গানের পরিচালক হিসেবে ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান চট্টগ্রাম বেতারে কর্মজীবন শুরু হয় সুজেয় শ্যামের।পরে তিনি ঢাকা বেতারে যোগ দেন।
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে থাকাকালে মোট নয়টি গানে সুর করেছিলেন সুজেয় শ্যাম, যেগুলো একাত্তরের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত গাওয়া হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
এর মধ্যে রয়েছে ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’, ‘ওরে শোনরে তোরা শোন’, ‘রক্ত চাই রক্ত চাই’, ‘আজ রণ সাজে বাজিয়ে বিষাণ’। ছিল বিশ্বপ্রিয়র লেখা ‘আহা ধন্য আমার’, কবি দিলওয়ারের লেখা ‘আয়রে চাষী মজুর কুলী’।
তার সুর করা গানের মধ্যে ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি’ এবং ‘বিজয় নিশান উড়ছে ওই’ গান দুটি যে কোনো জাতীয় দিবসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে।
১৯৬৯ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন সুজেয় শ্যাম। ঢাকাই চলচ্চিত্র সংগীতে অবদানের জন্য তিনবার শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
বাংলাদেশ বেতারের প্রধান সঙ্গীত প্রযোজক পদ থেকে ২০০১ সালে অবসরে যান সুজেয় শ্যাম।
এরপর ২০০৬ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ বেতারে প্রচারিত ৪৬টি গানের সংকলন নিয়ে ‘স্বাধীন বাংলা বেতারের গান’ শিরোনামে একটি অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা করেন তিনি।
এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে আরও ৫০টি গানের সংকলন নিয়ে ‘স্বাধীন বাংলা বেতারের গান-২’ নামে আরেকটি অ্যালবামের সঙ্গীত পরিচালনা করেন শিল্পী।
‘টুনাটুনি অডিও’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গীত পরিচালক হিসেবেও কাজ করছেন তিনি।
আপনার মন্তব্য