সিলেটটুডে ডেস্ক

০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:২০

ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে দুই ভাইকে ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যার অভিযোগ, মামলা

চন্দনাইশের দুই ভাইকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি ও পরে ‘ক্রসফায়ারে’ হত্যার অভিযোগে ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। নিহত আমানুল হক ফারুক ও আজাদুল হক আজাদের ছোট বোন রিনাত সুলতানা শাহীন বুধবার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

চট্টগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমীর আদালত মামলাটি গ্রহণ করে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের এএসপিকে (আনোয়ারা) তদন্ত করে আগামী ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী জিয়া আহসান হাবীব জানান, বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের (বিএইচআরএফ) পক্ষ থেকে বিনা খরচে বাদীকে আইনি সহায়তা দিচ্ছেন তিনি। আট লাখ টাকা না পেয়ে দুই ভাইকে ক্রসফায়ার দেওয়া হয়েছে বলে বাদী অভিযোগ এনেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমার ভাই আজাদ ৭ বছর বাহরাইনে ছিলেন। তিনি দেশে আসার পর তার থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ লুট করতে তাকে প্রথমে গুম করে, পরে টাকা না পেয়ে ক্রসফায়ারে হত্যা করেন।’ আজাদ অবিবাহিত, আর ফারুকের আট বছরের একটি মেয়ে ও আট মাস বয়সী একটি ছেলে রয়েছে। পেশায় নার্স এ নারী এ দুই ভাই হত্যার বিচার চান।

বিজ্ঞাপন

প্রদীপ ছাড়াও এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন টেকনাফ থানার উপ-পরিদর্শক ইফতেখারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাজহারুল, দ্বীন ইসলাম ও আমজাদ। এ ছাড়া স্থানীয় চন্দনাইশ থানার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও এই হত্যায় জড়িত বলে দাবি করে তাদের বিরুদ্ধেও তদন্তের আবেদন করেন বাদী।

বাদীর অভিযোগ, চট্টগ্রাম চন্দনাইশ উপজেলার দুই সহোদরকে তুলে নিয়ে গত ১৬ জুলাই কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে হত্যা করেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। চন্দনাইশ থানার ওসি কেশব চক্রবর্তীর যোগসাজশে ওই দুই ভাইকে তুলে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছিলেন নিহতদের স্বজনরা।

বাদী জানান, গত ১৩ জুলাই প্রথমে বাহরাইন ফেরত ছোট ভাই আজাদ ‘নিখোঁজ’ হয়। এর দুই দিন পর তার বড় ভাই ফারুককে বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজের সামনের ভাড়া বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় চন্দনাইশ থানা পুলিশ। সেদিন সন্ধ্যায় ফারুককে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়। কয়েক ঘণ্টার মাথায় ফারুক ও আজাদের মায়ের মোবাইলে একটি নম্বর থেকে ফোন করে অজ্ঞাতপরিচয় একজন বলেন, ‘তোর দুই ছেলে আমাদের কাছে আছে। দুই ছেলেকে জীবিত ফেরত চাইলে রাতের মধ্যে আমাদের ৮ লাখ টাকা দিতে হবে। না হলে সকালে ছেলের লাশ পাবি।’ একথা বলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। যেমন কথা তেমন কাজ। পর দিন সকাল ৮টা নাগাদ টেকনাফ থানা থেকে তাদের মায়ের নম্বরে ফোন করে জানানো হয়, দু’জন টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত