সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:৪৪

দীপন হত্যা মামলার রায় ১০ ফেব্রুয়ারি

ছয় বছর আগে জাগৃতি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী ফয়সল আরেফিন দীপনকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় সেনাবাহিনীর চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ আট জঙ্গির সাজা হবে কি না, তা জানা যাবে ১০ ফেব্রুয়ারি।

রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রোববার ঢাকার সন্ত্রাস দমন বিশেষ ট্রাইবুনালের বিচারক মজিবুর রহমান রায়ের এ তারিখ ঠিক করে দেন।

জিয়াসহ দুই আসামিকে পলাতক দেখিয়ে বিচার শুরুর এক বছর তিন মাসের মাথায় আলোচিত এ মামলা রায়ের পর্যায়ে এল।  

যুক্তিতর্ক শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের ‘সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড’ চেয়েছে। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে ‘পারেনি’। আসামিরা ‘খালাস পাবেন’ বলে আশা করছেন তারা।

এ মামলার আট আসামি হলেন- বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক জিয়া, আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে আবদুল্লাহ , মইনুল হাসান শামীম ওরফে সামির ওরফে ইমরান, আবদুর সবুর সামাদ ওরফে সুজন ওরফে রাজু, খাইরুল ইসলাম ওরফে জামিল ওরফে জিসান, আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিব ওরফে সাজিদ ওরফে শাহাব, মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন ওরফে শাহরিয়ার ও শেখ আবদুল্লাহ ওরফে জুবায়ের ওরফে জায়েদ ওরফে জাবেদ ওরফে আবু ওমায়ের। তারা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সদস্য বলে পুলিশের ভাষ্য।

বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের ছদ্মবেশ এই রকম হতে পারে বলে পুলিশের ধারণা (ফাইল ছবি)বরখাস্ত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের ছদ্মবেশ এই রকম হতে পারে বলে পুলিশের ধারণা (ফাইল ছবি)আসামিদের মধ্যে জিয়া ও আকরাম পলাতক। বাকিরা গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এ আদালতে তাদের বিচার শুরু হয়েছিল।

লেখক-প্রকাশক, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের উপর ধারাবাহিক হামলার মধ্যে ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে নিজের প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জাগৃতির কার্যালয়ে আক্রান্ত হন দীপন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হকের ছেলে দীপনকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।

দীপনকে যে বছর হত্যা করা হয়েছিল, সেই ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলা চলার সময় টিএসসিতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়কে। এরপর কয়েক মাসের ব্যবধানে নিলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় নিলয়সহ কয়েকজন ব্লগার-লেখককে হত্যা করা হয়।

এরপর ৩১ অক্টোবর আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে দীপনকে হত্যার দিন একই সময়ে লালমাটিয়ায় আরেক প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে ঢুকে এর কর্ণধার আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুলসহ তিনজনকে একই কায়দায় কোপানো হয়েছিল। তবে টুটুলসহ তিনজন বেঁচে যান।

জাগৃতি ও শুদ্ধস্বর দুই প্রকাশনা থেকেই বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশিত হয়। দুটি ঘটনাতেই জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের নাম আসে।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই জঙ্গি দলের সামরিক কমান্ডারের দায়িত্বে থাকা জিয়ার পরিকল্পনা এবং নির্দেশেই দীপনকে হত্যা করা হয়।

ফয়সল আরেফিন দীপনকে হত্যার পর ওই দিনই তার স্ত্রী রাজিয়া রহমান শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা করেন। তিন বছর পর ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার ফজলুর রহমান। অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৬ জনকে সাক্ষী করা হয়।

২০১৯ সালের অক্টোবরে অভিযোগ গঠনের পর শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৩ জনের সাক্ষ্য শুনেছে আদালত। কারাগারে থাকা আসামিরা গত ৫ জানুয়ারি আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান।

আসামিদের মধ্যে পলাতক জিয়ার বিরুদ্ধে অভিজিৎ হত্যা মামলাসহ আরো বেশ কয়েকটি মামলা মামলা রয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত