সিলেটটুডে ডেস্ক

১৯ জুলাই, ২০২১ ১৬:১০

আম উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে ৭ম

আমের উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের সঠিক পদক্ষেপ এবং দেশের দেশের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঠিক সিদ্ধান্ গ্রহণের ফলেই আমের উৎপাদন এবং রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে। আম উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ৭ম অবস্থানে রয়েছে। বিগত অর্থবছরে বাংলাদেশের আম রপ্তানির পরিমাণ ছিল ২৭৯ টন। চলতি অর্থবছরে ৩ গুণ বেড়ে সেটি দাঁড়িয়েছে ৭৯১ টনে।

বিদেশের বাজারে আম রপ্তানির পূর্বশর্ত অনুযায়ী ভাল কৃষি পদ্ধতি (জিএপি) বাস্তবায়নের বিষয়ে তেমন ওয়াকিবহাল ছিলেন না সংশ্লিষ্টরা। তাই বেশ কয়েক বছর ধরে এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সম্ভাবনা অনেকাংশেই অপরিবর্তিত রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলো যেমন ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড বেশ কয়েকটি মূল রপ্তানি বাজারের দখল ভালভাবে নিয়েছে এবং আম রপ্তানির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে রপ্তানি আয় অর্জন করছে।

চলতি বছরে বেশিরভাগ মিষ্টি এবং সুস্বাদু প্রজাতির ফলের বার্ষিক জাতীয় উৎপাদন প্রায় দেড় মিলিয়ন টনে পৌঁছানোয় বাংলাদেশ এখন আম রপ্তানির মাধ্যমে বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে কাজ করছে। সেজন্যে বাংলাদেশ গ্রহণ করেছে বিরাট পরিকল্পনাও।

গতকাল কৃষি মন্ত্রণালয় অংশীদারদের সাথে একটি বৈঠক করে, যাতে তাজা আম ও আম পানীয় রপ্তানিকারক সংস্থার কয়েকজন প্রতিনিধিও এ বৈঠকে যোগ দিয়েছিল। এ বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল আগামী বছরগুলিতে বাংলাদেশ কীভাবে আমের রপ্তানি আরও বাড়াতে পারে।

ভার্চুয়াল আলোচনায় যোগ দিয়ে কৃষি মন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক জানান, তার মন্ত্রণালয় রপ্তানিকারকদের সব ধরণের সহায়তা প্রদানের জন্য প্রস্তুত এবং শীঘ্রই তিনটি মেশিন ক্রয় করেছে, যার মাধ্যমে রপ্তানিকারকরা "বাষ্প তাপ" ট্রিটমেন্ট ব্যবহার করতে সক্ষম হবেন। আমের রপ্তানির জন্য এটি পূর্বশর্ত। তাছাড়া, বিমানবন্দর কার্গো গ্রামে আম রপ্তানিকারকদের যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সেগুলো দেখার ব্যাপারেও তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।

মন্ত্রী ও মন্ত্রনালয়ের সচিব দুজনেই জানান, তারা শীঘ্রই খামার উৎপাদনের সকল পর্যায়ে জিএপি প্রবর্তন করবে, যাতে আমের সমস্ত স্যানিটারি, ফাইটোস্যান্ট্রি এবং কোয়ারেন্টাইন প্রোটোকল বজায় রাখতে, প্রক্রিয়াজাত করতে এবং প্যাকেটজাত করা যায়।

বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে আরও বেশি আমের রপ্তানির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বারের নেতা মামুনুর রশীদ বলেন, “মূল আমের রপ্তানিকারক দেশ হিসাবে ভারত ও পাকিস্তান যুক্তরাজ্যের বাজারে নিজেদের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছে। তবে আমার ধারণা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের সম্ভাব্য এক হাজার টন আমের চাহিদা থাকতে পারে।"

মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, প্রতি বছর জাপান ৭ হাজার টন আম আমদানি করে। এর মধ্যে কিছু দক্ষিণ এশিয়ার দেশ থেকে আসলেও বাংলাদেশ থেকে আসে না। তাদের ভাষ্যমতে,  সম্প্রতি ঢাকায় জাপানের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের ভাল আমের জাতগুলির প্রতি গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং মানের সাথে আপস না করা হলে সেগুলি তার দেশে রপ্তানি করা যায় বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আমের বাণিজ্যের সাথে জড়িত প্রাক্তন সরকারি সচিব আশোক মাধব রায় জানান, তারা সম্প্রতি ম্যানচেস্টার এবং লন্ডনে আমের মেলা আয়োজন করেছে এবং ফলের জন্য উল্লেখযোগ্য সংখ্যক স্পট অর্ডার পেয়েছে।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত