সিলেটটুডে ডেস্ক

৩১ মার্চ, ২০২৩ ১৭:৪৪

আবার বাড়ল ব্রয়লারের দাম

দুদিনের মতো ২০০ টাকার ঘরে থাকার পর ব্রয়লার মুরগির দাম আবার বেড়েছে। শুক্রবার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়।

গত বেশ কিছু দিন ধরে দেশের বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম নিয়ে ‘অরাজকতা’ চলছিল। ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা মধ্যে প্রতি কেজি ব্রয়লারের দাম হাঁকিয়েছিলেন বিক্রেতারা। তবে এর কয়েক দিন পরই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করা দেশের ‘বিগফোর’ খ্যাত চারটি করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে তলব করলে দাম কিছুটা কমে ২০০ টাকার ঘরে এসেছিল।

ক্রেতারা বলছেন, ব্যবসায়ীরা চাইলেন দাম বাড়ে, তারা চাইলেই দাম কমে। এই ‘সিন্ডিকেট’ থেকে মুক্তি চান ক্রেতারা।

শুক্রবার রাজধানীর বাড্ডা, কারওয়ান বাজার, নাখালপাড়া কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লারের দাম গত সপ্তাহে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল, ভোক্তার তলবের পর চার প্রতিষ্ঠান আশ্বাস দেয় খামার পর্যায়ে ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা বিক্রি করার। সেই আশ্বাসের পর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। মিলগেটে বিক্রি হয় ১৫৫ টাকায়। তবে তার দুদিন পরই এই দাম আরেকবার লাফ দেয়। বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। এ ছাড়া লেয়ার মুরগি ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হতে দেখা গেছে ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা কেজিতে।

বাড্ডা বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে আসা আনোয়ার হোসেন সবুজ বলেন, ‘দেখলাম ব্রয়লারের দাম একটু কমেছে। এখন বাজারে এসে দেখি আবার ২০ টাকা কেজিতে বেড়ে গেছে। দুই দিনের ব্যবধানে কেজি ৬০-৮০ টাকা কমিয়ে তারা কীভাবে ২০০ টাকা বিক্রি করছিল? এখন তাহলে আবার কেন কেজিতে ২০ টাকা বাড়িয়ে দিল? তাহলে তো বোঝাই যাচ্ছে এগুলোর দাম তারা নিজের ইচ্ছেমতো বাড়ায় ও কমায়। এসব সিন্ডিকেট থেকে মুক্ত হওয়া দরকার।’

এদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা কেজিতে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০ থেকে ১১৫০ টাকা কেজিতে। আর ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ টাকা কেজিতে।

গত সপ্তাহের মতোই প্রকারভেদে ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি, বুটের ডালের বেসন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়, খেসারি ডালের বেসন ১০০ টাকা, যা গত সপ্তাহেও একই দাম ছিল। মোটা মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা, আর চিকন মসুর ডাল ১৪৫ টাকায় অপরিবর্তিত দরে বিক্রি হচ্ছে। চিনির মূল্য গত সপ্তাহের সমান ১২০ টাকা কেজি, মুড়ি ৮০ টাকা, বেগুনের দর ৮০ টাকা, আলুর কেজি ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবুর দাম কিছুটা কমে প্রকারভেদে হালি ৩০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সবজির মধ্যে সবগুলোর দামই গত সপ্তাহের তুলনায় অপরিবর্তিত রয়েছে। করলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায় এবং শিম বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। প্রতি কেজি পটলের দাম ৭০ টাকা, ঝিঙ্গা ৭০ টাকা, আলু ২০-২৫ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকার মধ্যে রাখা হচ্ছে। লাউ প্রকারভেদে প্রতিটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মাছের বাজারও স্থিতিশীল

বাজারে দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের মাছের দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। রুই আকারভেদে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা প্রতি কেজিতে। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়।

দাম অপরিবর্তিত থাকার ব্যাপারে নাখালপাড়া কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী সোহেল হোসাইন বলেন, ‘রোজা এলে সবকিছুর দামই একটু বাড়তির দিকে থাকে। তবে রোজার কয়েক দিন যাওয়ার পর থেকেই দাম কমা শুরু করে। তাই গত সপ্তাহে যেসব পণ্যের দাম কমেছিল, সেগুলো আগের দরেই আছে। রোজার আরও কিছুদিন পর আরেকটু কমতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘এখন কমা বা আগের দাম থাকলেও ঈদের কয়েক দিন আগে আবার কিছুটা দাম বাড়বে। বুঝেনই তো, মানুষ ঈদের আগে একটু কেনাকাটার পরিমাণ বাড়িয়ে দেন। তাই চাহিদাও বাড়ে, দামও বাড়ে। তবে দাম কম থাকলে আমাদের বেচাকেনা বেশি হয়।’

আপনার মন্তব্য

আলোচিত