সিলেটটুডে ডেস্ক

১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ২০:০৮

খাদ্য-পুষ্টি নিশ্চিত করতে গবেষণায় অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী

খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে গবেষণায় অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে আগে খাদ্য নিরাপত্তা, তারপর পুষ্টি নিশ্চিত করা।… এবং আমরা সেই পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা গবেষণায় অগ্রাধিকার দিয়েছি, যেহেতু তা ছাড়া উচ্চ ফলনশীল জাত উৎপাদন সম্ভব নয়।’

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে আয়োজিত প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনী-২০২৪-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এত খাল-বিল, নদী-নালার দেশ আমাদের, দেশের মানুষের কেন আমিষের কষ্ট হবে! আমাদের আমিষ আমরাই তৈরি করব, আমাদের দেশের মানুষকে দেবো। আমাদের প্রথম লক্ষ্য হলো খাদ্য নিরাপত্তা দেওয়া। দ্বিতীয় হলো পুষ্টির নিশ্চয়তা দেওয়া। এখন আমরা সেই পদক্ষেপই হাতে নিয়েছি।

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেছে এবং সামুদ্রিক সম্পদকে কাজে লাগাতে ব্লু ইকোনমির পরিকল্পনাও ঘোষণা করেছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বাংলাদেশ বিশাল সমুদ্রসীমা অর্জন করেও গভীর সমুদ্র থেকে সম্পদ আহরণে সক্ষম হয়নি।

তিনি বলেন, ‘কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আমরা গভীর সমুদ্র থেকে সম্পদ আহরণ করতে সক্ষম হয়নি। আসলে আমরা এ কাজের জন্য কোনো উদ্যোক্তা পাচ্ছি না। এটাই বাস্তবতা।’

সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য ভর্তুকি প্রদানসহ এ বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এছাড়া দেশে আমিষের উৎপাদন বাড়াতে আমরা ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।’

তিনি আরও গবেষণামূলক কাজের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, কারণ গবেষণা ছাড়া কোনো দেশ এগিয়ে যেতে পারে না।

প্রধানমন্ত্রী খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্যশস্য এবং মাছ ও মাংসসহ সব ধরনের পণ্যের ধারণক্ষমতা বাড়ানোর ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

মানুষের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে তিনি মৎস্য ও গবাদিপশুকে নিরাপদ খাদ্য সরবরাহে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।

দেশে পোল্ট্রি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি বলেন, ‘আমি চাই বেসরকারি খাত এগিয়ে আসুক। বেসরকারি খাতকেই উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে চাই। তাদের সবরকম সহযোগিতা করতে চাই। এর ফলে আমার দেশের মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে। আমরা তাই চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বেসরকারি খাতকেই বেশি উৎসাহিত করতে চাই। তাদেরকেই বেশি সুবিধা দিতে চাই। কারণ এগুলো সব সরকারিভাবে হয় না। এটা বেসরকারি খাতে হলে তাতে কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়। আমাদের শিক্ষিত যুবসমাজ এক্ষেত্রে এগিয়ে আসুক সেটাই আমরা চাই।

তার সরকারের দেওয়া সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে যুব সমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে ওঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু একটা পাস করে চাকরির পেছনে না ছুটে যুব সমাজ যদি নিজের উদ্যোগে একটু ব্যবসা-বাণিজ্য করে তাহলে কিন্তু আমরা যথেষ্ট এগিয়ে যেতে পারবো। এসব ক্ষেত্রে আমাদের যুব সমাজকে এগিয়ে আসার জন্য আরও উৎসাহিত করতে হবে। যাতে কখনো আমাদের কারো উপর নির্ভরশীল হতে না হয়। খাদ্য নিরাপত্তার সাথে সাথে আমাদের নিজস্ব পুষ্টির ব্যবস্থা আমরা নিজেরাই করতে পারি সে বিশ্বাস আমার আছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমরা ৪০ ভাগের উপরে পেঁয়াজ উৎপাদন করতে পারি। আমরা কারও মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে চাই না। প্রতিটি পণ্য আমরা নিজেরাই উৎপাদন করব।

তার সরকার খামারিদের সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে উৎসাহিত করে যাচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি কৃষি উৎপাদন এবং এর প্রক্রিয়াজাতকরণে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি প্যাকেজিংয়ের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ করার নির্দেশ দেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ কাউন্সিলের (বিপিআইসি) যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন, প্রাণিসম্পদ সচিব সেলিম উদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত