সিলেটটুডে ডেস্ক

০৪ এপ্রিল, ২০১৬ ২১:০৫

বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ নিয়ে সংঘর্ষ, নিহত ৪

চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিপক্ষের লোকদের সঙ্গে পুলিশ ও পক্ষের লোকদের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৪ জনের নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে।

সোমবার বেলা ৩টার দিকে উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকার এ ঘটনায় তিনজন নিহত হওয়ার কথা শুনতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) হাবিবুর রহমান।

তিনি বলেন, “তিনজন নিহত হওয়ার কথা শুনেছি। কিন্তু কোনো ডেডবডি পাইনি; সন্ধান চলছে।”

পরবর্তীতে আরও একজন মারা যান। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা ও সংবাদদাতারা বলছেন, এই সংঘর্ষে পুলিশের সঙ্গে বিদ্যুৎকেন্দ্রের পক্ষের লোকজনও অংশ নেয়।

বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সাতকানিয়া সার্কেলের এএসপি একেএম এমরান ভুইয়া।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্র জানায়, কয়লাকেন্দ্রের বিরোধিতা করে স্থানীয় একটি পক্ষ সোমবার ‘বসতভিটা রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেয়। এর পাল্টা হিসেবে তাদের বিরোধীপক্ষও সমাবেশ ডাকে।

এএসপি এমরান বলেন, উভয়পক্ষে সংঘর্ষের আশঙ্কায় উপজেলা প্রশাসন ওই এলাকায় সমাবেশের ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে।

“দুপুরে ওই এলাকায় পুলিশ অবস্থান নিলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধীরা পুলিশের ওপর হামলা করে। পুলিশ চলে আসতে চাইলে রাস্তা অবরোধ করে হামলা চালায় তারা।”

এসময় বিক্ষুব্ধরা পুলিশকে লক্ষ করে গুলি চালায় দাবি করে এমরান ভুইয়া বলেন, “পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। দু’পক্ষের গোলাগুলিতে সাত পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।”

বাঁশখালী উপজেলার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. রেজাউল হক বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আহত ১৯ জনকে ভর্তি করা হয়; তাদের অধিকাংশই পুলিশ।

আহতদের মধ্যে এক আনসার সদস্যসহ তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানান।  

স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান, গত রোববার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ স্থানীয় সাতজনকে গ্রেপ্তার করে। এর প্রতিবাদেই সোমবার সমাবেশ ডেকেছিল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধীপক্ষ।

গণ্ডামারা ইউনিয়নের বড়ঘোনায় ‘১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র’ যৌথভাবে নির্মাণ করছে এস আলম গ্রুপ ও চীনের একটি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে বিদ্যুকেন্দ্রটির ভূমি অধিগ্রহণ চলছে।  

ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে স্থানীয়রা ওই কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করছে। তাদের অভিযোগ, এস আলম গ্রুপ পুর্নবাসনের সুযোগ না দিয়ে জোর করে জমি অধিগ্রহণ করছে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হলে বাঁশখালীর গণ্ডামারা ইউনিয়নের লবণ ও চিংড়ি চাষে জড়িতরা বেকার হয়ে পড়বেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।

সূত্র: বিডিনিউজ২৪ডটকম

আপনার মন্তব্য

আলোচিত