আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান অসুস্থ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে তাঁকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয় বলে জানান কামরুল হক। শুক্রবার তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

একান্ত সহকারী বলেন, ‘শুক্রবার ফুসফুসের সমস্যার জন্য রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় স্যারকে। পরে শনিবার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় তাঁকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।’

কামরুল হক আরো বলেন, ‘আমরা স্যারকে রোববার এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাব। সেখানকার মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’

“স্যারের অবস্থা সংকটাপন্ন, ল্যাবএইড হাসপাতালের সিসিইউতে রাখা হয়েছে।”, বলেন কামরুল।

রক্তে হিমোগ্লোবিন স্বল্পতাজনিত অসুস্থতায় ভুগছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিক সুরঞ্জিত।

এদিকে, শনিবার রাতে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক জানিয়েছেন, ‘সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত লাইফ সাপোর্টে আছেন, তাই আগামীকাল তাঁকে বিদেশ নেওয়ার কথা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না।’

এর আগে গত মে মাসে শ্বাসকষ্ট নিয়ে এই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মাঝখানে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালেও চিকিৎসা নেন তিনি।

সত্তরের প্রাদেশিক পরিষদে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ছিলেন অন্যতম কনিষ্ঠ সদস্য; স্বাধীন দেশের প্রথম সংসদসহ চার দশকের প্রায় সব সংসদেই নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ষাটের দশকের উত্তাল রাজনীতি থেকে উঠে আসা বামপন্থী এই নেতা বর্তমানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য।

সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জন্ম ১৯৪৬ সালে সুনামগঞ্জের আনোয়ারাপুরে। প্রথম জীবনেই বামপন্থী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়া সুরঞ্জিত দ্বিতীয়, তৃতীয়, পঞ্চম, সপ্তম, অষ্টম, নবম এবং দশম জাতীয় সংসদসহ মোট সাতবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

তিনি ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টার দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর তিনি রেলমন্ত্রী হন।

সুরঞ্জিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেন। সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি করার পর আইন পেশায় যুক্ত হন তিনি। আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিলেরও সদস্য।