সিলেটটুডে ডেস্ক

৩১ মার্চ, ২০১৭ ১৬:০১

র‍্যাব গোয়েন্দা প্রধানের চোখ দিয়ে স্প্লিন্টার ঢুকে আঘাত করে মস্তিষ্কে

সিলেট মহানগরীর দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকায় জঙ্গিবিরোধী অভিযানের সময় বোমা বিস্ফোরণের পর একটি স্প্লিন্টার চোখ দিয়ে ঢুকে মস্তিষ্কে আঘাত হানে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব) গোয়েন্দা শাখার প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদের। আর এতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

আজাদের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

সকাল ৯টায় ময়নাতদন্ত শুরু হয়। ১০টায় ময়নাতদন্ত শেষ হওয়ার পর এ বিষয়ে কথা বলেন সোহেল মাহমুদ।

ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক জানান, স্প্লিন্টার র‍্যাবের গোয়েন্দাপ্রধানের বাঁ চোখ দিয়ে ঢুকে মস্তিষ্কে আঘাত করে। এ কারণেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মস্তিষ্কে একটি স্প্লিন্টার পাওয়া গেছে। শরীরে আর কোথাও তেমন আঘাতের চিহ্ন নেই।

ময়নাতদন্ত শেষে র‍্যাব সদস্যরা আজাদের লাশ নিয়ে ঢামেক হাসপাতাল মর্গ ছাড়েন।

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় আবুল কালাম আজাদের।

গত ২৫ মার্চ সিলেটের শিববাড়িতে জঙ্গি আস্তানার কাছে বোমা বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হন আবুল কালাম আজাদ। ওই বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত হন। আহত হন ৪০ জন। লে. ক. আজাদ সহ মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল সাত-এ।

আহত আবুল কালাম আজাদকে দ্রুত সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় সিএমএইচে আনা হয়। পরদিন ২৬ মার্চ উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে।

গত ২৯ মার্চ লেফটেন্যান্ট কর্নেল আজাদকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। এর পর থেকে তিনি ঢাকার সিএমএইচে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

আবুল কালাম আজাদের প্রথম জানাজা বাদ জুমা সেনানিবাস কেন্দ্রীয় মসজিদে এবং দ্বিতীয় জানাজা র‍্যাব সদর দপ্তরে বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত হয়। পরে বনানীতে ঢাকা সামরিক কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে।

মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ১৯৭৫ সালের ৩০ অক্টোবর চাঁপাইনবাবগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর আজাদ ৩৪তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কমিশন লাভ করেন।

এরপর তিনি ৬ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে আইও, অ্যাডজুটেন্ট এবং কোয়ার্টার মাস্টারসহ নানা দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সেনাসদর, ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন এবং ১৯ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে দায়িত্ব পালন করেছেন।

২০১১ সালের ২৬ অক্টোবর র‍্যাব-১২ এর একজন কোম্পানি কমান্ডার হিসেবে এলিট ফোর্স র‍্যাবে আসেন তিনি। ওই বছর শেষেই তিনি র‍্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ে যোগ দেন। দুই বছর উপ-পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ২০১৩ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের পরিচালক হন মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত