সিলেটটুডে ডেস্ক

২৫ জুলাই, ২০১৭ ১২:০৫

দেশকে কী দিতে পেরেছি সেটাই বড় কথা, ডিসি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন শুরু হয়েছে। নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে মঙ্গলবার সকালে ডিসি সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতি বছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ২০০৯ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত এই ৮ বছর সরকারে থেকেছি তাই উন্নয়ন হয়েছে। আমরা দেশকে কী দিতে পেরেছি সেটাই বড় কথা। উন্নয়নের ধারা বজায় থেকেছে।

তিনি বলেন, বিএনপি জামায়াতের লক্ষ্য ছিল দেশকে পরনির্ভরশীল করে রাখা। আর নিজেদের বিত্ত-বৈভব বৃদ্ধি করা হলো তাদের নীতি। এখন আমাদের খাদ্যে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ সময় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বাধীন দেশ। আমার যে উন্নতি করতে পারি তা প্রমাণ করেছি। তিনি বলেন, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং ছিল বিএনপি-জামায়াতের কাজ।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ থেকে মিত্র বাহিনীকে ফেরত নিতে হয়েছে। পৃথিবীতে একটিমাত্র ঘটনা যা বঙ্গবন্ধুর জন্য হয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন চেতা ছিলেন, ইন্দিরা গান্ধীও স্বাধীন চেতা ছিলেন।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসকদের প্রস্তাবিত স্লোগান 'সুশাসনে গড়ি সোনার বাংলাদেশ'র প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমরা সবাই একসঙ্গে সঠিক উপায়ে কাজ করলে দেশ উন্নত হবে।

এসময় ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার জন্য মাঠ পর্যায়ে উন্নয়ন কাজের সঠিক তদারকি ও ব্যবস্থাপনার প্রতি গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভাষণে বন্যার কারণে গৃহহীন হয়ে পড়া মানুষের সঠিক তালিকা প্রণয়নের নির্দেশনা দেন তিনি। তিনি বলেন, সঠিক তালিকা করুন। গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ করে দেবে সরকার।

অনুষ্ঠানে মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন মাঠ প্রশাসনের ৬৪ ডিসি ও আট বিভাগীয় কমিশনার। সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে মাঠপর্যায়ে নানা প্রতিবন্ধকতা তারা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন।

এরআগে সোমবার সচিবালয়ে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০১৭’ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে সরকারের নীতি, দর্শন, প্রাধিকার- এগুলো নিয়ে প্রতি বছর বৈঠক হয়।

এবার প্রাপ্ত প্রস্তাব ৩৪৯টি। এগুলো ৫২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কিত। বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকদের কাছ থেকে প্রস্তাবগুলো এসেছে বলে সোমবার জানিয়েছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

অনুষ্ঠানসূচির মধ্যে রয়েছেন প্রথম দিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে এ অধিবেশন হবে। এরপর ২৬ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মহামান্য রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও দিক-নির্দেশনা গ্রহণ করবেন জেলা প্রশাসকরা। এটা হবে বঙ্গভবনের দরবার হলে।

তিনদিনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা ১৮টি কার্য অধিবেশনে জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেবেন। কার্য অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

এবারের ডিসি সম্মেলনে মোট ২২টি অধিবেশন থাকবে। এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ অংশগ্রহণকারী ৫২টি মন্ত্রণালয়ের ১৮টি কার্য অধিবেশন থাকবে। এতে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা অংশ নেবেন। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে অনুষ্ঠিত হবে সমাপনী অধিবেশন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত