সিলেটটুডে ডেস্ক

২৭ জুলাই, ২০১৭ ১২:৪১

ক্ষমতাবানরা দুর্নীতি করে, দুদকের হটলাইন ১০৬ চালুকালে অর্থমন্ত্রী

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হটলাইন ১০৬ চালু হয়েছে। এখন থেকে এই নম্বরে কল করে বিনা খরচে দুদককে দুর্নীতির তথ্য, অভিযোগ জানানো যাবে। ২৪ ঘণ্টাই চালু থাকবে এ হটলাইন।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে হটলাইনটি উদ্বোধন করেন।

‘হটলাইন ১০৬’ উদ্বোধন করে অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা ক্ষমতাবান, তারাই দুর্নীতি করে। এ ছাড়া সবাই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত।

তিনি বলেন, “আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। দুর্নীতিতে আমরা সবাই নিমজ্জিত। সবাই যদি নিমজ্জিত না থাকত তাহলে দুর্নীতি হত না। যাদের ক্ষমতা আছে তারাই দুর্নীতি করে। যদি এতে সবাই অংশ না নেয় তাহলে দুর্নীতি হয় কীভাবে? পরোক্ষভাবে আমরা সবাই দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত।”

পরিস্থিতি এখন এমন, যে অনেক সময় ‘বাধ্য হয়ে’ দুর্নীতিতে জড়াতে হয় বলে মন্তব্য করেন মুহিত।

“বাংলাদেশে দুর্নীতির সংস্কৃতি ছিল না। এটা একটা গোপনীয়তার মধ্যে ছিল। একটু শরমের সংশ্লিষ্টতা ছিল।”

তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব। সেবা প্রদানের ক্ষমতা যাদের হাতে তারাই দুর্নীতি করে। তবে জন সাধারণ সচেতন হলে, তবেই দুর্নীতি কমে আসবে। আট থেকে দশ বছরের মধ্যে দুর্নীতি কমে যাবে।

জনগণের কাছ থেকে সরাসরি দুর্নীতির অভিযোগ নেওয়ার জন্য ‘হটলাইন ১০৬’ চালু করার এ সিদ্ধান্ত নেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নাম উল্লেখ না করে দুদকের সাবেক এক চেয়ারম্যানের প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এক সময় দুদকের এক চেয়ারম্যান দুর্নীতির বিরুদ্ধে জেহাদ করবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন। জেহাদের ভবিষ্যত সব সময় অন্ধকার হয়। কারণ জেহাদ একটি অন্য জিনিস। অব্যশ্যই ধর্মে যুদ্ধে এসব ছিল, এখন আর নাই। জেহাদের নাম নিয়ে কোনো পরিবর্তন হয় না।”

দুদক ও তদন্তকারীদের উদ্দেশে মুহিতের পরামর্শ- “তদন্ত করবেন ভালো কথা, তবে জেহাদি হবেন না। জেহাদি হলে তদন্তের কোয়ালিটি নষ্ট হয়ে যায়।”

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ অনুষ্ঠানে বলেন, “দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা দুর্নীতি। আমরা যারা রক্ষক হিসেবে আছি, তারাই ভক্ষক হিসেবে অবতীর্ণ হয়ে আছি। এই প্রয়াস বন্ধ হওয়া চাই।”

জনগণের অংশগ্রহণ থাকলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তাই হটলাইন-১০৬ খোলা হয়েছে। এতে যে কোনো ব্যক্তি দুর্নীতির ঘটনা ঘটার আগে ও পরে অভিযোগ করতে পারবেন। এর ফলে আমরা তড়িৎ গতিতে ব্যবস্থা নিতে পারব। এই হটলাইন খোলার মাধ্যমে দুদকের সাথে মানুষের সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন হল।”

প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হটলাইনে দুর্নীতির তথ্য, অভিযোগ সংগ্রহ করবেন। এরপর যে কেউ চাইলে হটলাইনে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবেন। এ সময় অভিযোগটি রেকর্ড হয়ে থাকবে, যা পরের দিন লিপিবদ্ধ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

দুদক জানিয়েছে, হটলাইনে অভিযোগকারীর নাম, ঠিকানা বা পরিচয় কোনও অবস্থাতেই প্রকাশ করা হবে না। কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের তিন তলায় হটলাইন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।

হটলাইন-১০৬ পরিচালনার জন্য ৫০ জন কর্মকর্তাকে প্রযুক্তি এবং আচরণগত বিষয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছে কমিশন।

আপনার মন্তব্য

আলোচিত